বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আজ আশা প্রকাশ করেছেন, আমাদের সঙ্গে চীনের পারস্পরিক বিশ্বাস ও আস্থার সম্পর্ক ভবিষ্যতে আরো গভীর হবে। শুধু তাই নয়, চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের জনগণের বন্ধুত্বপূর্ণ সস্পর্ক হবে গভীর থেকে গভীরতর হবে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন আজ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সাথে বৈঠক করেছেন।
বুধবার রাজধানীর গুলশানস্থ বিএনপি চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও আবদুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী ও নুরুল ইসলাম মনি ও আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল উপস্থিত ছিলেন। প্রায় দেড় ঘন্টাব্যাপী এ বৈঠক চলে। এতে, বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক, ও অর্থনৈতিক অবস্থার পাশাপাশি সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।
ছাত্রছাত্রী ও জনতার সম্মিলিত আন্দোলনের শেষ পর্যায়ের গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ইতোমধ্যে জাতিসংঘের সমন্বয়কারী ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত বিএনপি মহাসচিবের সাথে বৈঠক করেছেন।
বুধবার চীনা রাষ্ট্রদূতের সাথে বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘ছাত্রছাত্রী ও জনতার সম্মিলিত বিপ্লবের মধ্যদিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পরে চীনের রাষ্ট্রদূতের বিএনপি চেয়ারপারসনের অফিসে আসাটা আমরা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছি। আমরা মনে করি যে, বাংলাদেশের জনগণের প্রতি চীনের যে কমিটমেন্ট, তা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে প্রতিশ্রুতির দৃঢ়তা এবং একই সঙ্গে তারা পরিস্কার করে জানিয়েছেন, তারা (চীন) আধিপত্যবাদে বিশ্বাস করেন না।
মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের জনগণের প্রতি যে প্রতিশ্রুতি চীন আগে দিয়েছে, এখনো সে প্রতিশ্রুতিই দিচ্ছে। একই সঙ্গে চীন সারা-বিশ্বে যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে, ‘আমরা তার প্রশংসা করছি’। বিশেষ করে অনুন্নত বা উন্নয়নশীল দেশগুলোতে চীন যেভাবে অর্থনৈতিক সহযোগিতা করছে সেটার জন্য তাদেরকে এ বৈঠক থেকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছি।
বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে চীনের রাষ্ট্রদূতের অভিনন্দন জানানোর বিষয়টি উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তারা (চীন) মনে করেন যে, বিএনপির সঙ্গে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সম্পর্ক দৃঢ় থেকে দৃঢ়তর হবে এবং বাংলাদেশে চীনের যে বিনিয়োগ, বাংলদেশের জনগণের স্বার্থে এবং দেশের সার্বিক উন্নয়নে সেটা আরও বৃদ্ধি পাবে।
তিনি বলেন,‘আমাদের দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে আমরা তাদেরকে স্বাগত জানিয়েছি। আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের সঙ্গে চীনের পারস্পরিক বিশ্বাস ও আস্থার সম্পর্ক ভবিষ্যতে আরো গভীর হবে। শুধু তাই নয়, চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের জনগণের বন্ধুত্বপূর্ণ সস্পর্ক হবে গভীর থেকে গভীরতর হরে। আমরা পরিস্কার করে বলতে চাই, ওয়ান চায়না পলিসিতে বিএনপি সবসময় বিশ্বাস করে এসেছে, আমরা এখনো সেই ঘোষণাটা আরও দৃঢ়তার সাথে উল্লেখ করতে চাই।
চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও বলেন, ‘আমরা আমাদের পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নয়নের বিষয়াদি নিয়ে আলোচনা এবং পর্যালোচনা করেছি। চীনা কমিউনিস্ট পার্টি ও বিএনপি এক সাথে কাজ করতে চায়। এ ব্যাপারে আমরা আজকে আলোচনাও করেছি। এই সম্পর্ককে আরও নিবিড় ও সুদৃঢ় করে আমরা কিভাবে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারি তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ণ সমর্থন এবং বাংলাদেশের উন্নয়নে চীনের সম্পৃক্ততার কথাও উল্লেখ করেন চীনের রাষ্ট্রদূত।