সাম্প্রতিক বছরগুলোয় বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর কানেক্টিভিটি তৈরি ও উন্নয়নে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ করেছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)।
সাম্প্রতিক বছরগুলোয় বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর কানেক্টিভিটি তৈরি ও উন্নয়নে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ করেছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। এ অর্থায়নের ভিত্তিতে দুই দেশেই সড়ক, রেল ও বন্দর অবকাঠামো নির্মাণে নেয়া হয়েছে বেশ কয়েকটি প্রকল্প। শেখ হাসিনার পতনের পর দুই দেশের সম্পর্কে যে উত্তেজনা ও অসন্তোষ তৈরি হয়েছে তা এসব প্রকল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে আশঙ্কা তৈরি করছে। অস্বস্তির মাত্রা বাড়তে থাকায় বিপুল অংকের বিনিয়োগের ভবিষ্যৎ নিয়ে এখন দুশ্চিন্তায় পড়ে গেছে সংস্থা দুটি।
জাপানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা গত বছর ভারত সফরের সময় দেয়া এক বক্তব্যে জানান, দক্ষিণ এশিয়ায় জাপানি বিনিয়োগের বড় কৌশলগত ক্ষেত্র হলো বাংলাদেশ ও ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কানেক্টিভিটি নির্মাণ ও সম্প্রসারণ। তার বক্তব্যে উঠে আসে, দুই দেশের কানেক্টিভিটি খাতে এরই মধ্যে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করেছে জাপান। বাংলাদেশ-ভারত কানেক্টিভিটি তৈরিতে গত এক দশকে জাইকার মাধ্যমে ১ হাজার কোটি ডলারের বেশি ব্যয় করেছে টোকিও। এর মধ্যে শুধু উত্তর-পূর্ব ভারতের উন্নয়নেই দেশটির ব্যয় হয়েছে ২০০ কোটি ডলারের বেশি।
অন্যদিকে উপ-আঞ্চলিক জোট সাউথ এশিয়া সাবরিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপারেশনের (সাসেক) সদস্যদেশগুলোর কানেক্টিভিটি তৈরিতে ২০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি বিনিয়োগ করেছে এডিবি। এর মধ্যে একক দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ও ভারতে বিনিয়োগ যথাক্রমে প্রায় ৮ ও প্রায় সাড়ে ৭ বিলিয়ন ডলার। এ বিনিয়োগের সিংহভাগই ব্যয় হয়েছে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে কানেক্টিভিটি উন্নয়নে গৃহীত পরিবহন, যোগাযোগ ও ইকোনমিক করিডোর উন্নয়নসংশ্লিষ্ট প্রকল্পে।
বর্তমানে এসব প্রকল্প নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে গেছে সংস্থা দুটি। গত ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কে অস্বস্তি বাড়ছে। আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে সর্বশেষ হামলা ও ভাংচুরের পর এ অস্বস্তি রূপ নিয়েছে কূটনৈতিক বিরোধে। এ অবস্থায় বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার কানেক্টিভিটি প্রকল্পগুলো লক্ষ্য অর্জন করতে পারবে কিনা সে বিষয়ে তৈরি হয়েছে বড় ধরনের সংশয়।
সাম্প্রতিক বছরগুলোয় দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বড় এক ভূরাজনৈতিক হটস্পট হয়ে উঠেছিল উত্তর-পূর্ব ভারতের আট রাজ্য (আসাম, অরুণাচল, মণিপুর, মেঘালয়, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, ত্রিপুরা ও সিকিম)। নয়াদিল্লির ‘লুক ইস্ট’ (পুবে দেখো) ও এর ধারাবাহিকতায় গৃহীত ‘অ্যাক্ট ইস্ট’ (পুবে চলো) কূটনীতির বড় একটি অংশজুড়ে ছিল দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ঠিক সংযোগস্থলে অবস্থিত রাজ্যগুলো। দুর্গম ও জটিল ভূগঠনের কারণে এ অঞ্চল এখনো পশ্চাৎপদ রয়ে গেছে। অ্যাক্ট ইস্ট নীতিমালার প্রেক্ষাপটে ভারতীয় ভূরাজনীতির পর্যবেক্ষক ও থিংকট্যাংক প্রতিষ্ঠানগুলো এ আট রাজ্যকে দেখে দেশটির জন্য কূটনৈতিকভাবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এলাকা হিসেবে।
দুর্গম ও ভূবেষ্টিত রাজ্যগুলোর পিছিয়ে পড়ার কারণ হিসেবে বরাবরই দায়ী করা হয়েছে সাগরের কোনো সংযোগ না থাকাকে। তবে সে সুযোগের দুয়ার খুলে যায় বাংলাদেশে ভারতের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত শেখ হাসিনা সরকারের আমলে। ট্রানজিট, ট্রান্সশিপমেন্টের পাশাপাশি বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দরগুলো ব্যবহার করে পণ্য আমদানির সুযোগও পায় রাজ্যগুলো। এজন্য যোগাযোগ ও রেল অবকাঠামো গড়ে তোলার মাধ্যমে কানেক্টিভিটি তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। নেয়া হয় একের পর এক প্রকল্প। আর এসব প্রকল্পে বিনিয়োগ নিয়ে এগিয়ে আসতে থাকে জাইকা ও এডিবিসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা।
ভারত-বাংলাদেশ কানেক্টিভিটি তৈরিতে জাইকার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক উন্নয়ন সহযোগিতা (ওডিএ) কার্যক্রমের আওতায় এখন পর্যন্ত বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করেছে জাপান। গত বছরের মার্চে ভারত সফরকালে জাপানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা ‘ইন্ডিয়া-জাপান ইনিশিয়েটিভ ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট অব দ্য নর্থ ইস্টার্ন রিজিয়ন অব ইন্ডিয়া’ কর্মসূচির ঘোষণা দেন। এর আওতায় দ্য বে অব বেঙ্গল-নর্থইস্ট ইন্ডিয়া ইন্ডাস্ট্রিয়াল ভ্যালু চেইন গড়ে তোলার বিষয়ে জাপানের পরিকল্পনার কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
এ বিষয়ে জাইকার ওয়েবসাইটে বলা আছে, ‘অবাধ ও মুক্ত ইন্দোপ্যাসিফিক নিয়ে দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার পরিকল্পনার ভিত্তিতে দ্য বে অব বেঙ্গল-নর্থইস্ট ইন্ডিয়া ইন্ডাস্ট্রিয়াল ভ্যালু চেইন ধারণাটিকে সামনে নিয়ে এসেছে জাপান। এরই ভিত্তিতে উত্তর-পূর্ব ভারত, বাংলাদেশ, মিয়ানমার, নেপাল ও ভুটানের মধ্যে আন্তঃসীমান্ত পরিবহন কানেক্টিভিটি গড়ে তোলা ও শক্তিশালীকরণ অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, বঙ্গোপসাগর অঞ্চলে এরই মধ্যে বেশকিছু সড়ক, রেল ও গভীর সমুদ্রবন্দর (বাংলাদেশে মাতারবাড়ী বন্দর) প্রকল্প গড়ে তোলার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে জাপান।’
ভারতের দীর্ঘতম সেতুটি নির্মাণ হচ্ছে বাংলাদেশের সঙ্গে কানেক্টিভিটি উন্নয়নের লক্ষ্য থেকে জাইকার বিনিয়োগে। আসামের নয়া ধুবড়ি থেকে মেঘালয়ের ফুলবাড়ী পর্যন্ত নির্মীয়মাণ ১৯ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতুটির নির্মাণ শুরু হয় বাংলাদেশ থেকে ভারতের মধ্য দিয়ে ভুটানে পণ্য ও যাত্রী পরিবহন বাড়ানোর উদ্দেশ্য থেকে। প্রকল্পটি গ্রহণের সময় বলা হয়েছিল, এটি নির্মাণ হলে বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে ভারত হয়ে সড়ক চলাচল সহজ হয়ে আসবে।
প্রক্ষেপণ রয়েছে, সেতুটির নির্মাণকাজ শেষে সংশ্লিষ্ট সড়কটির ওপর দিয়ে ২০৩০ সালের মধ্যে বছরে চলাচলকারীর সংখ্যা গড়ে প্রায় ৩০ লাখে পৌঁছাবে। একই সঙ্গে বার্ষিক পণ্য পরিবহনের পরিমাণ দাঁড়াবে ১ কোটি ১৮ লাখ টনেরও বেশিতে। এছাড়া ধুবড়ি থেকে ফুলবাড়ী পর্যন্ত যাতায়াতের পথ ৮ ঘণ্টা থেকে মাত্র ২৩ মিনিটে নামিয়ে আনবে সেতুটি। ধুবড়ি-ফুলবাড়ী সেতু নির্মাণ শেষ হলে এর দুই পাশে বাজার ও সেবা খাতের ব্যাপক প্রসার হবে বলে আশাবাদী খাতসংশ্লিষ্টরা। একই সঙ্গে গ্রামীণ কৃষিপণ্যের বাজার, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও কর্মসংস্থান খাতেরও ব্যাপক উন্নয়নের প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
মেঘালয়ের তুরা থেকে ডালু পর্যন্ত হাইওয়ে নির্মাণের কাজ চলছে। মেঘালয়েই শিলং থেকে ডাউকি পর্যন্ত বিদ্যমান হাইওয়েকে দুই লেন থেকে চার লেনে উন্নীত করা হচ্ছে। মূলত বাংলাদেশের সঙ্গে মেঘালয়ের কানেক্টিভিটি তৈরিতেই মহাসড়ক দুটির উন্নয়নকাজ চলছে। দুটি প্রকল্পেই অর্থায়ন করছে জাইকা।
আসামের শ্রীরামপুর থেকে ধুবড়ি পর্যন্ত মহাসড়কের বিভিন্ন অংশে চলমান নির্মাণ ও উন্নয়নকাজও হচ্ছে জাইকার অর্থায়নে। এ প্রকল্পগুলোও মূলত আসাম ও মেঘালয়ের সঙ্গে বাংলাদেশ, ভুটান ও নেপালের কানেক্টিভিটি তৈরির উদ্দেশ্যেই বাস্তবায়ন হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক ভূরাজনীতির পর্যবেক্ষকরা বলছেন, সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর মধ্যে সম্পর্কের সামঞ্জস্য না থাকলে কানেক্টিভিটি প্রকল্প বাস্তবায়ন বা বাস্তবায়নের পর লক্ষ্য অর্জন অসম্ভব হয়ে পড়ে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির বণিক বার্তাকে বলেন, ‘সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সম্পর্কে সাযুজ্য বজায় না থাকলে বা একই সমান্তরালে না থাকলে এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করা কঠিন। সম্পর্ক ভারসাম্যপূর্ণ না হলে এগুলোর লক্ষ্য অর্জন করা যায় না। বর্তমান পরিস্থিতিতে সংস্থাগুলোর বিনিয়োগ নিয়ে দুশ্চিন্তা থাকা খুবই স্বাভাবিক।’
অনেকটা একই অভিমত দিয়ে নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে আন্তর্জাতিক কূটনীতির এক পর্যবেক্ষক বলেন, ‘ভারত যদি সহযোগিতামূলক মনোভাব বজায় রাখত, তাহলে হয়তো এসব প্রকল্পের লক্ষ্য অর্জন করা যেত। আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে কানেক্টিভিটির ক্ষেত্রে ভারতের মধ্য দিয়ে ছাড়া আমরা অন্য কোনো দেশের সঙ্গে সংযুক্ত হতে পারছি না। ভবিষ্যতে ভারতের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদে কোনো বড় প্রজেক্টে যাওয়ার আগে বাংলাদেশকে বিষয়টি অবশ্যই ভেবে দেখতে হবে।’
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার কানেক্টিভিটি উন্নয়নে জাইকার বিনিয়োগ সম্পর্কে সংস্থাটির ভারত দপ্তরের সাবেক প্রধান সাইতো মিত্সুনারি ওআরএফ ফাউন্ডেশন থেকে প্রকাশিত এক নিবন্ধে লিখেছিলেন, ‘বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দর থেকে উত্তর দিকে ত্রিপুরা ও উত্তর-পূর্ব ভারতের দিকে কানেক্টিভিটি তৈরির সুযোগ কাজে লাগিয়ে দুই দেশের মধ্যকার করিডোরের উন্নয়নে জোর দিয়েছে জাইকা। এজন্য জাইকা ত্রিপুরার কৈলাশহর থেকে খোয়াই পর্যন্ত মহাসড়ক উন্নয়ন ও নির্মাণের মাধ্যমে এতে অবদান রাখছে। বর্তমানে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আঞ্চলিক বাণিজ্য খুবই সীমিত। জনসাধারণের চলাচল ও পণ্য পরিবহনের সুযোগ তৈরির মাধ্যমে প্রকল্পটি সংশ্লিষ্ট এলাকার আর্থসামাজিক খাতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে যাচ্ছে।’
জাইকার তথ্য অনুযায়ী, ২০১২-১৩ সালে সংস্থাটি প্রথম ভারতের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের পরিবহন ব্যবস্থা নিয়ে সমীক্ষা চালায়। সমীক্ষায় এখানকার পরিবহন ব্যবস্থায় বিনিয়োগের অর্থনৈতিক ফলাফল ও গুরুত্ব খতিয়ে দেখা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ভারত সরকারের সঙ্গে অগ্রাধিকারমূলক প্রকল্পগুলোয় বিনিয়োগ নিয়ে জাইকার একটি চুক্তি সই হয়। উত্তর-পূর্ব ভারতের দেশটির জাতীয় মহাসড়কের অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিভিন্ন অংশে মোট ৬৫৭ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কপথের উন্নয়ন ও নির্মাণকাজে বিনিয়োগ করছে জাইকা। মোট পাঁচ ধাপে ‘উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় কানেক্টিভিটি উন্নয়ন প্রকল্পগুলোয়’ বিনিয়োগ করছে সংস্থাটি।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে কানেক্টিভিটি তৈরিতে জাইকার মতো বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করেছে এডিবিও। এক্ষেত্রে সংস্থাটির মূল বিনিয়োগ এসেছে উপআঞ্চলিক জোট সাসেকের মাধ্যমে। বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, নেপাল ও শ্রীলংকাকে নিয়ে গড়ে তোলা সাত দেশের এ উপআঞ্চলিক জোটটির মূল্য উদ্দেশ্যই হলো আন্তঃদেশীয় কানেক্টিভিটি। নিজের উদ্দেশ্য সম্পর্কে সংস্থাটির বক্তব্য হলো দক্ষিণ এশিয়ায় আন্তঃআঞ্চলিক বাণিজ্য ও সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং মিয়ানমারের মধ্য দিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, চীন ও বৈশ্বিক বাজারে যুক্ত হতে চায় সাসেকভুক্ত দেশগুলো।
এজন্য পরিবহন, বাণিজ্য সহজীকরণ, জ্বালানি, ইকোনমিক করিডোর, স্বাস্থ্য ও পর্যটনের মতো খাতে এখন পর্যন্ত এডিবির অর্থায়নে মোট ৮৬টি প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করেছে সাসেকভুক্ত দেশগুলো। ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত হালনাগাদকৃত তথ্য অনুযায়ী, এসব প্রকল্পে এ পর্যন্ত মোট ২ হাজার ৫৪ কোটি ডলার ব্যয় হয়েছে। এর মধ্যে বেশির ভাগই পরিবহন খাতের। এতে মোট বিনিয়োগ ১ হাজার ৪৪০ কোটি ডলার। পরের অবস্থানেই রয়েছে ইকোনমিক করিডোর নির্মাণ ও উন্নয়ন। এজন্য মোট সাত প্রকল্পের আওতায় ২৩২ কোটি ডলার অর্থায়ন করা হয়েছে।
সাসেক প্রকল্পে এডিবির অর্থায়নের বৃহত্তম গন্তব্য হলো বাংলাদেশ। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে সাসেকভুক্ত প্রকল্পগুলোয় এডিবির পুঞ্জীভূত বিনিয়োগ ৭৯১ কোটি ২০ লাখ ডলার। আর দ্বিতীয় গন্তব্য ভারতে এ পুঞ্জীভূত বিনিয়োগের পরিমাণ ৭৪২ কোটি ৭০ লাখ ডলার।
সাসেকে এডিবির অর্থায়নকৃত প্রকল্পগুলোর মধ্যে অন্যতম ঢাকা-নর্থওয়েস্ট করিডোর রোড প্রজেক্ট ফেজ ২ (ট্র্যাঞ্চ ৩) প্রকল্প। এটি বাস্তবায়নে ব্যয় হচ্ছে ৪৬ কোটি ২০ লাখ ডলার। প্রকল্পটির আরো দুটি ট্র্যাঞ্চে যথাক্রমে ৭১ কোটি ৪০ লাখ ও ৪৯ কোটি ৮০ লাখ ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে। ঢাকা-সিলেট করিডোর রোড ইনভেস্টমেন্ট প্রজেক্টে বিনিয়োগের পরিমাণ ৮৮ কোটি ডলার। রেল যোগাযোগসহ এ ধরনের আরো বেশকিছু প্রকল্পের কাজ এখন চলমান বা এরই মধ্যে শেষ হয়েছে।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে প্রকল্পগুলোর ভবিষ্যৎ লক্ষ্য অর্জনের সম্ভাবনা নিয়ে মূল্যায়ন জানতে চেয়ে এডিবির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সংস্থাটির কাছ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।