আহমেদ শরীফ রনি
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের দশম গ্রেডের কর্মকর্তারা বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামতে যাচ্ছেন। বিকেবি প্রবিধানমালায় ২০০৮ এর ১০ম গ্রেডের কর্মকতাদের ৩ বছর পর প্রমোশনের কথা উল্লেখ থাকলেও ছয়-সাত বছরেও প্রমোশন হচ্ছে না বলে জানা গেছে। তবে সোনালী ব্যাংকসহ অনান্য সকল রাষ্ট্রয়ত্ত্ব ব্যাংকগুলো সঠিক সময়ে প্রমোশন দিচ্ছে। কৃষি ব্যাংকের এই বৈষম্যের কারণেই দশম গ্রেডের কর্মকর্তারা তাদের নীতিমালা অনুযায়ী অধিকার আদায়ে এক দফা দাবিতে আন্দোলনে নামতে যাচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তার সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত ২৭ আগস্ট হেড অফিসে সকল কর্মকর্তাদের কর্মসূচি ছিল। দেশের বিভিন্ন স্থানে বন্যার কারণে কর্মসূচি প্রত্যাহার করে সকল কর্মকর্তারা তাদের একদিনের বেতন সরকারের ত্রাণ তহবিলে দান করেছেন। এরপরও কর্মসূচির কথা জানতে পেরে কর্তৃপক্ষ একটি সার্কুলার জারি করে, যেন সাপ্তাহিক ছুটি/সরকারি ছুটির দিনেও ব্যাংকটির কোন কর্মকর্তা কর্মস্থল ত্যাগ না করতে পারে ।
সূত্র জানায়, ব্যাংকটির অথরিটিতে আগের ফ্যাসিস্ট সরকারের কিছু মদদপুষ্ট উর্ধতন কর্মকর্তা রয়েছেন, তারা চায় ৬০০০ কর্মকর্তারা ক্রোধে যেন রাস্তায় নামে, যাতে আগের ফ্যাসিস্ট সরকারের লোকজন অনুপ্রবেশ করে দেশকে অস্থির করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ২০১৪ সালের পরেও ১০ বছরে কতৃপক্ষের স্বার্থে নতুন একটি অর্গানোগ্রাম পাস করতে পারেনি। উর্ধতনরা দেখলো বর্তমানে তিন বছর পরপর তাদের প্রমোশন হয়, তাদের সুবিধার জন্য গত ১০ বছরে তারা ১০ম গ্রেড কর্মকর্তাবান্ধব একটি অর্গানোগ্রাম পাস করেনি। বাংলাদেশ ব্যাংকের সিলেকশন কমিটির মাধ্যমে একই নিয়োগে ১০ম গ্রেডের অন্য ব্যাংকের কর্মকর্তারা যেখানে ৩ বছরে ৯ম গ্রেডে প্রমোশন পায় সেখানে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ১০ম গ্রেডের কর্মকর্তারা বঞ্চিত হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক কর্মকর্তা জানিয়েছে অন্য সকল রাষ্ট্রত্ব ব্যাংক যেখানে পঞ্চম গ্রেড থেকে চতুর্থ গ্রেডে প্রমোশনে ভাইভা দিতে হয়, সেখানে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ভাইভা শুরু করে দশম গ্রেড থেকে। এ ভাইভাতে কতৃপক্ষ কর্মকর্তারা প্রতিবছর কয়েক কোটি টাকা ভাইভার নামে লোপাট করে, আর কতৃপক্ষের কিছু কর্মকর্তা দূর্নীতি করে সিনিয়রিটি লিস্ট অমান্য করেও প্রমোশন দেওয়ার রেকর্ডও করেছে। ভাইভাতে কর্তৃপক্ষ কর্মকর্তারা অনেক গুলি সেশন আয়োজন করে প্রতিদিন নিজেদের পকেটে লাখ লাখ টাকা ঢুকাচ্ছে সেখানে সকল গ্রেডের কর্মকর্তারা ভাইভা দিতে এসে টিএ ডিএ বিল করে ব্যাংকের কয়েক কোটি টাকা লস করছে। ব্যাংকটির এরকম অসাধু সেচ্ছারীতা নিয়ে কোন কর্মকর্তা কথা বলতে গেলেই কতৃপক্ষ বিভিন্ন প্রকার শাস্তির ভয় দেখায় এমনি রিমোর্ট অঞ্চলে পোস্টিং দিয়ে দেয়। কর্তৃপক্ষের এরকম স্বৈরাচারী আচরণ গত ২৭ আগস্টের তারিখের সার্কুলার জারিতেই প্রতীয়মান।
এ ব্যাংক কর্মকর্তাদের অসন্তোষ অনেক আগে থেকেই জন্ম নিয়েছে বারবার কর্তৃপক্ষকে জানানোর পরেও আগের ফেসিস্ট সরকারের মদদপুষ্ট কিছু কর্মকর্তা বারবার আশ্বাস দিয়ে উল্টো অসন্তোষ কর্মকর্তাদের মনে আরো ক্রোধ জন্ম দিচ্ছে। ২০১৯ সালে একই সার্কুলারে নিয়োগ প্রাপ্ত এক সোনালী ব্যাংক কর্মকতার সাথে কথা বলে জানা গিয়েছে তারা এক বছর আগেই ৯ম গ্রেডে প্রমোশন পেয়েছে।