ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরির দোরগোড়ায় রয়েছে বলে বহুদিন ধরে অভিযোগ করে আসছে ইসরায়েল ও তার মিত্ররা। এই অজুহাতে ইরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলা করতে মুখিয়ে আছেন নেতানিয়াহু। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন না পাওয়ায় এতদিন সেই খায়েশ অপূর্ণই থেকেছে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর।
এমনকি গত অক্টোবরে ইরান ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সরাসরি তেলআবিবে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালেও তেমন কোনো পাল্টা প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারেনি ইসরায়েল। তবে ২০ জানুয়ারি ডেনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার পর হোয়াইট হাউসের নীতিতে পরিবর্তিন আসতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকে। অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন, ইসরায়েলেকে সঙ্গে নিয়ে ইরানের পরমাণু স্থাপনায় যৌথ হামলার মতো ঘটনাও ঘটাতে পারেন ট্রাম্প।
এমতাবস্থায় নতুন করে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে তেহরান। দেশটি বলছে, তাদের পরমাণু স্থাপনা হামলার শিকার হলে এই অঞ্চলে সর্বাত্মক যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়বে। কাতারভিত্তিক আল জাজিরা টিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমন সতর্কবার্তা উচ্চারণ করেছেন ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি।
দোভাষীর মাধ্যমে তিনি বলেন, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র তার দেশের পরমাণু স্থাপনায় সামরিক হামলা চালালে তা হবে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় ঐতিহাসিক ভুল। ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই সতর্ক অবস্থানে রয়েছে তেহরান।
যদিও ট্রাম্প কিছুদিন আগেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন সামরিক নয় বরং আলোচনার মাধ্যমে তিনি ইরানি সমস্যার সমাধান করতে চান। প্রায় একই সুরে কথা বলছেন ইরানি কর্মকর্তারা। আরাকচির ভাষায়, এজন্য আগে ইরানের ওপর সদয় হতে হবে যুক্তরাষ্ট্রকে। দেশটিতে আটকে থাকা বিভিন্ন সম্পদের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে ট্রাম্পকে আগে আস্থা অর্জন করতে হবে।
২০১৮ সালে ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট থাকাকালে ছয় জাতির সঙ্গে ইরানের করা পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে তিনি এককভাবে বের করে আনেন। পাশাপাশি ইরানের ওপর আরও এক গাদা নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে দেন তিনি। এরপর ক্ষুদ্ধ তেহরানও ওই চুক্তির বিভিন্ন ধারা লঙ্ঘন করে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধিকরণ বাড়িয়ে দেয়।