
ধর্ষণ মামলার পক্ষে আইনি লড়াইকে কেন্দ্র করে জামালপুরে আদালত চত্বরে আইনজীবীদের সঙ্গে ছাত্র-জনতার সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে দুই পক্ষের অন্তত আট ব্যক্তি আহত হয়েছেন। আজ সোমবার দুপুরে জেলা আদালত চত্বরে আইনজীবী সমিতির সামনে এ ঘটনা ঘটে ৷
জানা গেছে, জামালপুরের ইসলামপুর ও দেওয়ানগঞ্জে দুটি ধর্ষণের বিচারের দাবিতে আজ শহরের দয়াময়ী চত্বরে মানববন্ধন করেন ছাত্র-জনতা। মানববন্ধন শেষে ওই ধর্ষণ মামলা দুটির আসামিপক্ষের আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলতে যান তাঁরা। এ সময় অভিযুক্ত এক আসামির বয়স কম দেখানোর বিষয়ে আইনজীবীর সঙ্গে ছাত্র-জনতার বাগ্বিতণ্ডা হয়। পরে তাঁদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে দুই পক্ষের অন্তত আট ব্যক্তি আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
জানতে চাইলে জামালপুর আশেক মাহমুদ কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র তারেক শেখ বলেন, ‘ধর্ষণ মামলায় আদালতে দুজন আইনজীবী দাঁড়িয়ে ছিলেন। সে জন্য আমরা সেখানে গিয়েছিলাম। একজন ধর্ষকের পক্ষে কীভাবে একজন আইনজীবী লড়ছে, আমরা মূলত এই দাবি নিয়ে গিয়েছিলাম।’
তারেক শেখ আরও বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ অবস্থান করার সময় আইনজীবীরা আল্টিমেটাম দেন, আমরা যেন ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে বের হয়ে যাই। না হলে উনারা পুলিশ এনে আমাদের বের করে দেবেন। এরপরেও আমরা শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করি। একপর্যায়ে আইনজীবী সমিতির কিছু লোক এসে একজন ছাত্রকে নিয়ে যায়। একজন প্রবীণ আইনজীবী খারাপ আচরণ করেন। আমাদের সহকর্মীকে নিয়ে যাওয়ার পর আমরা কিছু কথা বলি। তাঁদের স্টাফ এসে আমাদের সঙ্গে খারাপ কথাবার্তা বলে।’
জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক রিশাদ রেজওয়ান বাবু বলেন, ‘জেলা জজ আদালতে যে ঘটনা ঘটেছে, আদালতের কার্যক্রম চলা অবস্থায় এটা দুঃখজনক ঘটনা। জামালপুর বিচার অঙ্গনে এমন ঘটনা এর আগে কখনো ঘটেনি। কিছু দুষ্কৃতকারী লাঠিসোঁটা নিয়ে আদালতে প্রবেশ করে। তারা আইনজীবীদের হুমকি দেয়। তারা একটি মামলার বিষয়ে কিছু বক্তব্য দিতে চায়। আমি আমার সাধারণ সম্পাদকের রুমে এসে তাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করি। আমরা তাদের শান্ত রাখার চেষ্টা করি। কথা বলার জন্য যখন তাদের চেয়ারে বসাইতে ছিলাম, ঠিক তখন নিচে তারা আমাদের দুজন আইনজীবীকে আহত করে। তাদের মধ্যে অ্যাডভোকেট খলিলুর রহমান ৮০ বছরের বৃদ্ধ। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।’
এ বিষয়ে জামালপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ইয়াহিয়া আল মামুন বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। বিস্তারিত জেনে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’