ঠাকুরগাঁওয়ে গরু ও মহিষের ১০ গাড়িতে করে বরযাত্রা

বাবার ইচ্ছা পূরণ করতে গ্রামবাংলার হারিয়ে যাওয়া গরু ও মহিষের ১০টি গাড়িতে করে বরযাত্রী নিয়ে কনের বাড়িতে গেলেন নিরব নামে এক যুবক। আর এ বিয়ে দেখতে ভিড় জমান শত শত নারী-পুরুষ।

শুক্রবার (২৭ মে) বিকালে ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে এমনই এক ব্যতিক্রম বিয়ের আয়োজন করা হয়।

স্থানীয়রা জানান, ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার খামার নারায়ণপুর গ্রামের কুদ্দুস আলীর ছেলে নিরব হোসেন সাব্বিরের সঙ্গে বিয়ে ঠিক হয় পাশের দুর্গাপুর গ্রামের সিরাজুল ইসলামে মেয়ে ইসরাত জাহান এশা আকতারের।

নিরবের বাবার ইচ্ছা ছিল ছেলে বরবেশে গরুর গাড়িতে করে বরযাত্রী নিয়ে কনের বাড়িতে বিয়ে করতে যাবে। ছেলের বউও আসবে গরু গাড়িতেই। বাবার সেই ইচ্ছা পূরণ করতে গরু ও মহিষের ১০ গাড়ি সংগ্রহ করে নিরবের বাবা। আর এই গরু-মহিষের গাড়িতে করে বরযাত্রী নিয়ে বরবেশে কনের বাড়িতে বিয়ে করতে যান নিরব।

গ্রাম বাংলার হরিয়ে যাওয়া টাপুর যুক্ত গরু-মহিষের গাড়ি দেখতে শত শত নারী-পুরুষ ভিড় জমান বর ও কনের বাড়িতে। রাস্তায় অসংখ্য মানুষ দাঁড়িয়ে গরু-মহিষের গাড়িতে বরযাত্রার দৃশ্য দেখেন। ছবি ও ভিডিও ধারণ করেন অনেকেই।

এমন আয়োজনে খুশি বর-কনের পরিবারসহ এলাকাবাসী। গ্রাম বাংলার এ পুরনো ঐতিহ্য ধরে রাখতে আগ্রহ প্রকাশ করেন অনেকে।

বরের বাবা আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ‘আমার ইচ্ছা ছিল, ছেলের বিয়েতে বরযাত্রী যাবে গরুর গাড়িতে। এ সময় গরুর গাড়ি পাওয় দুষ্কর। তাই মহিষের ৯টি এবং গরুর একটি গাড়ির আয়োজন করি ছেলের বিয়েতে। ছেলেও মেনে নিয়ে গরু গাড়িতে করেই বিয়ে করতে যায়।’

কনের চাচা জয়নাল বলেন, ‘এটা গ্রামবাংলার হারিয়ে যাওয়া একটি ঐতিহ্য। এ রকম আয়োজনে আমরা খুশি।’

মহিষের গাড়ির পেছনে পা ঝুলিয়ে বসা এক বৃদ্ধ জানান, ৪০ বছর আগে এভাবেই এক প্রতিবেশির বিয়েতে বরযাত্রী হিসেবে গিয়েছিলেন। দীর্ঘদিন পর এমন আয়োজনে তিনি খুশি।

আলম নামের নারায়ণপুর গ্রামের এক বাসিন্দা জানান, তার বাবার কাছে শুনেছেন তার দাদার বিয়েতে বরযাত্রী গরুর গাড়িতে করে যায়। এরপর এই এলাকায় আর গরু গাড়িতে কোনো বরযাত্রার অনুষ্ঠান হয়নি। দেখে ভাল লেগেছে।