সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা রাশেদ খান নিহত হওয়ার ঘটনায় প্রত্যাহার হতে পারেন এমন আশঙ্কায় আগেই ছুটি নিয়েছেন কক্সবাজারের টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাস। গত মঙ্গলবার (৪ আগস্ট) তিনি নিজেই থানার জিডি বইয়ে অসুস্থতাজনিত কারণ দেখিয়ে নোট লিখে ছুটিতে চলে গেছেন।
এরপর থেকে তার কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। পরে বিষয়টি জানতে পেরে থানার পরিদর্শক তদন্ত এবিএম দোহাকে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (অফিসার ইনচার্জ) হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে ছুটি নেওয়ার একদিনের মাথায় ওসি প্রদীপ কুমারকে প্রত্যাহার করে জেলার পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
অন্যদিকে সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ ও পুলিশের মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ বুধবার কক্সবাজারে যৌথ সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সেখানে তারা পুলিশের গুলিতে মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খানের নিহত হওয়ার ঘটনাকে একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে উল্লেখ করে বলেছেন, এতে দুই বাহিনীর সম্পর্কে চিড় ধরবে না।
যৌথ সংবাদ সম্মেলনে শেষে সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ ও পুলিশপ্রধান বেনজীর আহমেদ বিকেল চারটার দিকে মেজর (অব.) সিনহার নিহত হওয়ার ঘটনাস্থল দেখতে সড়কপথে মেরিন ড্রাইভ সড়ক হয়ে টেকনাফের বাহারছড়ার শামলাপুর পুলিশ তল্লাশিচৌকিতে যান। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশসহ বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তারা। দুই বাহিনীর প্রধানকে সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দেন কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এ বি এম মাসুদ হোসেন। এরপর সেনাপ্রধান ও পুলিশপ্রধান উপস্থিত কর্মকর্তাদের উদ্দেশে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে তারা ঘটনাস্থল থেকে পুনরায় কক্সবাজারে ফেরেন।
সূত্র জানায়, সেনাপ্রধান এবং আইজিপি’র কক্সবাজারে আগমনের কথা জানতে পেরেই থানা থেকে পালিয়েছেন ওসি প্রদীপ। তিনি সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাড়ি জমাতে পারেন বলেও ধারণা করা হচ্ছে। তবে মেজর সিনহা হত্যাকাণ্ডে জড়িত কেউ পার পাবে না বলে জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। একইসঙ্গে সেনাপ্রধান এবং আইজিপি’ও এ বিষয়ে একমত পোষণ করেছেন।
সেই ধারাবাহিকতা আঁচ করতে পেরেই টেকনাফের ওসি প্রদীপ পেছনের দরজা দিয়ে পালাতে পারেন বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র। তবে রিজেন্টের প্রতারক শাহেদের মতো যেকোন অপরাধীকে ভারত থেকে ফেরত আনার মতো সম্পর্ক উভয় দেশের মধ্যে রয়েছে বলেও সূত্র জানায়।