ছাত্রলীগ নেতা থেকে ববি ক্লার্ক: অফিস করেন ৪ দিন স্বাক্ষর ১০ দিন

তানজিদ শাহ জালাল ইমন
বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের সাবেক তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির ইস্যু ক্লার্ক বনি আমিন গত আগস্ট মাসে অফিসে না এসে হাজিরা খাতায় ৬ দিন স্বাক্ষর করেছেন। সেই মাসে অফিসে এসেছেন ৪ দিন, কিন্তু হাজিরা খাতায় তার স্বাক্ষর রয়েছে ১০দিন। সারাবছরই অফিসে না এসে এভাবে স্বাক্ষর করেন তৃতীয় শ্রেণির এই কর্মচারী।

তার অনিয়ম, অপরাধ ও শিক্ষার্থীদের সাথে অসদাচরণ নিয়ে সংবাদ প্রচারিত হয় বিভিন্ন জাতীয় ও আঞ্চলিক গণমাধ্যমে। শিক্ষার্থীদের লিখত অভিযোগ ও সংবাদ প্রচারের পর এ বিষয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অবগত করে লিখিত দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি লাইব্রেরিয়ান মধুসূদন হালদার ও সহকারী লাইব্রেরিয়ান কে. এম.নাজমুত তারেক।

আগষ্ট মাসে তিনি নৈমিত্তিক ছুটি কাটিয়েছেন ৭দিন।মাত্র ৪দিন অফিস করলেও সময়মতো অফিসে আসতেন না তিনি। যার তথ্য-প্রমাণ প্রতিবেদকের হাতে রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক লাইব্রেরীর এক কর্মচারী জানান, দীর্ঘদিন থেকেই বনি আমিন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে নিজের ইচ্ছামাফিক অফিস করতেন। একদিন এসে অনেকদিনের সাক্ষর করে যেতেন। ধর্ষণের অভিযোগে বহিষ্কৃত বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক, নিজেকে মহানগর যুবলীগের নেতা ও সাবেক মেয়র সাদেক আব্দুল্লাহর অনুসারী পরিচয় দিয়ে অফিসে সবসময় প্রভাব খাটাতেন। তার অনিয়মের বিষয়ে মুখ খুলতে সাহস পায়নি কেউ। শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অসদাচরণ করতেন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথেও। ছিলেন সাবেক উপাচার্যদের আশীর্বাদপুষ্ট , তাদের থেকে অবৈধ সুবিধাও পেতেন বনি আমিন।

এর আগে নিজ ভাতিজির বান্ধবী বরিশাল সরকারি মহিলা কলেজের এক ছাত্রীকে ধর্ষণ করায় বনি আমিনকে বিশ্ববিদ্যালয়ে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে মানববন্ধন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ধর্ষণের বলিষ্ঠ প্রমাণ থাকায় ২০২০ সালে তাকে সাময়িক বরখাস্তও করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। একটানা ১বছর ৪ মাস ১৮ অননুমোদিত কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার কারণে লঘু শাস্তিও দিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। যা এখনও ভোগ করতে হচ্ছে বনি আমিনকে। কিন্তু পরিবর্তন হয়নি তার,বিপরীতে অফিসে বেড়েছে তার প্রভাব-প্রতিপত্তি।

অফিসে না এসে হাজিরাখাতায় স্বাক্ষর করার বিষয়ে জানতে চাইলে বনি আমিন প্রিয়দেশ নিউজকে বলেন, আমি আপনার সাথে কথা বলতে চাই না।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড.শুচিতা শরমিন বলেন, আমি এ বিষয়ে অতি দ্রুত ব্যবস্থা নেব।