ফ্রি ফায়ার খেলতে গিয়ে বন্ধু ও তার মায়ের হাতে খুন কিশোর আব্দুল্লাহ

রিয়াজ উদ্দীন: কিশোর আবদুল্লাহর খুনি ধরা পড়েছে সিসি ক্যামেরার ফুটেজে। খুনি বাইরের কেউ নন, স্বয়ং আবদুল্লাহর বন্ধু ও তার মা। চট্টগ্রামে গোয়েন্দা পুলিশের হাতে গ্রেফতার মা-ছেলে দিয়েছে হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা। ফ্রি ফায়ার খেলা নিয়ে বিরোধের জেরে হত্যা করে অপহরণের নাটকও সাজিয়েছিল খুনিরা।

গোয়েন্দা পুলিশ জানায়, নিখোঁজ ও খুন হওয়ার আগে কিশোর আব্দুল্লাহকে তার বন্ধু হাসানের সাথে তাদের বাসায় যেতে দেখা যায়। এই ক্লু ধরে হত্যা রহস্য উদঘাটনে নামে পুলিশ। এর পরিপ্রেক্ষিতে আনোয়ারা থেকে হাসান এবং ইপিজেড এলাকা থেকে তার মা হাফিজাকে আটক করা হয়। পরে হত্যাকাণ্ডের কথা তারা স্বীকার করে।

চট্টগ্রাম ইপিজেড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, আব্দুল্লাহর মরদেহ পাওয়ার পর আমাদের মনে হয় যে, এখানে বাইরে থেকে এনে কারও লাশ রেখে যাওয়ার মতো পরিবেশ নাই। যে খুন করেছে বা লাশ যারা এখানে রেখে গেছে তারা আশেপাশে আছে। এই ধারণা থেকে আমরা তদন্ত শুরু করি। পরবর্তীতে সিসি ক্যামেরার ফুটেজে বিষয়টি পরিষ্কার হয়।

পুলিশ জানায়, একই মোবাইলে ফ্রি ফায়ার খেলা নিয়ে ঝগড়ার একপর্যায়ে হাসানের ঘুষিতে প্রাণ হারায় আব্দুল্লাহ। ছেলেকে বাঁচাতে মরদেহ বস্তাবন্দি করে ফেলে দেয় এবং পরে ঘটনা ভিন্নখাতে নিতে অপহরণ ও মুক্তিপণ দাবির নাটক সাজায়। ক্রাইম পেট্রোল বা এজাতীয় বিভিন্ন প্রোগ্রাম দেখে তার মাথায় এ বিষয়টি আসে। মুক্তিপণ পাওয়ার বিষয়টি তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল না। মুক্তিপণ চাইলে আব্দুল্লাহর বাবা অন্যদিকে ব্যস্ত থাকবে, এই সুযোগে তারা পালিয়ে যেতে পারবে, এটাই ছিল তাদের মূল উদ্দেশ্য।

নিহত কিশোর আব্দুল্লাহর বাবা বলেন, এ হত্যাকাণ্ডের সাথে অন্য আরও কেউ জড়িত আছে কিনা দেখতে হবে। ফোনে তারা আমাকে তাদের এক বসের কথা বলেছিল। সেই বসকে তো এখনও পাওয়া গেল না। এত করে তাদেরকে বললাম, আমার একটামাত্র ছেলে; তারা শুনল না। আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

নিহত কিশোর আব্দুল্লাহ বরিশালের ঝালকাঠি জেলার কাঠালিয়া গ্রামের মোঃ মাহমুদ তালুকদারের ছেলে। ওই কিশোরের মরদেহ উদ্ধারের সময় বন্দর এসি মোঃ শরিফুজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, এই ঘটনাটি সুষ্ঠু তদন্তের জন্য চারটি সংস্থা কাজ করছে এবং অতি দ্রুত আসামিকে গ্রেফতার করা হবে। এর কয়েকঘণ্টা পরই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করা হয়।