৫০ বছর আগেও আমাদের সমাজে স্বামীর নাম ধরে ডাকা তেমন প্রচলিত ছিল না। প্রচলন তো দূরের কথা নাম ধরে ডাকার কথা তেমন কেউ কল্পনাও করত না। কেউ স্বামীর নাম ধরে ডাকলে বিষয়টিকে বাঁকা চোখে দেখতে হতো। তবে এখনকার সময়ে পরিস্থিতি অনেকটাই উল্টো। এখন স্বামীর নাম ধরে ডাকাকে অনেকেই ফ্যাশন ও আধুনিকতা মনে করে থাকেন।
এমন প্রেক্ষাপটে অনেকেই জানতে চান এ বিষয়ে ইসলাম কী বলে? তাদের জন্য উত্তর হলো: স্বামী-স্ত্রী যদি সমবয়সী হয় কিংবা বন্ধুসুলভ হয় এবং স্বামী যদি তার নাম ধরে ডাকলে মনে কষ্ট না পায়, তাহলে নাম ধরে ডাকলে কোনো সমস্যা নেই। কেননা ইসলামে এর নজির আছে। ইবরাহিম (আ.) যখন তার স্ত্রী হাজেরা এবং শিশুপুত্র ইসমাইলকে মক্কার জনমানবহীন প্রান্তরে রেখে চলে যাচ্ছিলেন, তখন পেছন থেকে তার স্ত্রী তাকে এভাবে ডাকেন- ‘হে ইবরাহিম!’ পুরো ঘটনা সহিহ বুখারিতে বর্ণিত হয়েছে।
সেখানে বলা হয়েছে- ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন ইবরাহিম (আ.) ও তার স্ত্রীর (সারার) মধ্যে যা হওয়ার তা হয়ে গেল, তখন ইবরাহিম (আ.) (শিশুপুত্র) ইসমাইল ও তার মাকে নিয়ে বের হলেন। তাদের সঙ্গে একটি থলে ছিল, যাতে পানি ছিল। ইসমাইল (আ.)-এর মা মশক থেকে পানি পান করতেন। ফলে শিশুর জন্য তার স্তনে দুধ বাড়তে থাকে। অবশেষে ইবরাহিম (আ.) মক্কায় পৌঁছে হাজেরাকে একটি বিরাট গাছের নিচে থাকার ব্যবস্থা করে দিলেন। অতঃপর ইবরাহিম (আ.) নিজ পরিবারের (সারার) কাছে ফিরে চললেন। তখন ইসমাইল (আ.)-এর মা কিছু দূর পর্যন্ত তাকে অনুসরণ করেন। অবশেষে যখন কাদা নামক স্থানে পৌঁছলেন, তখন তিনি পেছন থেকে ডেকে বলেন, ‘হে ইবরাহিম! আপনি আমাদের কার কাছে রেখে যাচ্ছেন?’ ইবরাহিম (আ.) বলেন, ‘আল্লাহর কাছে।’ হাজেরা (আ.) বলেন, ‘আমি আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩৩৬৫)
এ ছাড়া বিভিন্ন দেশে স্বামীর নাম ধরে ডাকার প্রচলন আছে। সুতরাং এ বিষয়ে সামাজিক নিয়ম-নীতি, সম্মান ও ভদ্রতার প্রতি লক্ষ্য রাখা জরুরি। তবে নাম ধরে ডাকা যদি স্বামী পছন্দ না করেন, তাহলে নাম ধরে ডাকা যাবে না।
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: ইমরান খান
কার্যালয়: গ-১৩৩/৩, প্রগতি স্মরণী, মধ্য বাড্ডা, ঢাকা-১২১২। মোবাইল: ০১৮৫৩-৫৪৬২৫৪
প্রিয়দেশ নিউজ কর্তৃক সর্বসত্ব ® সংরক্ষিত