খালেদা জিয়ার পায়ুপথের খবর জাফরুল্লাহ জানে কীভাবে?

40

মাঈনুল ইসলাম ডিউক: বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া যৌবনকাল এবং প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন যেসব কর্মকাণ্ড করেছেন সেগুলো এখন সুদুর অতীত। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি জেনারেল এবং রাজনীতিতে এসে মোসাদ্দেক আলী ফালুর সাথে যে মুখরোচক সম্পর্ক ছিল সেসবও এখন মৃত্যুশয্যায় শায়িত খালেদা জিয়ার বিষয়ে আলোচনার সাবজেক্ট নয়। এখন রাজনীতির মাঠ কিছুটা সরগরম তার চিকিৎসা কোথায় হবে তা নিয়ে। এরমধ্যেই বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

তিনি বলেছেন, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা অনেক গুরুতর। তিনি কঠিন অবস্থায় আছেন। তার মুখ ও পায়ুপথ দিয়ে রক্তপাত হচ্ছে। যেকোনো সময় তিনি চলে যেতে পারেন। খালেদা জিয়ার মুখ দিয়ে রক্তপাত হচ্ছে। পায়ুপথ দিয়ে রক্তপাত হয়েছে, ব্লাডপ্রেশার ভয়ানকভাবে ফল করেছে। আমি যখন গিয়েছি দেখলাম কালকেও উনাকে রক্ত দেওয়া হচ্ছিল। রক্ত দিয়ে তাকে কৃত্রিমভাবে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে।

তিনি বলেন, খালেদা জিয়া কয়দিন বাঁচবেন সেটা আমি বলতে পারব না। এটা বলতে পারি, তিনি ক্রান্তিকালে আছেন। তাকে হত্যা করা হচ্ছে। এই হত্যার জন্য আমাদের আইনমন্ত্রী হুকুমের আসামি হবেন। প্রধানমন্ত্রীও হুকুমের আসামি হবেন। খালেদা জিয়া কঠিন অবস্থায় আছেন, যেকোন সময় চলে যেতে পারেন।

চিকিৎসা বিষয়ে তিনি বলেন, বিদেশে চিকিৎসা করার লোক আমি না। এই ক্ষেত্রে আমি মনে করি, দ্বিতীয় কোনো পথ নেই। খালেদা জিয়ার চিকিৎসা এখানে হওয়ার উপায় নেই। তাকে বাইরে পাঠাতে হবে। যত দ্রুত সম্ভব পাঠাতে হবে, আজ-কালের মধ্যেই। তা না হলে জাতি কলঙ্কিত হবে। এর জন্য দায়ী হবেন প্রধানমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী এবং চার বিচারপতি।

ডা. জাফরুল্লাহ একাত্তরের রণাঙ্গনে একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর কাছ থেকে তিনি নানা সুযোগ সুবিধাও নিয়েছেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই পাল্টে যেতে থাকেন তিনি। এখন ঘোর আওয়ামী লীগ বিরোধী। স্বাধীনতা বিরোধীদের সাথে এখন তার ওঠাবসা, আঁতাত। সেটাও এখানে আলোচ্য বিষয় নয়। এখানে যেটা বলতে চাই, তা হলো- খালেদা জিয়া একজন নারী। তিনি একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীও। তার অসুস্থতার খবরের আপডেট জানাবে তার দল। বিএনপির মহাসচিব বা ডাক্তারদের দল এটা জানাতে পারেন। সেখানে জাফরুল্লাহ চৌধুরী কেন? আর একজন নারী খালেদা জিয়ার পায়ুপথের খবর তিনি জানেন কীভাবে? সেটা জানলেও তিনি এটা কীভাবে বলেন? বিএনপির কোনো নেতা তো খালেদা জিয়ার পায়ুপথের আপডেট জানাতে পারল না। তবে কি তিনি পায়ুপথের পায়ুপন্থী ডাক্তার?

জাফরুল্লাহ চৌধুরী আরও গুরুতর কিছু কথা বলেছেন। তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে হত্যা করা হচ্ছে। এজন্য হুকুমের আসামী হবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া আইনমন্ত্রী ও একাধিক বিচারপতির দিকে তিনি আঙ্গুল তুলেছেন। পায়ুপথের এই ডাক্তার কি ভুলে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া সাজাপ্রাপ্ত একজন আসামী। দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার পরেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মানবিকতা ও দয়ায় খালেদা জিয়া এখন বাসায় থাকতে পারছেন। কারা হাসপাতালের বদলে প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারছেন। এখন তো তার কারা হাসপাতালে শুয়ে থাকার কথা ছিল। এর বদলে মুক্ত বাতাসে চিকিৎসা নিতে পারার ব্যবস্থা করে দেয়াই কি তাহলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অপরাধ।

পায়ুপথের ডাক্তার জাফরুল্লাহ নিশ্চয়ই জানেন, এই খালেদা জিয়া একাধিকবার পাকিস্তানপন্থীদের সাথে হাত মিলিয়ে জাতির জনকের কন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যা করার চেষ্টা চালিয়েছেন। সবশেষে গ্রেনেড হামলাও করেছেন। এরপরও শেখ হাসিনা বেঁচে যাওয়ায় সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, শেখ হাসিনা ভ্যানিটি ব্যাগে করে গ্রেনেড নিয়ে গিয়েছেন। এরচেয়ে নির্মমতা আর কী হতে পারে? এরপরও শেখ হাসিনা তাকে দণ্ড মাফ করে বাসায় থাকতে দিয়েছেন। এর প্রতিদানে জাফরুল্লাহরা শেখ হাসিনাকে হুকুমের আসামি বানাচ্ছেন। এটাই তাদের আসল চরিত্র।

এছাড়া বিএনপি ইদানিং আরও একটি কথা জোর গলায় বলে যাচ্ছে যে, খালেদা জিয়াকে স্লো পয়জনিং করা হতে পারে। এটা কি তারা আগেভাগেই শিওর করে যাচ্ছে? বিএনপি নেত্রীর কাছে তো এখন দলীয় নেতাকর্মীরা থাকছে। তারেক রহমানের সরাসরি অনলাইন নির্দেশনায় তার চিকিৎসা হচ্ছে। মির্জা ফখরুলরা সেখানে আসা-যাওয়া করছেন। স্লো পয়জনিং করা হলে বিএনপি নেতারাই করতে পারেন। কেননা খালেদা জিয়া মারা গেলে দলের সবকিছু তারেক রহমানের একক কতৃত্বে চলে আসবে। এর ফলে স্লো পয়জনিং তারাই করে থাকতে পারে। সরকারের এদিকে নজর দেয়া উচিৎ।

সর্বোপরি জাফরুল্লাহদের দৌড় কোন পর্যন্ত এটা এদেশের মানুষ খুব ভালোভাবেই জানে। এদের দৌড় ওই টেলিভিশনের মাইক্রোফোন পর্যন্তই। দেশদ্রোহী বিএনপি-জামায়াতের দোসর হিসেবে পেইড কার্যক্রম পরিচালনা করা ও মুখ চালানোই তাদের একমাত্র কাজ। এসব এখনকার তরুণ সমাজ খুব ভালোভাবেই বোঝে। এসব আবোলতাবোল বকাবকি বন্ধ না করলে তরুণরা যে কারও জিহ্বায় পেরেক মেরে দিলে কারও কিছু করার থাকবে না। সুতরাং জাফরুল্লাহদের মুখ সামলে হিসাব নিকাশ করে কথা বলা জরুরি।

(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। প্রিয়দেশ নিউজের সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে।)