বিদ্যুৎ খাতে চুরির ফলে গ্রিড বিপর্যয়: মির্জা ফখরুল

ফাইল ছবি

জাতীয় গ্রিড ব্যর্থতার কারণে মঙ্গলবার দেশের বেশিরভাগ এলাকায় দীর্ঘ বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের জন্য সরকারের সামগ্রিক ‘ব্যর্থতা’ এবং বিদ্যুৎ খাতে চুরিকে দায়ী করেছে বিএনপি।

দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমরা মনে করি যে এটি (জাতীয় গ্রিড ব্যর্থতা) সরকারের সম্পূর্ণ ব্যর্থতার কারণে ঘটেছে এবং পরিকল্পনা, কাঠামোগত এবং প্রযুক্তিগত বিষয়গুলির সঙ্গে সম্পর্কিত সমস্যা এবং বিদ্যুৎ খাতে ব্যাপক চুরি।’

বুধবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর আসাদ গেটের বাসায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

অসুস্থ হয়ে পড়ায় বিএনপির আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে নিয়ে ফখরুল টুকুর বাড়িতে যান।

এই বিএনপি নেতা আরও বলেন, বিদ্যুৎ খাত একা এ ধরনের সমস্যার সম্মুখীন নয়। এসব সব জায়গায় ঘটছে। আমি মনে করি এর পেছনের মূল কারণ হলো সরকারের বিভিন্ন অপরিকল্পিত উন্নয়ন প্রকল্প শুধুমাত্র দুর্নীতিতে লিপ্ত হওয়ার জন্য।

এর আগে মঙ্গলবার, সারাদেশে প্রায় সাত ঘন্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘ্নিত হয়েছিল, জাতীয় পাওয়ার গ্রিডের ব্যর্থতার কারণে বেশিরভাগ এলাকা ব্ল্যাকআউটে নিমজ্জিত হয়েছিল।

ফখরুল বলেন, সরকার বিদ্যুতে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন এবং দেশের চাহিদার চেয়ে বেশি বিদ্যুত উৎপাদনের সক্ষমতা নিয়ে বড়াই করলেও মানুষ প্রতিনিয়ত বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সম্মুখীন হচ্ছে।

‘গতকালের (মঙ্গলবার) ঘটনাটি ছিল অস্বাভাবিক। দেশের অধিকাংশ এলাকায় প্রায় আট ঘণ্টা বিদ্যুৎ ছিল না। এটি সম্পূর্ণ ব্ল্যাকআউটের মতো,’ ফখরুল যোগ করেন।

তিনি বলেন, ব্ল্যাকআউট প্রকাশ করেছে যে ক্ষমতাসীন দলের নেতারা বিদ্যুৎ খাতে বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে বিপুল অর্থ উপার্জন করেছেন, কিন্তু বাস্তব ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছেন। এটি (ব্ল্যাকআউট) দেশকে একটি মহা বিপর্যয়ের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। ফলে মোবাইল নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট, সব কারখানা ও ফিলিং স্টেশন বন্ধ হয়ে গেছে।

তিনি বলেন, কোথাও কোনো জবাবদিহিতা না থাকায় বর্তমান সরকার অপরিকল্পিত প্রকল্প গ্রহণ করে জনগণের টাকা লুটপাট করছে।

‘নির্বাচিত সংসদ নেই। যেহেতু এই সরকারের জনগণের কাছে কোনো জবাবদিহিতা নেই, তাই আমরা প্রতিটি সেক্টরে অনেক সমস্যা ও বিপর্যয়ের সম্মুখীন হচ্ছি। এই ঘটনা (জাতীয় গ্রিড ব্যর্থতা) তার প্রমাণ। এ কারণেই আমরা বারবার বলছি, এই সরকার দেশের বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে,’ বলেন ফখরুল।

তিনি বলেন, অবিলম্বে এই সরকারকে অপসারণ করা না হলে জাতির টিকে থাকা কঠিন হবে।

বিএনপি নেতা বলেন, বিশ্বাসযোগ্য জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান এবং জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে বর্তমান সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। দেশের বর্তমান পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পেতে আমাদের আর কোনো বিকল্প নেই।