সুদানের প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ: সেখানে আসলে কী হচ্ছে?

সুদানে সামরিক শাসনবিরোধী বিক্ষোভে হতাহতের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশটির প্রধানমন্ত্রী আবদাল্লাহ হামদক পদত্যাগ করেছেন। স্থানীয় সময় রোববার রাতে এক টেলিভিশন ভাষণে তিনি পদত্যাগের ঘোষণা দেন।

গত অক্টোবরে সুদানের সেনাবাহিনী দেশটির ক্ষমতা পুরোপুরি নিজেদের দখলে নেয়। সেসময় তারা প্রধানমন্ত্রী আবদাল্লাহ হামদককে গৃহবন্দী করে, তার সরকারের কয়েকজন মন্ত্রীকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরবর্তীতে সেনা অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেওয়াদের সঙ্গে ক্ষমতা ভাগাভাগির চুক্তির পর তিনি পুনর্বহাল হন। সেনার সাথে আঁতাত করে তার ক্ষমতায় থাকার এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেনি অনেকে। এরপর দেশজুড়ে বিক্ষোভ, সহিংসতা শুরু হয়। ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে আবদাল্লাহ হামদক তার পদত্যাগের এই ঘোষণা দিলেন।

বিবিসি জানায়, ‘আব্দাল্লাহ হামদক বলেন, ‘সুদানের গণতন্ত্রে উত্তরণের জন্য একটি নতুন চুক্তির প্রয়োজন ছিল, যেটা আমরা করেছিলাম। তবে চুক্তি অনুযায়ী প্রাপ্ত দায়িত্ব আমি ফিরিয়ে দিচ্ছি। আমি প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করছি।

মহান এই দেশের নেতৃত্বের জন্য অন্য কোনো পুরুষ বা নারীকে সুযোগ করে দিচ্ছি, যিনি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করে সুদানকে একটি বেসামরিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করার পথে বাকি কাজটুকু সম্পন্ন করতে পারেন।’

নভেম্বরে হামদকের সঙ্গে সমঝোতার অধীনে, পুনর্বহাল হওয়া প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত টেকনোক্র্যাটদের একটি মন্ত্রিসভার নেতৃত্ব দেওয়ার কথা ছিল। তবে নতুন বেসামরিক সরকারের কতটা ক্ষমতা থাকবে তা স্পষ্ট করা হয়নি তখন। বিক্ষোভকারীদের দাবি, তারা সামরিক বাহিনীকে বিশ্বাস করে না।

গতকাল রোববার রাজধানী খার্তুম ও ওমদুরমান শহরের রাস্তায় নেমে আসে হাজার হাজার মানুষ। বিক্ষোভকারীরা ‘জনগণের কাছে শক্তি’ স্লোগান দেয় এবং সামরিক বাহিনীকে রাজনীতি ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান জানায়।

গণতন্ত্রপন্থী সুদান সেন্ট্রাল ডক্টরস কমিটির দেওয়া তথ্যমতে, স্থানীয় সময় গতকাল সংঘর্ষে অন্তত দুজন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। অভ্যুত্থানের পর থেকে এ পর্যন্ত বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।