ফারইস্টের সাবেক সিইওকে অন্য কোম্পানিতে নিয়োগ না দেওয়ার নির্দেশ

ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির সাবেক মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হেমায়েত উল্লাহ-কে কোনো বিমা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ না দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। সম্প্রতি ব্যাপক অনিয়মের দায়ে তাকে বহিষ্কার হয়।

মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর) বিমা কোম্পানিগুলোর চেয়ারম্যান ও সিইও বরাবর এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা পাঠায় আইডিআরএ।

নির্দেশনায় বলা হয়, ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির বিগত কয়েক বছরের কার্যক্রম পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে, কোম্পানিতে ব্যাপক অনিয়ম সংঘটিত হয়েছে এবং বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় নেতিবাচক খবর প্রকাশিত হয়েছে।

‘হেমায়েত উল্লাহ ২০১১ থেকে ২০২১ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্নভাবে উক্ত বিমা কোম্পানিতে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। তিনি বিমা আইন, ২০১০ ও বিমা আইনের বিভিন্ন বিধি বিধান অনুযায়ী কোম্পানি পরিচালনা করার জন্য দায়ী থাকবেন মর্মে তার নিয়োগপত্রে সুস্পষ্টভাবে শর্ত আরোপ করা হয়েছিল। কিন্তু তার দায়িত্বকালীন সময়ে কোম্পানিতে ব্যাপক অনিয়ম সংঘটিত হয়েছে মর্মে সম্প্রতি বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় খবর প্রকাশিত হয়, যার জন্য তিনি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে দায়ী।’

তাছাড়া তার বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করে তা নিজ ভোগদখলে রেখে এবং মিথ্যা তথ্য সংবলিত সম্পদ বিবরণী সরকারের কাছে দাখিলের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মামলা দায়ের করেছে এবং তার বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা জারি করার তথ্য কর্তৃপক্ষের কাছে রয়েছে- বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।

এতে আরও বলা হয়, হেমায়েত উল্লাহর এমন কর্মকাণ্ডের ফলে বিমা শিল্পের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন হয়েছে। ওই কোম্পানিতে বিমা পলিসি গ্রাহকরা তাদের ন্যায্য দাবি পাচ্ছে না। ফলে জনমনে বিমা শিল্পের প্রতি নেতিবাচক ধারণা তৈরি হচ্ছে এবং বিমা প্রতিষ্ঠানগুলো নতুন ব্যবসা আহরণে ব্যাপক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে।

চিঠিতে এসব তথ্য তুলে ধরে বিমা শিল্প তথা বিমা গ্রাহকদের স্বার্থ রক্ষায় এবং দুদক ও কর্তৃপক্ষের চলমান কার্যক্রম সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত এবং কর্তৃপক্ষ থেকে অনাপত্তি গ্রহণ ব্যতিরেকে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের সাবেক মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হেমায়েত উল্লাহকে কোনো বিমা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ প্রদান না করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়।

এর আগে চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির সিইও থেকে হেমায়েত উল্লাহকে অপসারণ করে বিমা নিয়ন্ত্রক সংস্থা। আর্থিক অনিয়ম, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগে আইডিআরএ ওই পদক্ষেপ নেয়।

ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের চেয়ারম্যান বরাবর পাঠানো এ সংক্রান্ত চিঠিতে বলা হয়, গ্রাহকের পলিসির টাকা আত্মসাৎ, বিমাকারীর স্বার্থের জন্য ক্ষতিকর ও পরিপন্থি কাজের সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে আসায় তাকে অপসারণ করা হয়। বিমা গ্রাহকদের অভিযোগ ও অনিয়মের তথ্যপ্রমাণ নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে রয়েছে।

এতে আরও বলা হয়, হেমায়েত উল্লাহর বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করে তা নিজ ভোগদখলে রেখে এবং মিথ্যা তথ্য সংবলিত সম্পদ বিবরণী দাখিলের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মামলা করেছে। তার বিদেশ গমনেও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।