ঢাকার দূষিত বাতাস ঠিক করার দায়িত্ব কার

52

ঢাকা যে বাসযোগ্য শহর নয়, সেই খবর পুরনো। এখন নতুন করে পুরনো আরও একটি বিষয় সামনে আসলো। সেটি হলো- বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় রাজধানী ঢাকার তৃতীয় অবস্থানে থাকার খবর। ঢাকার এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) স্কোর ১৯৩ রেকর্ড করা হয়েছে। এর অর্থ হলো- জনবহুল এ শহরের বাতাসের মান ‘অস্বাস্থ্যকর’ পর্যায়ে রয়েছে।

একিউআই স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে নগরবাসীর প্রত্যেকের স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব পড়তে পারে; বিশেষ করে শিশু, বৃদ্ধ ও রোগীরা স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়তে পারেন। একইভাবে একিউআই স্কোর ২০১ থেকে ৩০০ হলে স্বাস্থ্য সতর্কতাসহ তা জরুরি অবস্থা হিসেবে বিবেচিত হয়। এ অবস্থায় শিশু, প্রবীণ এবং অসুস্থ রোগীদের বাড়ির ভেতরে এবং অন্যদের বাড়ির বাইরের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখার পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে।

ঢাকা দীর্ঘদিন ধরে বায়ু দূষণে ভুগছে। এর বাতাসের গুণমান সাধারণত শীতকালে অস্বাস্থ্যকর হয়ে যায় এবং বর্ষাকালে কিছুটা উন্নত হয়। ২০১৯ সালের মার্চ মাসে পরিবেশ অধিদপ্তর ও বিশ্বব্যাংকের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ঢাকার বায়ু দূষণের তিনটি প্রধান উৎস হল, ইটভাটা, যানবাহনের ধোঁয়া ও নির্মাণ সাইটের ধুলো।

শীতের আগমনের সঙ্গে সঙ্গে, নির্মাণ কাজ, রাস্তার ধুলা ও অন্যান্য উৎস থেকে দূষিত কণার ব্যাপক নিঃসরণের কারণে শহরের বাতাসের গুণমান দ্রুত খারাপ হতে শুরু করে। বেশ কয়েকটি গবেষণা অনুসারে, বায়ু দূষণ ক্রমাগত বিশ্বব্যাপী মৃত্যু ও অক্ষমতার জন্য ঝুঁকির কারণগুলোর মধ্যে একটি৷ দীর্ঘদিন দূষিত বায়ুতে শ্বাস নেয়ার ফলে একজন ব্যক্তি হৃদরোগ, শ্বাসযন্ত্রের রোগ, ফুসফুসের সংক্রমণ ও ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এমন অবস্থা নিরসনে বায়ূমান সহনীয় পর্যায়ে আনার দায়িত্ব সিটি কর্পোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। এর আগে কিছুদিন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের কিছু কার্যক্রম লক্ষ্য করা গেছে। তারা প্রতিদিন বেশ কয়েকটি রাস্তায় পানি ছিটানোর কার্যক্রম শুরু করেছিল। এটা সাময়িকভাবে কাজে লাগতে পারে, তবে দীর্ঘমেয়াদে যে এটি কার্যকর নয়, সেটা আবারও প্রমাণ হলো। ঢাকাকে বাসযোগ্য করতে দ্রুত কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে বাস্তবায়ন করতে হবে। সেজন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে এগিয়ে আসতে আমরা আহ্বান জানাচ্ছি।