মিনা পাল থেকে কবরী হওয়ার গল্প

14

কবরী। বাংলা সিনেমায় মিষ্টি মেয়ে বলে তার পরিচিতি। এই মিষ্টি মেয়ে জন্মেছিলেন চট্টগ্রামে। ১৯৫০ সালে। অভিনয় শুরু ১৯৬৪ সালে, মাত্র ১৪ বছর বয়সে। সুভাষ দত্তের সুতরাং ছবির মধ্যে দিয়ে সিনেমায় অভিষেক, সেসময়ই নতুন নাম হয় কবরী। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি।

সুতরাং ছাড়াও কবরী অভিনয় করেছেন ‘রংবাজ’, ‘নীল আকাশের নীচে’, ‘দ্বীপ নেভে নাই’, ‘তিতাস একটি নদীর নাম’, ‘সুজন সখী’, ‘সারেং বৌ’য়ের মত বহু ব্যবসা সফল এবং আলোচিত সিনেমায়। এসব ছবির প্রধান নায়িকা ছিলেন কবরী।

১৯৫০ সালের ১৯ জুলাই চট্টগ্রাম জেলার বোয়ালখালী উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন কবরী। তার আসল নাম মিনা পাল। পিতা শ্রীকৃষ্ণ দাস পাল এবং মা শ্রীমতি লাবণ্য প্রভা পাল। তবে পাকিস্তান আমলের তখনকার রক্ষণশীল বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে হিন্দু নায়িকার ছবি ব্যবসাসফল না হওয়ার শঙ্কায় এমন নাম রাখা হয়। পরবর্তীতে যদিও তিনি মুসলিম হয়েছেন বলে জানা যায়। এমনকি তার মৃত্যুর পর ডেথ সার্টিফিকেটেও তার ধর্ম ইসলাম বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

কবরীর আরেক নাম ছিল কবরী সারওয়ার। নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ী শফিউদ্দিন সারওয়ারকে বিয়ের পর তিনি এ নামে পরিচিত পান। ২০০৮ সালে তাদের বিয়েবিচ্ছেদ হয়। এরপর যখন রাজনীতিতে আসেন এবং সংসদ সদস্য হন, তখন থেকে তিনি সারাহ বেগম কবরী নামে পরিচিত।

কবরী কতোটা শক্তিশালী অভিনেত্রী ছিলেন তা উঠে এসেছে তার সমসাময়িক অভিনেতা অভিনেত্রীদের কথায়। কবরীর মৃত্যুর পর মিশা সওদাগর এক পোস্টে বলেছেন শাবানার কথা। শাবানা কবরীর মৃত্যুর খবরে অনেকক্ষণ চুপ থেকে কান্নাভেজা কণ্ঠে বলেছেন, ‘কবরী একজনই হয়’।

সোহেল রানা বলেছেন, কবরী তার অভিনয় দিয়ে মানুষকে যতটা প্রভাবিত করতে পেরেছেন, তেমনটা আর কেউ পারেননি। কবরীকে মানুষ মনে করতো, এই শিল্পীটা আমার শিল্পী। আমার কাছের মানুষ। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে কবরীর মত মানুষের হৃদয়ের কাছাকাছি প্রিয় শিল্পী আর কেউ নেই।

গত ৫ এপ্রিল করোনা পজিটিভ রেজাল্ট হাতে পাওয়ার পর রাজধানীর কুর্মিটোলা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন কবরী। সেখানেই চলছিল চিকিৎসা। ৮ এপ্রিল দুপুরে তাকে শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালের আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৬ এপ্রিল দিবাগত রাতে মৃত্যু হয় এই গুণী অভিনেত্রীর।