‘র্যাব কাউকে তুলে নিয়ে নির্যাতন করতে পারে কি না’- এমন প্রশ্ন তুলেছেন হাইকোর্ট। নওগাঁর সুলতানা জেসমিনকে তুলে নিয়ে নির্যাতনের পর মৃত্যুর ঘটনায় এ প্রশ্ন তুলেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে তুলে নিয়ে হেফাজতে রাখার সময় জেসমিনের সঙ্গে কী ধরনের আচরণ করা হয়েছে- তাও জানতে চান আদালত।
মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ অ্যাটর্নি জেনারেলের কাছে এমন প্রশ্ন রাখেন।
এরপর আদালত বলেন, কেউ যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় এবং ন্যায়বিচার যেন পায়, আমরা সেটাই করব। আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে, মৃত্যুর কারণ কি। কি কারণে তার মৃত্যু হলো। কাউকে র্যাব তুলে নিতে পারে কি না। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসুক, এরপর আমরা আদেশ দেব। এরপর আগামী বুধবার (৫ এপ্রিল) দুপুর ২টায় পরবর্তী শুনানির জন্য দিন নির্ধারণ করেন হাইকোর্ট।
শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আমার লার্নেড ফ্রেন্ড ওই নারীকে আটক করে আদালতে হাজির করার সময়টা ভুল বলেছেন। উনি সঠিকভাবে সাবমিশন দেননি। হোমওয়ার্ক করেননি। যেকোনো বিষয় নিয়ে যখন তখন কাউকে তুলে নিয়ে যাওয়া যায় না। আমার ফ্রেন্ড ভুল ইনফরমেশন তুলে ধরেছেন।
আদালত বলেন, আপনি বলতে চাচ্ছেন ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ওই নারীকে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে তোলা হয়েছে। তাকে ২২ তারিখে নিয়ে ওই দিনই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এরপর ওই নারীর ব্লাড প্রেসার সম্পর্কে আদালতে বলা হয় ও তাকে ছেড়ে দেওয়ার সময় তুলে ধরা হয়।
আদালত বলেন, তাহলে আমরা ধরে নিলাম সঠিক সময়ের মধ্যে তাকে আদালতে তোলা হয়েছে।
এরপর তাকে র্যাব তুলে নেওয়ার বিষয়ে অ্যাটর্নিকে প্রশ্ন করা হয়। তখন অ্যাটর্নি জেনারেল আদালতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি পড়ে শোনান।
গত বুধবার বেলা ১১টার দিকে নওগাঁ শহরের মুক্তির মোড় এলাকা থেকে জেসমিনকে আটক করে র্যাব। আর গত শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওই নারীর মৃত্যু হয়। মৃত জেসমিন নওগাঁ সদর উপজেলার চণ্ডীপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে অফিস সহকারী পদে চাকরি করতেন।
র্যাবের দাবি, প্রতারণার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বুধবার জেসমিনকে আটক করা হয়। আটকের পর অসুস্থ হয়ে তিনি মারা গেছেন। তবে, স্বজনদের অভিযোগ র্যাব হেফাজতে নির্যাতনের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।