সেনাসদস্য সাইফুল ইসলাম সাইফ হত্যার দায়ে ৮ আসামির মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে খুলনা বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোঃ নজরুল ইসলাম হাওলাদার এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় তিনজন আসামি পলাতক ছিল।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. আহাদুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- ঝিনাইদহের বংকিরা এলাকার ফারুক হোসেনের ছেলে আকিমুল ইসলাম (৩৭), ঝিনাইদহের বেড়াই এলাকার মৃত. নূর মোহাম্মদের ছেলে মিজানুর রহমান ওরফে মিজান (৩৮), চুয়াডাঙ্গার ভুলতিয়া এলাকার সবেদ আলীর ছেলে ডালিম মোল্যা (পলাতক), ঝিনাইদহের আসান নগরের নবীছদ্দিনের মো. আব্বাস আলী (৪০), আসান নগরের মৃত. রমজান মন্ডলের ছেলে কাশেম মন্ডল (৫২), আসান নগরের মৃত. সাহেব আলীর ছেলে মো. ফারুক হোসেন (৩৫), ইয়াকুব্বার মন্ডলের ছেলে মতিয়ার রহমান ওরফে ফইনে (পলাতক) ও ঝিনাইদহের এনায়েতপুরের দাউদ মন্ডলের ছেলে মো. মোক্তার হোসেন ওরফে মোক্তার মন্ডল (পলাতক)।
সকাল সাড়ে নয়টার দিকে কারাগার থেকে আসামিদের আদালতের হাজত খানায় নেওয়া হয়। এর আগে ১২ ডিসেম্বর আদালতে যুক্তিতর্ক শেষ হয়।
আসামি পক্ষের আইনজীবী সৈয়দ তৌফিক উল্লাহ বলেন, এ হত্যাকাণ্ডে কোন প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী নেই। শুধুমাত্র একজনের জবানবন্দির উপরে এ রায় ঘোষণা করা হয়েছে। পুলিশ তার উপরে অমানবিক অত্যাচার করে জবানবন্দি নিয়েছেন। এ রায় আসামিদের উপর অবিচার করা হয়েছে। আমরা উচ্চ আদালতে যাব। সেখান থেকে আমরা ন্যায়বিচার পাব।
২০১৮ সালে ১৮ আগস্ট রাতে ঝিনাইদহের বংকিরা পশ্চিমপাড়া এলাকার হাফিজ উদ্দীনের দু’ছেলে সাইফুল ইসলাম সাইফ (সেনা সদস্য) ও মনিরুল ইসলাম (নৌ সদস্য) বড় ভাইয়ের শ্বশুর সামসুল মোল্লাকে আনতে বদরগঞ্জ বাজারে যান। রাত সাড়ে নয়টার দিকে বাড়ির পথে ফেরার সময় বেলতলারদাড়ি নামক স্থানে পৌঁছালে রাস্তার ওপর গাছ ফেলানো দেখে বুঝতে পারে সংঘবদ্ধ ডাকত দল ডাকাতি করার জন্য রাস্তার মাঝে গাছ ফেলেছে। তার তিনজন মোটরসাইকেল থেকে নেমে বাঁচাও বলে চিৎকার করতে থাকে।
এ সময় ডাকাত দলের একজন সাইফকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করতে থাকে। সাইফের শরীরের বিভিন্ন অংশ কুপিয়ে জখম করে তারা। পরবর্তীতে ছোট ভাই মনির বংকিরা বাজার সংলগ্ন পুলিশ ও স্থানীয় জনতার সহায়তায় বড় ভাইকে ঝিনাইদাহ সদর হাসপাতালে নিলে সেখানকার চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এ ঘটনার পরেরদিন নিহতের পিতা অজ্ঞাতনামা আসামিদের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলাটির তদন্তে নেমে পুলিশ আটজন আসামির সম্পৃক্ততার খবর জানতে পারে পুলিশ। যাদের অধিকাংশের বিরুদ্ধে থানায় ডাকাতিসহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এ মামলায় মো: আকিমুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হলে জড়িতদের নাম প্রকাশ করে আদালতে জবানবন্দি প্রদান করে।
২০১৯ সালের ৩০ জুন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঝিনাইদাহ থানার পুলিশ পরিদর্শক মো: মহসীন হোসেন ৮ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলায় ২০ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।