ঋণের প্রলোভনে নিরীহ মানুষদের ঢাকায় আনল কারা?

ঢাকায় সমাবেশে যোগ দিলে ১ লাখ থেকে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত সুদমুক্ত ঋণের প্রলোভন দেখিয়ে গ্রামের সাধারণ মানুষদের শহরে আনার অপচেষ্টা চালিয়েছে একটি চক্র।

রোববার (২৪ নভেম্বর) রাতে ‘অহিংস গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশ’ নামে একটি সংগঠনের আহ্বানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বাস, পিকআপ এবং মাইক্রোবাসে করে ঢাকায় আসার চেষ্টা করেন শত শত নারী-পুরুষ। তারা ঢাকার টিএসসি ও শাহবাগ এলাকায় জড়ো হওয়ার চেষ্টা করলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও শিক্ষার্থীরা তাদের সেখান থেকে সরিয়ে দেয়।

তথ্যমতে, সংগঠনটি দাবি করেছে যে, “বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে এনে প্রতিজনকে এক লাখ টাকা ঋণ দেওয়া হবে। এজন্য শাহবাগে সমাবেশে যোগ দিতে হবে।” এ সুযোগ নিতে প্রতিজনকে এক হাজার টাকা রেজিস্ট্রেশন ফি দিতে বলা হয়, যা সংগঠনের সদস্যরা হাতিয়ে নিয়েছে।

লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার করইতোলা বাজার এলাকায় যাত্রীবাহী তিনটি বাস এবং সাতটি মাইক্রোবাসে করে প্রায় দুই শতাধিক নারী-পুরুষ ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হলে স্থানীয় জনতা তাদের আটকে দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে।

কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তহিদুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় ১১ জনকে আটক করা হয়েছে এবং তিনটি বাস ও চারটি মাইক্রোবাস জব্দ করা হয়েছে। তবে চক্রের মূল হোতারা এখনো পলাতক। তারা ঢাকায় অবস্থান করছে এবং মাঝে মাঝে গ্রামের লোকদের ফরম পূরণ করিয়ে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। হতদরিদ্র মানুষদের সুদমুক্ত ঋণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাদের ঢাকায় নিয়ে গিয়ে সমাবেশ আয়োজনের চেষ্টা চলছিল।

কোলের শিশু নিয়ে ঢাকায় যাওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া আলেয়া নামের এক নারী জানান, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান বা শাহবাগে সমাবেশে অংশ নিয়ে পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে মুহাম্মদ ইউনুসের কাছে প্রস্তাব দেওয়া হবে। ফেরত পাওয়া অর্থ থেকে গ্রামের দরিদ্র মানুষদের ঋণ দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল।

স্থানীয় মোরশেদ আলম বলেন, কয়েক মাস ধরে একটি চক্র গ্রামের মানুষদের সুদমুক্ত ঋণের প্রলোভন দিয়ে সংগঠিত করছিল। তাদের ডাকে সাড়া দিয়ে রোববার রাতে শত শত নারী-পুরুষ ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিল।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলেও, এ ধরনের প্রতারণা চক্রের কর্মকাণ্ড নিয়ে উদ্বেগ রয়ে গেছে।