যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি মডার্নার টিকা নিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। সোমবার (১৯ জুলাই) বিকেল ৩টা ৫৫ মিনিটে রাজধানীর মহাখালীর ন্যাশনাল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট অ্যান্ড হাসপাতালে তিনি করোনার টিকা গ্রহণ করেন।
খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, এই হাসপাতালে মডার্নার টিকা পাওয়া যাচ্ছে। ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) সেই টিকাই নিয়েছেন।
এর আগে বিকেল ৩টা ৪০ মিনিটে হাসপাতালে পৌঁছান খালেদা জিয়া। সরেজমিনে দেখা যায়, সেখানে উপস্থিত নেতাকর্মী ও সাংবাদিকদের ভিড়ের কারণে খালেদা জিয়াকে গাড়ি থেকে নামানো হয়নি। গাড়িতে বসিয়েই তাকে করোনার টিকা দেন হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা।
গত ১২ জুলাই খালেদা জিয়া টিকার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ‘সুরক্ষা’ ওয়েবসাইটে নিবন্ধন করেন। গতকাল রোববার (১৮ জুলাই) তার টিকার এসএমএস আসে।
ডা. জাহিদ হোসেন জানান, ‘দেশের একজন আইনমান্যকারী নাগরিক হিসেবে সাধারণ মানুষের কাতারে এসে খালেদা জিয়া করোনার টিকা নিয়েছেন। তিনি জমায়েত এড়াতে আজ কিছুক্ষণ দেরি করে টিকা নিতে এসেছেন। অন্য সময় এলে হয়তো আরও ভিড় হতো।’
তিনি বলেন, ‘অন্যদের মতো ম্যাডাম জিয়া মডার্নার টিকা নিয়েছেন। উনার কোনো আলাদা ইচ্ছা নেই। আপনাদের (সাংবাদিকদের) মাধ্যমে দেশবাসীকে তিনি ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।’
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থায় প্রসঙ্গে জাহিদ হোসেন বলেন, ‘করোনা পরবর্তী জটিলতা নিয়ে তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। আল্লাহর রহমতে তিনি অনেকটা সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরে এসেছেন। কিন্তু তার আর্থরাইটিস, ডায়াবেটিসসহ যেসব জটিলতা আগে থেকেই ছিল, সেইগুলো কমেনি। তার লিভার, হার্ট, কিডনির ভালো ও উন্নত চিকিৎসার জন্য এভার কেয়ার হাসপাতাল ও মেডিকেল বোর্ড তাকে বিদেশে বিশেষ চিকিৎসার সুপারিশ করেছেন। সেই অনুযায়ী তার পরিবার তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে আবেদনও করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আপনার দেখেছেন, ২০১৮ সালে খালেদা জিয়া পায়ে হেঁটে কারাগারে গেছেন। আর বের হয়েছেন হুইল চেয়ারে করে। এখন তিনি হুইল চেয়ার চলাফেরা করেন, বুঝতেই পারছেন তিনি কেমন আছেন।’
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৭ এপ্রিল রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন খালেদা জিয়া। সেখানে ৫৪ দিন চিকিৎসা শেষে গত ১৯ জুন রাতে গুলশানের বাসভবনে ফেরেন খালেদা জিয়া।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় তার পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হয়। এরপর প্রথমে পুরান ঢাকার বিশেষ কারাগার ও পরে কারাবন্দি অবস্থায় বিএসএমইউ’র হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। এরপর দেশে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে খালেদা জিয়ার পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে সরকার নির্বাহী আদেশে তার ৬ মাসের সাজা স্থগিত করে মুক্তি দেয়। এরপর আরও দুইবার তার সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ান সরকার।
খালেদা জিয়া টিকা নেওয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ভাইস চেয়ারম্যান ডা. জাহিদ হোসেন, বিএনপির চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার ও শায়রুল কবির খান।