মোমিনুর রহমান , মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি:
মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে পদ্মার চরাঞ্চলে বিষধর রাসেলস ভাইপার সাপের আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। একের পর এক বিষাক্ত এ সাপের দেখা মিলছে উপজেলার চরাঞ্চলের পদ্মা নদী তীরবর্তী বিভিন্ন এলাকায়। চরাঞ্চলে কৃষিজমির ফসল তোলা ও গবাদি পশুর ঘাস সংগ্রহ করা নিয়ে বিপাকে পরেছেন কয়েকটি ইউনিয়নের হাজার হাজার কৃষক।
পদ্মা তীরবর্তী এলাকা এবং চরাঞ্চলের বসবাস করা মানুষেরা রয়েছেন মারাত্মক আতঙ্কে । সম্প্রতি এই সাপের আক্রমণে প্রাণ হারিয়েছেন সাত জন ব্যক্তি।
জানা গেছে, জেলার হরিরামপুর উপজেলার পদ্মা নদী তীরবর্তী জেগে উঠা চরাঞ্চলে নির্মল আবহাওয়া ও চরাঞ্চলের নিরঞ্জনতার কারণে চন্দ্রবোড়া (রাসেলস ভাইপার) সাপের নির্ভরযোগ্য আবাসে পরিণত হয়েছে। পৃথিবীর বিষধর সাপের মধ্যে এটি অন্যতম। তবে এ সাপ সম্পর্কে তেমন কিছু না জানায় স্থানীয়রা আক্রমণের শিকার হচ্ছেন। ফসলের জমিতে বিষধর সাপ রাসেলস ভাইপারের অবাধ বিচরনে বিপাকে পড়েছেন কয়েক হাজার কৃষক। এতে ভয়ে ফসলি জমিতে যাচ্ছে না কৃষকেরা।
চরাঞ্চলের বাসিন্দারা জানান, পদ্মা নদী তীরবর্তী লেছরাগঞ্জ, সুতালড়ী, আজিমনগর ইউনিয়নের বেশ কিছু এলাকার বিস্তীর্ণ জমিতে স্থানীয়রা ভিন্ন ভিন্ন সময়ে ভূট্টা, বাদাম, তিল, পেঁয়াজ, আমন এবং আউশসহ মৌসুমি ফসলের আবাদ করে থাকেন।
অন্যদিকে চরাঞ্চলের মানুষের জীবিকার আরও একটি মাধ্যম হলো গবাদিপশু পালন। চরের এই সব গবাদিপশু পালনের জন্য জমিতে ঘাসের চাষও করা হয়। অর্থনৈতিক অবস্থা দুর্বল হওয়াতে চরাঞ্চলের বেশিরভাগ বসতিস্থল কাঁচা এবং ওই ঘরেই বসবাস করে থাকেন চরবাসী। যার ফলশ্রুতিতে পদ্মা নদীর তীরবর্তী ও চরাঞ্চলের বসবাস করা মানুষ রয়েছেন সাপ আতঙ্কে। চরাঞ্চলে যে পরিমাণে এই বিষধর সাপ দেখা যাচ্ছে, একটি সময় চরাঞ্চলে বসবাস করাটা দুর্বিষহ হয়ে পড়বে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
হরিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মেহেরুন পান্না জানান, রাসেলস ভাইপারসহ যে কোন বিষধর সাপের আক্রমন হলে অবশ্যই যেন দ্রুত নিকটস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যেতে হবে। কোন কবিরাজের কাছে যেন না যান তার পরামর্শো দেন তিনি।
এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসক রেহেনা আকতার জানান, জনসচেতনতার পাশাপাশি চরাঞ্চরের কৃষকদের গামবুটসহ সার্বিক সহযোগীতা করা হবে। এছাড়া এই সাপের কামড়ে যাতে কোন প্রানহানি না হয় সে ব্যাপারে বিশেষজ্ঞদের সাথে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।