টয়লেটে শিশুকে ধর্ষণ, দেড় লাখ টাকায় ধামাচাপার চেষ্টা

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে নানার বাড়ি বেড়াতে গিয়ে দ্বিতীয় শ্রেণির মাদরাসা শিক্ষার্থী (১০) ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি দুপুরে উপজেলার একটি গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী ওই শিশু ও তার পরিবারের লোকজন ভয়ে মুখ না খুললেও ঘটনাটি জানাজানি হয়ে গেছে। এদিকে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে স্থানীয় মাতাব্বররা গ্রাম্য সালিশের আয়োজন করে।

সালিশে ধর্ষককে দেড় লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এর মধ্যে ৯২ হাজার টাকা মাতাব্বরদের কাছে জমা দেন। বাকি রয়েছে ৫৮ হাজার টাকা।

খবর পেয়ে আজ শনিবার (৮ মার্চ) দুপুরে পুলিশ ভুক্তভোগী শিশু ও তার মাকে থানায় নিয়ে এসে ঘটনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।

জানা গেছে, ঘটনার দিন অভিযুক্ত সিএনজিচালক উপজেলার আজগানা ইউনিয়নের কুড়িপাড়া গ্রামের ফিরোজ মিয়া শিশুটির নানার বাড়ির কাছে জমিতে সার দিচ্ছিল। ওই জমির সাথেই শিশুটি বড়ই গাছ থেকে বড়ই পাড়ছিল। তখন ফিরোজ মিয়া শিশুটিকে ডেকে একটি টয়লেটের ভেতর নিয়ে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের কথা কাউকে বললে মোবাইলে ধারণ করা ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া এবং প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয় শিশুটিকে।

ফিরোজের ডাকার শব্দ শিশুটির মা শুনেছিলেন। ঘটনার পর বাড়িতে গিয়ে শিশুটি চুপচাপ থাকায় তাকে জিজ্ঞেস করা হলেও কিছু বলছিল না। বারবার জিজ্ঞেস করায় একপর্যায় কান্না করে পুরো ঘটনা মাকে খুলে বলে ভুক্তভোগী শিশু।

ঘটনার কিছু সময় পর পাড়া প্রতিবেশিরা ঘটনাটি জেনে যায়। এই ঘটনা ধামাচাপা দিতে স্থানীয় মালেক, বাবুল ও ফাজুসহ কয়েকজন মাতাব্বর দুইদিন পর গ্রাম্য সালিশের আয়োজন করেন।

সালিশে ফিরোজকে দেড় লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। গ্রাম্য মাতাব্বরদের চাপে সালিশ মেনে নিয়ে ৯২ হাজার টাকা জমা দিলেও জরিমানার ৫৮ হাজার টাকা এখনো বাকি রয়ে গেছে বলে শিশুটির মা জানান।

এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে শুক্রবার রাতে অভিযুক্তকে আটক করতে পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায়। ফিরোজ কয়েকদিন আগেই এলাকা থেকে পালিয়েছে বলে জানা গেছে। শনিবার দুপুরে পুলিশ ভুক্তভোগী শিশু ও তার মাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসে। জিজ্ঞাসাবাদে শিশুটির মা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন বলে পুলিশ জানিয়েছেন।

শিশুটির মা জানান, তার স্বামী সৌদি আরব প্রবাসী। এক ছেলে এক মেয়ে নিয়ে বাড়িতে থাকি। ঘটনার কথা ভয়ে প্রকাশ করতে পারি নাই। তবু জানাজানি হয়ে গেছে। আমাদের পাশে দাঁড়ানোর মতো কোন অভিভাবক নেই। গ্রামের মাতাব্বদের চাপে সালিশ মেনে নিয়েছি। তবে টাকা নেইনি। মেয়ের বাবাও ঘটনা শুনেছেন। তিনি অপরাধীদের বিচার চেয়েছেন।

মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মোশারফ হোসেন জানান, খবর পাওয়া মাত্রই ধর্ষককে গ্রেপ্তার করতে শুক্রবার রাতভর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হয়। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।