পল্লবীতে পুলিশের ‘ফর্মা’ বেপরোয়া

22

নিজস্ব প্রতিবেদক: মিরপুরের পল্লবী থানার চার তলায় শাকিব খানের ছবির গানের তালে তালে নাচছিলেন এক ব্যক্তি। গানের তালে তালে চেয়ারে বসে যে নাচছিলেন সে পুলিশের ‘ফর্মা’ লাবলু। তার হাতে ওয়াকিটকি। অপরিচিত কেউ দেখলে বোঝার উপায় নাই তিনি পুলিশের ফর্মা। মনে হবে সে ওই থানার হয়তো পুলিশের বড় কোন কর্তা। চালচলন ঠক পুলিশের মতই। গানের তালে নাচা ফর্মা লাবলুর পাশেই ছিলেন ওই থানার এক কর্মকর্তা।

যা হওয়ার নয় থানার অভ্যন্তরে, পল্লবীতে মাঝে মধ্যে তা-ই হয়। নানা ঘটনা-রটনায় যেমন বেপরোয়া পল্লবী থানার পুলিশ, তেমনি তাদের সোর্স বা ফর্মারাও।

ফর্মা লাবলু টিকটক করেন। ‘আশকারা’ পাওয়ায় পুলিশকে পাশে রেখে ভিডিও তৈরিতে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ভোগেন না তিনি, অন্তত ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্মটির একটি ভিডিও তা প্রমাণ করে। এমন আশকারা পান বহু ফর্মা, তারাও বেপরোয়া। মদ, গাঁজা, ইয়াবা বেচা-কেনা-সেবনে তারা সিদ্ধহস্ত। পাকা হাতে চালান নানা অপরাধ, ডর-ভয়হীন। তাদের কিছু হয় না। মাথার ওপর পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) সহকারী উপপরিদর্শকের (এএসআই) হাত থাকায় তারা অকুতোভয়।

নির্দিষ্ট এলাকায় নাম-পরিচয় গোপন রেখে ওই এলাকার বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য নেওয়ার নিয়ম রয়েছে আইন শৃঙ্খলাবাহিনীতে। অপরাধী শনাক্ত ও বিভিন্ন মামলার তদন্তে পুলিশকে সহযোগিতা করেন যারা তারাই সোর্স বা ফর্মা বিশেষণে পরিচিত। সহযোগিতার বিপরীতে তারা কিছু ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিল করেন। নিয়মিত তথ্য দাতাদের দেওয়ার কথা ‘সোর্স মানি’। কিন্তু সোর্স মানি না দিয়ে অন্য সুযোগ সুবিধা দেন থানার পুলিশরা। এসবের কারণে বেপরোয়া এই ফর্মারা।

এলাকার দাগী আসামি, মাদক কারবারি ও সন্ত্রাসীদের মধ্যেই কেউ কেউ সোর্স হন। কোনো বাহিনীর স্বীকৃতি সদস্যও নন তারা। পুলিশ সদস্যরা ‘ব্যক্তিগতভাবে’ তাদের নিজের জন্য নিয়োগ করেন। ‘কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলা’ বলে যে একটি প্রবাদ আছে, সেটি প্রতীয়মান হয় এসব সোর্সদের দিকে তাকালে। কেননা, তারা মাদক স্পটসহ বিভিন্ন ধরনের অপকর্মের সঙ্গে জড়িত। পুলিশের সঙ্গে চলাফেরার কারণে পল্লবীর সাধারণ মানুষের কাছে এসব সোর্স বা ফর্মা এখন ‘আতঙ্ক’।

মাদক প্রবণ পল্লবী থানা এলাকায় এসব ফর্মারা ফুটপাত থেকে শুরু করে নানা পণ্যের দোকানিদের জ্বালাতন করেন। ‘হপ্তা’ না দিলে পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া, দলবল নিয়ে ভীতি ছড়িয়ে অর্থ আদায় করেন তারা। এসব ঘটনার নীরব সাক্ষী এলাকার চটপটি-ফুচকা বিক্রেতা সুজন। তিনি বলেন, কোথাও কোনো ঘটনা ঘটলে সেখানে যত পুলিশ যায়, তাদের চেয়ে ফর্মারাই থাকেন তিন গুণ।

এই সুজন আবার পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার মাদককারবারি লাভলী বেগমের ভাই। সোর্সের মাধ্যমে খবর পেয়ে গত ২৪ জুলাই পল্লবীর আদর্শনগরে লাভলীর বাসায় হানা দেয় পুলিশ। এ সময় ঘটে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। আত্মহত্যা করেন লাভলীর মেয়ে বৈশাখী বেগম। ঘটনাটি নিয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগও ওঠে। তবে সেদিনের ঘটনায় পুলিশ জড়িত ছিলেন না। পুলিশ সদস্যদের বেকায়দায় ফেলতে মাদককারবারীরা এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন।

জানা গেছে, সুজনের পরিবারের বেশ কজন সদস্যের বিরুদ্ধে মাদক কারবারে জড়িত থাকার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছিল পুলিশের কাছে। যে সোর্সের মাধ্যমে পুলিশ এ অভিযোগ পায়, ফর্মারা আবার লাভলীর মাদকের আস্তানা থেকে অর্থ আদায় করতেন। এ ছাড়া লিটনের বাংলা মদের স্পট, জসীমের মায়ের স্পট, ১২ নম্বর কালশী কবরস্থান, কালু ও দোলার স্পট, ১০ নম্বরের ওয়াপদায় মফিজের আস্তানা, ২২ তলা গার্মেন্টসের আশপাশের স্পট থেকেও ফর্মারা টাকা তোলেন। কোনো সময় চাহিদা মতো অর্থ না পেলে নানা কৌশলে কারবারিদের ফাঁসাতে ফাঁদও পাতেন তারা।

আদর্শনগরে সর্বশেষ যে ঘটনাটি ঘটে, সেখানে সোর্সদের বিতর্কিত ভূমিকা ছিল। লাভলীর ভাই সুজন বলেন, ঘটনার দিন এসআই জহিরউদ্দিন আহমেদসহ পুলিশের দুই সদস্য আমার বোনের বাড়িতে যান। তাদের সঙ্গে সাত-আটজন সোর্সও ছিল। আমার ভাগ্নি বৈশাখী আত্মহত্যার পর ঘটনাস্থল থেকে সোর্সরা পালায়। এরপর থেকেই পল্লবীজুড়ে পুলিশের ফর্মা আতঙ্ক বিরাজমান। কখন কাকে ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়, কার কাছ থেকে টাকা আদায় করে- এসব নিয়ে মানুষ ভয়ে আছে। অসাধু পুলিশ সদস্যদের মাধ্যমে যখন-তখন যে কাউকে ফাঁসানো হচ্ছে। এমন ঘটনাও অহরহ, কিন্তু প্রকাশ্যে আসে না।

পল্লবীতে বেপরোয়া পুলিশের যত সোর্স
পল্লবী পুলিশের অন্যতম সোর্স লাবলু ওরফে টিকটকার লাবলু। এই লাবলুই পুলিশকে সাথে নিয়ে পল্লবী থানার চার তলায় শাকিব খানের গানের তালে তালে টিকটক করেন। তিনি এভিনিউ ৫ এলাকার সব গাঁজার স্পট নিয়ন্ত্রণ করেন। অভিযানে উদ্ধারকৃত গাঁজা মাদক কারবারিদের দিয়ে বিক্রির অভিযোগ আছে তার নামে। মাদক নিয়ে কেউ গ্রেপ্তার হলে ‘সেটেলমেন্ট’ করেন লাবলু। পল্লবী থানার এসআই তারেকুর রহমান শুভর হয়ে তিনি ফর্মাগিরি করেন।

মিরপুরের মাদকপ্রবণ এলাকাটিতে ‘ভয়ঙ্কর’ সোর্স হিসেবে পরিচিত তারেক। পুলিশের এ ফর্মা মিল্লাত ক্যাম্প ও কনসাল ক্যাম্প (মিরপুর বাংলা স্কুলের পেছনের এলাকা) এলাকার মাদক কারবারীদের ‘হন্তারক’ বলে খবর পাওয়া গেছে। মাস হিসেবে বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করেন তারেক। পুলিশের সোর্স পরিচয়ে নিজের আওতাধীন এলাকার মাদক কারবার নিয়ন্ত্রণ করেন। টাকার বিনিময়ে কারবারিদেরও সহায়তা করেন। ফলে বেশিরভাগ সময় মাদক ব্যবসায়ীরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যায়। পল্লবী থানার এসআই তাপসের হয়ে কাজ করেন তারেক।

সাইফুল ওরফে চোরা সাইফুলও পুলিশের অন্যতম ভয়ঙ্কর সোর্স। তিনি আবার গোয়েন্দা তালিকাভুক্ত ছিনতাইকারী। তার বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক মাদক মামলা। মাদকের স্পট থেকে মাসোয়ারা আদায় করেন সাইফুল। পল্লবী থানায় সাইফুল মূলত কাজ করেন এসআই শুভর হয়ে। তা ছাড়া থানার সব উপপরির্দশকই তার ‘সেবা’ পান।

তার বিরুদ্ধে পুলিশের নামে পল্লবীর সব অবৈধ মাদক স্পট, বিভিন্ন কারখানা, গাঁজা, ইয়াবা, মদের আসর থেকে অর্থ আদায়ের অভিযোগ রয়েছে। রাস্তায় সাধারণ মানুষকে আটকে তাদের ভয় দেখিয়ে পকেটে ইয়াবা, গাঁজা (চেক করার নামে) গুঁজে দিয়ে অর্থ আদায়ের অভিযোগও আছে সাইফুলের বিরুদ্ধে। কিন্তু সোর্স হওয়ায় পুলিশ তাকে কিছু বলে না। জানা গেছে, একটা সময় পল্লবী থানায় আসা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা (ওসি) সাইফুলকে থানায় ঢোকা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। কিন্তু এখন তিনি অবাধে থানায় আসা-যাওয়া করেন। পল্লবীর অনেক অবৈধ কাজকর্ম তার নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হয়।

সোর্স পরিচয়ের আড়ালে মিরপুর এলাকায় ইয়াবা বিক্রি করেন প্রান্ত। মিরপুর এলাকার অন্যতম ইয়াবা কারবারি ল্যাংড়া রুবেলের সমস্ত চালান বেচাকেনা করেন তিনি। সাগুফতা ও বেগুনটিলা এলাকায় তার বিচরণ। পল্লবী থানার এসআই উজ্জ্বলের হয়ে কাজ করেন তিনি।

মিরপুর ১২ নম্বর ও কালশী এলাকায় গাঁজা-ইয়াবা বিক্রি করার অভিযোগ আছে এসআই মাহমুদুল হাসানের হয়ে কাজ করা সোর্স টেক্কার নামে। পুলিশ কবে কোথায় ও কোন কোন স্থানে চেকপোস্ট বসাবে এসব তথ্য জানার সাথে সাথেই মাদক কারবারীদের অ্যালার্ট করে দেন টেক্কা। আবার বিশেষ স্বার্থ আদায় করে পুলিশকেও সেবা দেন।

ওয়াহিদ নামে এক ফর্মার বিরুদ্ধে মাদক বেচাকেনায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু যেহেতু তিনি পুলিশকে সার্ভিসে দেন, তাই তার কোনো বিচার হয় না। ওয়াহিদ আদর্শনগরে বৈশাখী আত্মহত্যার অন্যতম প্ররোচনাকারীরদের একজন।

বঙ্গবন্ধু কলেজ এলাকায় সোর্সের দায়িত্ব পালন করেন কাল্লু। এই সোর্সের বিরুদ্ধে মাদক বেচাকেনার অভিযোগ রয়েছে। তার মাথায় হাত রয়েছে এসআই আল আমিনের।

টুম্পা ওরফে ইয়াবা টুম্পা। তেজগাঁও থানায় মাদক মামলা রয়েছে তার বিরুদ্ধে। বাউনিয়া বাঁধ বি- ব্লক ও কলাবাগান বস্তি এলাকা তিনি নিয়ন্ত্রণ করেন। এসআই জহির ও আনোয়ারের সোর্স টুম্পা। যে কারণ মাদকসহ ধরা পড়লেও তিনি গ্রেপ্তার হন না। তার বিরুদ্ধে মামলাও হয় না। সুন্দরী হওয়ায় কিছু সুবিধাও পান তিনি। অভিযোগ আছে, টুম্পার জায়গায় অন্য কাউকে মাদক দিয়ে চালান করে দেয় পুলিশ। সোর্স আরিফ-সোলেমান-টুম্পার সিন্ডিকেট রয়েছে। যেটি বাউনিয়াবাধ এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে রেখেছে।

সোর্স আরিফ ওরফে গাঁজা আরিফ। কাজ করেন এসআই কামরুল, মাহমুদুল হাসান ও আজাদের হয়ে। ইয়াবা টুম্পার সিন্ডিকেটের সদস্য। নিয়ন্ত্রণ করেন বাউনিয়াবাধ এলাকার কিছু মাদকের স্পট। এ ব্যবসায় যিনি বাধা দিতে আসেন, তাদের পুলিশ দিয়ে হয়রানি করেন, মিথ্যা মামলারও ভয় দেখান। বেশ কয়েকটি মামলাও আছে তার বিরুদ্ধে।

সিএনজি চুরি করতে গিয়ে ডিবি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন স্বপন ওরফে চোরা স্বপন। সাধারণ মানুষ ও বিভিন্ন গ্যারেজকে পুলিশের ভয় দেখিয়ে মাসিক চাঁদা আদায়ের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। রাজধানীর বিভিন্ন থানায় রয়েছে একাধিক মামলা। কাজ করেন পল্লবী থানার এসআই আজাদ ও জহিরের হয়ে।

বহু মামলার আসামি সোলেমান ওরফে ইয়াবা সোলেমান। ইয়াবা টুম্পার স্বামী। তার ছোট ভাই সাইফুল ইয়াবা বিক্রির সঙ্গে জড়িত। সোলেমান কাজ করেন এসআই জহির ও আনোয়ারের সোর্স হিসেবে।

একটি বিশেষ সূত্র জানিয়েছে, আরজু, হারুন ওরফে ইয়াবা হারুন, ওয়াহিদ, সুমন, মামুন, টিটু, মোশারফ নামে এসআই জহিরের আরও সোর্স আছে। সায়মন নামে এসআই আলামিনের; মনির, আলামিন নামে এসআই মাহাবুবের; চুন্নু, জন্সু, কালা স্বপন নামে এসআই আনোয়ারের আলাদা কয়েকজন সোর্স আছে। তাদের দুয়েকজন বাদে সবার নামেই রাজধানীর বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।

সোর্সকাণ্ডে রফিকুল ইসলাম ডাবলু নামে এক ভুক্তভোগী জানান, বাউনিয়াবাদ এলাকায় গত ২ এপ্রিল পুলিশের সোর্স ইয়াবা টুম্পা ও সোলেমানের বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় সেখান থেকে ইয়াবা ও টাকা জব্দ হয়। ডাবলুর ছেলে সজীবের কাছে ২০০০ টাকা পাওনা ছিলেন টুম্পার স্বামী সোলেমান। ঘটনার সময় তাকে টাকা ফেরত দিতে যান সজীব। পুলিশ তাকে দেখে টুম্পার বাসায় ইয়াবা কার প্রশ্ন করেন। সজীব বলেন, যার বাড়ি তাকে প্রশ্ন করেন। এতে উত্তেজিত হয়ে পল্লবী থানার এসআই জহির সজীবকে মারধর করে থানায় নিয়ে যান।

ডাবলু বলেন, আমরা থানায় গেলে সোর্স সোলেমানের সাথে কথা বলতে বলা হয়। তার সঙ্গে কথা হলে তিনি ১ লাখ টাকা দাবি করেন। তা না হলে সজীবকে মাদক মামলা দিয়ে কোর্টে চালান করে দেওয়া হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়। টাকা না দেওয়ায় আমার ছেলেকে ১০০ পিস ইয়াবা দিয়ে কোর্টে চালান করে পুলিশ। আমি টুম্পা ও সোলায়মানের নামে আইজিপি, পুলিশ কমিশনার ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অভিযোগ দিয়েছি। বর্তমানে আমার ছেলে জামিনে আছে।

নাম না প্রকাশ করার শর্তে আরেক ভুক্তভোগী বলেন, সোর্স স্বপন ওরফে চোরা স্বপন গত ১০ জুলাই আমার কাছে চাঁদা দাবি করে। তিনি জানান আমার গ্যারেজে দুটি অস্ত্র রাখা আছে। তিনি আমার কাছে ৫০ হাজার টাকা চান। পরবর্তীতে তিনি আমার গ্যারেজের সামনে পুলিশের গাড়ি নিয়ে আসেন। টাকা না দিলে গ্যারেজে পুলিশ অভিযান চালাবে বলে হুমকি দেন। আমি তাকে পাঁচ হাজার টাকা দিই। স্বপনের বিরুদ্ধে পল্লবী থানা একটি সাধারণ ডায়েরি করে রেখেছি। এর আগেও ২০১৩ সালে চোরা স্বপন আমার কাছে চাঁদা চেয়েছিল। আমার গ্যারেজে নাকি অবৈধ রিকশা আছে। বিভিন্ন কথা বলে আমাকে হয়রানি করে। ওই বছরে আমার কাছ থেকে ২৫ হাজার টাকা চাঁদা নিয়েছিল। এবং সাদা পোশাকে পুলিশ নিয়ে এসে আমাকে ভয়ভীতি দেখিয়েছিল।

থানার অভ্যন্তরে সোর্সের ভিডিও তৈরি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এসআই তারেকুর রহমান শুভ বলেন, লাবলু থানার মধ্যে একটি টিকটক করেছে শুনেছি। ভিডিওটা সে অনেক আগে বানিয়েছে। সে তখন আমার সাথে কাজ করতো না। সোর্স অনেকের হয়ে কাজ করেন। নির্দিষ্ট কারও নয়। আমি কখনো তাকে থানার ওপরে বা ওয়ারলেস দিয়ে ভিডিও বানানোর এক্সেস দিইনি। মাদকের সাথে লাবলুর সংশ্লিষ্টতা সম্পর্কে প্রশ্ন করলে পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, যদি এমন কিছু পাওয়া যায় অবশ্যই সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমার সঙ্গে মাদকের কোনো সেটেলমেন্ট আজ পর্যন্ত করেনি লাবলু।

পরে পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহা. মাহফুজুর রহমান মিয়া বলেন, পল্লবী এলাকায় সোর্সরা মাদক দিয়ে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করে এ ব্যাপারে কারও বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তা ছাড়া থানার অভ্যন্তরে পুলিশের ওয়াকিটকি হাতে সোর্সের টিকটক তৈরির ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে মাহফুজুর রহমান বলেন, এমনটি কেউ করতে পারে না। বিষয়টি আমার জানা ছিল না। আপনার কাছ থেকেই (প্রতিবেদকের) জানলাম। এ ছাড়া আর কোনো ব্যাপারে কথা বলতে রাজি হননি ওসি।