গৃহবধু শিখার মৃত্যু নিয়ে তোলপাড়

20

সাদের হোসেন বুলু: ঢাকার নবাবগঞ্জের যন্ত্রাইল ইউনিয়নের গবিন্দপুর গ্রামের শান্ত পরিবেশ হঠাৎ করে অশান্ত হয়ে উঠেছে গৃহবধু শিখার মৃত্যু নিয়ে। গত শুক্রবার ভোরে শিখার ঝুলন্ত মৃত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। শিখার শ্বশুর সুনিল হালদারের বসত বাড়ির ঘর থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

এরপর থেকেই শিখার মৃত্যু নিয়ে চলছে ওই গ্রামে নানা গুঞ্জন। শিখার মৃত্যু রহস্য কি হত্যা না আত্মহত্যা? এমন নানা প্রশ্নের উত্তর মিলছে না শ্বশুরবাড়ীর লোজনের কাছ থেকে। গ্রামের অধিকাংশ মানুষের দাবি, শিখাকে তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন নির্যাতনের পর হত্যা করে। পরে গলায় ফাঁস দিয়ে ঘরে চালের কাঠের সাথে কাপড় দিয়ে ঝুলিয়ে রাখে। লোকজনকে শ্বশুর বাড়ির স্বজনরা বলে শিখা আত্মহত্যা করেছে।

শিখার মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে সৌদি আরব প্রবাসী স্বামী শ্রী রতন হালদার দেশে আসেন। স্ত্রীর মৃত্যুর বিষয়ে তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে শিখা আমাকে মোবাইলে জানায় বাড়িতে ঝগড়া হয়েছে। আমি তাকে বিভিন্নভাবে সান্ত্বনা দেই ও শান্ত থাকতে বলি। তখন বাংলাদেশ সময় রাত প্রায় ১২টা। আমি শুক্রবার জানতে পারি আমার স্ত্রী আর জীবিত নেই। আমার স্ত্রী শিখাকে ‘আমার বাবা ও ছোট ভাই নির্যাতন করে মেরেছে’।

এ বিষয়ে স্থানীয় সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ড মেম্বার গীতা হালদার বলেন, শিখার মৃত্যুর বিষয়ে তার স্বামী রতন হালদার ফোনে তাকে জানায়, শিখাকে রতনের বাবা ও ছোট ভাই নির্যাতন করে মেরেছে।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, শিখার মৃত্যুর বিষয়ে কথা হয় তার মা শারথী হালদারের সাথে। তার দাবি, মেয়ে শিখার শ্বশশুর বাড়ির লোকজন তার মেয়েকে মেরে ঝুলিয়ে রাখে। তিনি তার মেয়ের হত্যাকারীদের আইনের আওতায় এনে বিচার করার দাবি জানান।

স্থানীয় জলিল মাতবর বলেন, শিখার শ্বশুর প্রায়ই ছেলের বউদের মারধর করতো। এঘটনার আগের দিন শিখার শ্বশুর সুনিল হালদার তার দুই ছেলে বউ এর সাথে ঝগড়া করে। তখন ছেলের বউরা আমাকে বিষয়টি জানায় আমি বিষয়টি সমাধানের জন্য সুনিলকে বারবার অনুরোধ করি। কিন্তু সে আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করে এবং আমার কথা রাখেনি। এলাকায় বিষয়টি নিয়ে কয়েকদিন ধরেই বেশ কানাঘুষা চলছে।

গত শনিবার বিকালে উত্তেজিত এলাকাবাসী শিখাকে হত্যা করেছে অভিযোগ এনে বিচার দাবীতে বিক্ষোভ করে। এ ঘটনার পর থেকে শিখার শ্বশুরবাড়ীর লোকজন পলাতক রয়েছে। এতে করে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে হত্যা সন্দেহ আরও জোরদার হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

নবাবগঞ্জ থানার ওসি মো. সিরাজুল ইসলাম শেখ বলেন, ময়না তদন্ত ও ভিসেরা রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

স্ত্রী হত্যার বিচার চেয়ে প্রবাস ফেরত স্বামী রতন হালদার বলেন, হত্যার সাথে জড়িত যেই থাকুক তার শাস্তি চাই।