পরীক্ষা না দিয়ে আইনজীবী হতে চায় কোন সন্ত্রাসীরা?

আজকের নবীন আগামীর প্রবীণ। আগামীর আলোর বাতিঘর। করোনাকালীন দুর্যোগময় মুহূর্তে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল এবং বিভিন্ন জেলা বার এসোসিয়েশনের আইনজীবীদের আর্থিক অনুদান এবং ঋণ দিয়ে পাশে থেকেছেন, নবীন আইনজীবীরা এজন্য চির কৃতজ্ঞ থাকব। শুধুমাত্র যে নবীন আইনজীবীদের পাশে ছিলেন তা কিন্তু নয় কিছুটা অসচ্ছল আইনজীবী যারা ছিলেন তাদের পাশেও ছিলেন।

কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় এই যে বিগত ১৯ ডিসেম্বর এডভোকেটশীপ লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীর উশৃঙ্খল আচরণে বন্ধ হয়ে যায় পরীক্ষা এবং নষ্ট হয় প্রকৃত শিক্ষার্থীর জীবন। দুষ্কৃতিকারী পরীক্ষার্থীরা ছিঁড়ে ফেলেন ওই সকল শিক্ষার্থীর লিখিত পরীক্ষার খাতা যারা প্রকৃত পক্ষে আইনজীবী হতে চান এবং পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের উত্তর যা তারা পারা সত্বেও দিতে পারেন নাই। প্রকৃত শিক্ষার্থীদের চোখে জল এজন্য বিনা মেঘে বজ্রপাত। তবে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল সেই সকল শিক্ষার্থীদের পাশে থাকবেন যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ওই সকল দুষ্কৃতকারী পরীক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন এটা আমার বিশ্বাস।

দুষ্কৃতিকারী শিক্ষার্থীদের ভিডিও ফুটেজে দেখেছি যে তারা পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন এবং পরীক্ষার প্রশ্নপত্র যদি কঠিন হয়ে থাকে তাহলে তারা যথাযথ নিয়মে বলতে পারতেন। কিন্তু তাদের পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা সহস্রাধিক পরীক্ষার্থীর জীবনই নষ্ট হয়নি বরং এরা সন্ত্রাসী। এদেরকে কঠিন শাস্তির আওতায় আনতে হবে। অন্যদিকে দেখলাম একজন শিক্ষার্থী তার গাড়িতে বসে পরীক্ষা দিচ্ছেন। তার মুখের ভাষা সে নকল করছে না। তাহলে পরীক্ষার খাতা এবং বই নিয়ে কী লিখছেন এবং কী করছেন সেটা বাংলাদেশের সকল জনগণ দেখেছেন। সম্ভবত তার নাম আব্দুল মোতালেব। বাংলাদেশ বার কাউন্সিলে এমন ঘটনা অতীতে কোনদিন ঘটেনি এ যা এবার ঘটেছে।

বর্তমানে বিভিন্ন জেলা বার এসোসিয়েশনের টাউট আইনজীবীর সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে। বিভিন্ন জেলায় টাউট আইনজীবী ধরা হচ্ছে। এসব নামধারী আইনজীবী পরিচয় দেওয়া মানুষগুলোকে আর সন্ত্রাসী বেআইনি ও মক্কেলদের বিশ্বাসের সাথে ধোঁকাবাজি করে অর্থ আত্মসাৎ মূলক কাজ বন্ধে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলসহ সকল সিনিয়র আইনজীবীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি এবং এখনই সময়। এছাড়া অনেক শিক্ষানবিশ আইনজীবীকেও এখন নিয়ম মানতে দেখা যায় না। শিক্ষানবিস আইনজীবীদেরকে যেসকল নিয়মের মধ্যে পড়ে কোটে প্র্যাকটিস করতে হয় সে সকল কোনটাই করেন না। লাল টাই, আইডি কার্ড না পরে তারা আইনজীবী সেজে ওঠে, হাতে ফাইল নিয়ে আইনজীবীর মত হেঁটে বেড়াচ্ছেন।

অন্যদিকে আইনজীবীদের তালিকাভুক্তির বয়স সীমা ও একটা নিয়মের মধ্যে আনা উচিত ৩৫ বছরের পর কেউ কেউ আর আইনজীবী হতে পারা উচিত নয়। আমি একজন নবীন আইনজীবী। আমার সাথে পাস করেছে এমন কিছু বয়স্ক আইনজীবী আছেন যারা নিয়মিত কোর্টে আসেন এবং নিজেকে বিভিন্নভাবে প্রমাণ করেন যে তিনি সিনিয়র আইনজীবী। তাই এখনই সময় বাংলাদেশ বার কাউন্সিল যুগোপযোগী সিদ্ধান্তে আসার যাতে আইন অঙ্গন আর কুলুষিত না হয়।

বাংলাদেশ বার কাউন্সিল একটি স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশ বার কাউন্সিল বাংলাদেশের সকল আইনজীবীদের অভিভাবক‌। আমাদের নবীনদের আলোর বাতিঘর। আমরা চাই না কোনো সন্ত্রাসী আমাদের আইন জগতকে কলুষিত করুক।

(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। প্রিয়দেশ নিউজের সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে।)