সিলেট ব্যুরো: বিএনপির ডাকা অবরোধের প্রথম দিন সিলেটের কানাইঘাটে পুলিশ- ছাত্রলীগের সঙ্গে বিএনপি নেতা কর্মীদের সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। কানাইঘাট বিএনপি’র কার্যালয়ে আগুন দিয়েছেন আওয়ামী লীগের কর্মীরা। এ সময় কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছেন। ঘটনার জের ধরে দিনভর উত্তেজনা বিরাজ করে সেখানে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় কানাইঘাট সদরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বিএনপি দাবি করেছে- পুলিশের ছত্রছায়ায় তাদের কার্যালয়ে আগুন দেয়া হয়েছে। কার্যালয়ের আসবাবপত্র পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। ঘটনায় উপজেলা বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক খসরুজ্জামান পারভেজসহ অন্তত ৮ জন আহত হন। আব্দুল মালেক (৬৩) নামে এক জনের অবস্থা গুরুতর। তাকে প্রথমে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেটের নর্থ ইস্ট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন- কেন্দ্র ঘোষিত ৩দিনের অবরোধ কর্মসূচি পালনে মঙ্গলবার দুপুরে কানাইঘাট সদরের পূর্ব বাজার কার্যালয়ের সামনে থেকে অবরোধের সমর্থনে মিছিল বের করেন উপজেলা ও পৌর বিএনপি’র নেতারা। একই সময় ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে পাল্টাপাল্টি আরেকটি মিছিল বের করা হয়। দুটি মিছিল মুখোমুখি হলে উত্তেজনা দেখা দেয়। এ সময় উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় উপজেলা সদরে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ করে দেন।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়াকালে উপজেলা বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক খসরুজ্জামান পারভেজসহ ৮ জন আহত হন। এসময় আব্দুল মালেক (৬৩) নামে এক ব্যক্তি গুরুতর আহত হয়েছেন। তাকে প্রথমে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেটের নর্থ ইস্ট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। আব্দুল মালেক (৬৩) এর অবস্থা আশংকাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তাকে আইসিইউতে নেয়া হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, কানাইঘাটে সদরের পূর্ব বাজারে অবরোধের সমর্থনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে মিছিল বের করে বিএনপি নেতাকর্মীরা। পরে বাজারে বিক্ষোভ মিছিল শেষে সমাবেশ করে বিএনপি। এসময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এবং উভয় পক্ষের অন্তত ১৫জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে। এদিকে- সদরে উত্তেজনা বিরাজ করায় কানাইঘাট থানা পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর সোহেল মাহমুদের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এস আই সোহেল মাহমুদ জানিয়েছেন- তারা বাজারে তেমুখী এলাকায় অবস্থানে ছিলেন। পূর্ব বাজারে ঘটনার খবর শুনে তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এরপর থেকে উপজেলা সদরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
বিএনপির নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেছেন- কানাইঘাট পূর্ব বাজারে দুটি ভবনে উপজেলা ও পৌর বিএনপি’র কার্যালয় রয়েছে। আওয়ামী লীগের মিছিল থেকে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীরা হঠাৎ করে তাদের কার্যালয়ে হামলা চালায়। তারা দুটি অফিসকে লক্ষ্য করে প্রথমে ইটপাটকেল ছুড়ে পরে দুটি অফিসে ঢুকে আসবাবপত্র বাইরে এনে আগুন ধরিয়ে দেয়।
সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী জানিয়েছেন- প্রথমে বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করা হয়েছিল। এতে উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদকসহ কমপক্ষে ৮ জন আহত হন। এ ঘটনার পর বিকালে তাদের দুটি কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।
নেতৃবৃন্দ বলেন, আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলায় উপজেলা বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক খছরুজ্জামান, কানাইঘাট পৌর বিএনপি নেতা আসরাফ আহমদ, বিএনপি নেতা এখলাছুর রহমান, যুবদল নেতা খাইরুল ইসলাম, ছাত্রদল নেতা আনোয়ার হোসেন, ছাইফুর রহমান ও আব্দুল মালেক (৬৩) সহ বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হয়েছেন। এরমধ্যে আব্দুল মালেক (৬৩) এর অবস্থা আশংকাজনক।
অন্যদিকে বিকালে শান্তি সমাবেশ করে আওয়ামী লীগ। সমাবেশে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি লুৎফুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলামসহ সিনিয়র নেতারা বক্তব্য রাখেন। তারা হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। অপরদিকে- কানাইঘাট উপজেলা বিএনপি’র মিছিলে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন সিলেট জেলা বিএনপি’র নেতৃবৃন্দ।