জনগণই যেন আওয়ামী লীগের বড় প্রতিপক্ষ: রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘দেশের জনগণই যেন আওয়ামী সরকারের সবচেয়ে বড় প্রতিপক্ষ। তাই তাদের আমলে মানুষের জীবন কাটে আতঙ্কে, ভয়ে, অবহেলায়, অনাহারে ও অর্ধাহারে। আওয়ামী লীগের ক্ষমতার দরকার পড়ে, কিন্তু ভোটের দরকার পড়ে না। এজন্য দেশে-বিদেশের গণতন্ত্রকামী মানুষরা শেখ হাসিনাকে ধিক্কার দিচ্ছে।’

বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, তারেক রহমানের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং দলের নেতা শেখ রবিউল আলমের মুক্তির দাবিতে আজ শনিবার (১ জুলাই) সকালে রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল শেষে এসব কথা বলেন রিজভী। মিছিলটি নয়াপল্টন থেকে শুরু হয়ে কাকরাইল, নাইটিঙ্গেল মোড়, ফকিরাপুল মোড় হয়ে পুনরায় নয়াপল্টনে গিয়ে শেষ হয়।

রিজভী বলেন, ‘ঈদের দিনেও আমাদের অঙ্গ সংগঠন ছাত্রদল, যুবদলের অনেক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গোপালগঞ্জের মকসুদপুরে তারা মাইকিং করে বলেছে, বিএনপিনেতারা যেন ঈদের নামাজ পড়তে না পারে।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমাদের ধর্মীয় অধিকার—আল্লাহর কাছে ইবাদত করার অধিকার, সন্ত্রাসীরা কেড়ে নিয়েছে। অথচ, তাদের মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছে, বিএনপি নেতারা কোনো সংস্কৃতি জানে না।’

রিজভী বলেন, ‘এবারের কোরবানির ঈদে মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই। ঈদের জন্য ঘরেফেরা মানুষের যানজটে প্রচণ্ড দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। ঈদের প্রাক্কালে বাড়ির উদ্দেশে যেদিন রওনা দিয়েছে, তার পরের দিন সন্ধ্যায় বা মাঝরাতে বাড়িতে পোঁছেছে। কেউ কেউ ঈদের দিনেও বাড়ি পৌঁছেছে।’

রিজভী আরও বলেন, ‘মানুষ চারদিক থেকে ধিক্কার দিচ্ছে ওবায়দুল কাদের (সেতুমন্ত্রী) সাহেবকে। আপনাদের সংস্কৃতি তো কাউয়া সংস্কৃতি। এই সংস্কৃতি আমরা মানি না। আমরা মানুষকে ইজ্জত দিতে জানি। বিএনপি মানুষকে শ্রদ্ধা করে।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘ক্ষমতাসীনদের বাজার সিন্ডিকেটের কারণে প্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের দাম যেভাবে হু হু করে বৃদ্ধি পেয়েছে, তাতে মধ্যম ও স্বল্প আয়ের মানুষের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। তাই কোরবানি ঈদে রান্নার জন্য প্রয়োজনীয় জিনিস যেমন—কোরবানির পশু, চাল, ডাল, তেল, লবণ, পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচ ও মসলাসহ অধিকাংশ খাদ্যপণ্যই ছিল মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। দেশের জনগণই যেন আওয়ামী সরকারের সবচেয়ে বড় প্রতিপক্ষ। তাই তাদের আমলে মানুষের জীবন কাটে আতঙ্কে, ভয়ে, অবহেলায়, অনাহারে ও অর্ধাহারে। আওয়ামী লীগের ক্ষমতার দরকার পড়ে, কিন্তু ভোটের দরকার পড়ে না। এই জন্য দেশে-বিদেশের গণতন্ত্রকামী মানুষরা শেখ হাসিনাকে ধিক্কার দিচ্ছে।’

মিছিলে আরও অংশ নেন বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ড. রফিকুল ইসলাম, এ্যাবের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার রিয়াজুল ইসলাম, মৎস্যজীবি দলের সদস্য সচিব আব্দুর রহিম, স্বেচ্ছাসেবক দলের সহসভাপতি ড. জাহিদুল কবির, কেন্দ্রীয় যুবদলের যোগাযোগ সম্পাদক গিয়াস উদ্দীন মামুন, বিএনপিনেতা জাকির হোসেন, আরিফুর রহমান নাদিম, ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি ওমর ফারুক কাওসার, ছাত্রদলের সহসভাপতি মিলাদ উদ্দীন ভুইয়া ও ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. আউয়াল, ঢাকা মহানগর ছাত্রদলের পূর্বের আহ্বায়ক শেখ খালিদ হাসান জ্যাকিসহ কয়েকশ নেতাকর্মী।