হোলি আর্টিজান: হাসনাত করিম ও তাহমিদ কীভাবে পার পেয়ে গেল?

30

হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলা ও নৃশংস হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় করা মামলার রায়ে ৭ জঙ্গির মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একজন খালাস পেয়েছেন। সেই ব্যাপারে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেছেন: ‌‘রায়ে সন্তুষ্ট হলেও খালাস পাওয়া ওই আসামির বিষয়ে পুলিশ আপিল করবে।’

পুলিশের এই সিদ্ধান্ত অবশ্যই ইতিবাচক। হোলি আর্টিজানের মতো নৃশংস হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় সব আসামী তাদের চূড়ান্ত দণ্ড বুঝে পাবেন এটাই বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের চাওয়া। বাংলাদেশের মানুষের কামনাও এর ব্যতিক্রম নয়। এই জনআকাঙ্খার প্রতি সম্মান রেখে পুলিশের এমন সিদ্ধান্ত অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার।

তবে এই মামলায় প্রায় সব আসামি মৃত্যুদণ্ড পেলেও নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ‘অন্যতম প্রধান মাস্টারমাইন্ড হাসনাত করিম’ ও তার সহযোগী তাহমিদ খান জামিনে রয়েছেন। এমনকি তারা জামিন নিয়ে দেশের বাইরে চলে গেছেন। সেই ভয়াল রাতে স্বপরিবারে চিংড়ি ভূনা সাবাড় করা নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটির সাবেক শিক্ষক হাসনাত জামিনে মুক্তির পর লন্ডনে চলে গেছেন বলে ইতোমধ্যে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে।

এই মামলার অভিযোগপত্রে পুলিশ যদিও বলছে, হাসনাত করিম ও তাহমিদের জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তারা পরিস্থিতির শিকার হয়ে জঙ্গিদের কথামতো কাজ করেছে বলেও অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে। সেই ভয়াল ঘটনার সময় তাদের কাজকর্ম কিন্তু এমন চিহ্ন বহন করেনি। তারা জঙ্গিদের সাথে হলি আর্টিজানের ছাদে যে মুভমেন্টে দাঁড়িয়ে ছিলেন তা ভিন্ন কিছুর আভাস দিয়েছিল।

এর পরিপ্রেক্ষিতে তখন স্বাভাবিকভাবেই কথা উঠেছিল তাদের জঙ্গি তৎপরতার বিষয়ে। অথচ সেসব প্রমাণাদি থাকার পরও হাসনাত করিম ও তাহমিদ খানরা বলতে গেলে পার পেয়ে গেলেন। এর মাধ্যমে দেশে আবারও জঙ্গি হামলার ঝুঁকি রয়ে গেল। তাদের বিষয়ে কীভাবে এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হলো তা এখনও বোধগম্য নয়।

হাসনাত করিম ও তাহমিদদের বিষয়ে এত কথা বলার কারণ হলো: জঙ্গিবাদের সাথে বাংলাদেশ কখনও আপোষ করেনি। কিন্তু তারা দু’জন ঠিকই জামিন পেয়ে গেল এবং এরপর তারা দেশের বাইরে যাওয়ার সুযোগও পেয়েছে। এটা বিস্ময়করই বটে। এরপরও বাংলাদেশের মানুষ নিজ অবস্থান থেকে কখনও জঙ্গিদের সাথে আপোষ করবে না বলেই আশা করি। এ কারণে হোলি আর্টিজানের অন্যতম মাস্টারমাইন্ড হাসনাত করিম ও তার সহযোগী তাহমিদ খানসহ সব জঙ্গিকে সর্বোচ্চ দণ্ড বুঝিয়ে দেয়ার দাবি জানাচ্ছি।

(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। প্রিয়দেশ নিউজের সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে।)