এস এম সাইফুল ইসলাম কবির: সিঙ্গাপুর থেকে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের রিকন্ডিশন গাড়ী নিয়ে মোংলা বন্দরে নোঙ্গর করেছে বৃহত্তম মালয়েশিয়ার পতাকাবাহী বাণিজ্যিক জাহাজ “এমভি মালয়েশিয়ান স্টার”। জাহাজটি একই সাথে মোট এক হাজার ১৮০টি গাড়ী নিয়ে সিঙ্গাপুর থেকে সরাসরি বাংলাদেশে প্রবেশ করে। সেখান থেকে প্রথমে চট্টগ্রাম বন্দরে নোঙ্গর করে ৪১৯টি গাড়ী খালাস শেষে ২২ নভেম্বর রাতে ছেড়ে আসে মোংলা বন্দরের উদ্দেশে। এবারের চালানে ৭৬১টি গাড়ী মোংলা বন্দরে খালাস করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) সকাল ১১টার দিকে বন্দরের ৫ নাম্বর জেটিতে এসে ভিরে জাহাজটি। ব্যাবসায়ীরা বলছে, গাড়ী আমদানীর মধ্য দিয়ে এ বন্দরের মাধ্যমে একটি বড় রাজস্ব আয় হয় সরকারের।
বন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, মোংলা বন্দরে খালাস করা হচ্ছে একের পর এক গাড়ীবাহী জাহাজ। চলতি অর্থ বছরের এই ৫ মাসে ১০টি জাহাজে মোট ৯ হাজার ৫১৪টি গাড়ী খালাস হলো এ বন্দর দিয়ে। বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) ৭৬১টি গাড়ী খালাস করা হচ্ছে মোংলা বন্দরে। এর মধ্যে এক্সিও, প্রিমিও, এলিয়ন, অ্যাকোয়া, নোয়া, মিনিবাস ও এ্যাম্বুলেন্স সহ একাধিক ব্র্যান্ডের রিকন্ডিশন গাড়ী রয়েছে। গাড়ীগুলো প্রথমে জাপানের নাগোয়া, ইউকোহামা ও ওসাকা বন্দর থেকে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের রিকন্ডিশন গাড়ী এনে সিঙ্গাপুরে রাখা হয়। বাংলাদেশী ব্যাবসায়ীদের আমদানী করা এসব গাড়ী সিঙ্গাপুর থেকে মালয়েশিয়া পতাকাবাহী বানিজ্যিক জাহাজ “এমভি মালশিয়ান স্টার” নামের জাহাজ বোঝাই করে নৌপথ পাড়ি দিয়ে মোংলা বন্দরে এসে নোঙ্গর করে।
গত (১৬ নভেম্বর) জাপান থেকে আসা সিঙ্গাপুর বন্দর থেকে এক হাজার ১৮০টি গাড়ী বোঝাই করে বানিজ্যিক জাহাজটি। প্রথমে চট্টগ্রাম বন্দরে খালাসের পর ২৩ নভেম্বর বৃহস্পতিবার ১১টার দিকে বন্দরের ৫নম্বর জেটিতে এসে জাহাজটি ভিড়ে। আর নঙ্গরের পর পরই জাহাজ থেকে গাড়ী খালাস কাজ শুরু করে খালাশকারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স খুলনা ট্রেডার্স লি: এর প্রতিনিধিরা।
জাহাজটির শিপিং এজেন্ট মেসার্স এনশিয়েন্ট ষ্টিমশিপ লিঃ কর্তৃপক্ষ জানায়, মোংলা বন্দর জেটিতে গাড়ীগুলো খালাস করতে ১৪/১৬ ঘণ্টা সময় লাগবে, পরে আমদানী করা গাড়ীগুলো খালাস শেষ করে তা বন্দর জেটির ইয়ার্ড ও সেডে সারিবদ্ধ করে রাখা হবে। দেশে গাড়ী আমদানী থেকেই একটি বড় আকারের রাজস্ব আয় করে কাস্টমস ও মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ। এর আগে গত ৭ নভেম্বর ১ হাজার ২৬৬টি গাড়ী নিয়ে মোংলা বন্দরে খালাস করেছিল একই জাহাজ “এমভি মালয়েশিয়া স্টার”।
বারবিডা সাবেক সহ-সভাপতি ও (মেসার্স ট্রাস্ট অটো কার প্রতিনিধি) সাইফুল ইসলাম সম্রাট বলেন, পদ্মা সেতু চালু আর সড়ক পথে অবকাঠামোগত দিক ঠিক হওয়ায় ঢাকার সাথে মোংলা বন্দরের দুরত্ব কমেছে আগের তুলনায় অর্ধেক। এছাড়া আগে মোংলা বন্দর থেকে ঢাকায় পৌছাতে বেশী সময় লাগতো, এখন সেখানে মাত্র ৩ থেকে সাড়ে ৩ ঘন্টায় ঢাকায় পৌছানো যায়। তাই আমদানী-রপ্তানীকৃত ব্যাবসায়ীরা এখন মোংলা বন্দরকেই বেশী পছন্দর করছে। এ বন্দর ব্যাবহার করলে সময় এবং অর্থ দুটোই সাশ্রয় হচ্ছে বলে জানায় এ ব্যাবসায়ী।
২০০৯ সালের ৩ জুন হক্স-বে অটোমোবাইল কোম্পানি প্রথম ২৫৫টি রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানির মধ্য দিয়ে মোংলা বন্দরে গাড়ি রাখার কার্যক্রম শুরু হয়।