হেলাল উদ্দিন টেকনাফ প্রতিনিধি: মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে বঙ্গোপসাগরে গভীর সঞ্চরণশীল মেঘমালা সৃষ্টি হচ্ছে। এর কারণে মঙ্গলবার বিকেলে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এর ফলে আবারও টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌপথে পর্যটকবাহী জাহাজসহ সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। গত দুই দিনে যাওয়া সাড়ে তিন শতাধিক পর্যটক সেন্ট মার্টিনে রাত্রি যাপনের জন্য অবস্থান করছেন। তারা দ্বীপটিতে আটকা পড়েছেন।
আবহাওয়াবিদ মো. মনোয়ার হোসেন স্বাক্ষরিত আবহাওয়া বার্তায় বলা হয়েছে, সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চরণশীল মেঘমালা সৃষ্টি হচ্ছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্রবন্দরগুলোর ওপর দিয়ে ঝাড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএ টেকনাফের ট্রাফিক সুপারভাইজার মো. জহির উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, মঙ্গলবার সকালে টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌপথে চলাচলকারী এমভি বার আউলিয়া জাহাজে করে বিপুলসংখ্যক পর্যটক সেন্ট মার্টিন দ্বীপে বেড়াতে গেছেন। এর মধ্যে রাত্রি যাপনের জন্য দুই শতাধিক পর্যটক দ্বীপে অবস্থান করছেন। সোমবার একই জাহাজ করে দ্বীপে যাওয়া দেড় শতাধিক পর্যটকও রয়েছেন। গত দুই দিনে সাড়ে তিন শতাধিক পর্যটক দ্বীপে অবস্থান করছেন। আজ সতর্কসংকেত বলবৎ থাকলে দ্বীপে অবস্থান করা পর্যটকেরা ফিরতে পারবেন না।
সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, গত শুক্রবার থেকে টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌপথে স্পিডবোট ও সার্ভিস ট্রলার চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। সেন্ট মার্টিন দ্বীপের সাড়ে ১০ হাজার বাসিন্দা, দ্বীপে থাকা হোটেল-রিসোর্টগুলোর কর্মচারীসহ প্রায় ১২ হাজারের মতো লোক রয়েছেন। চার দিন ধরে সার্ভিস ট্রলার চলাচল বন্ধ থাকায় টেকনাফ থেকে কোনো ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় মালামাল আনা সম্ভব হয়নি। ফলে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে তরিতরকারিসহ খাদ্যসংকট দেখা দিতে পারে।
সেন্ট মার্টিন বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ইউপি সদস্য হাবিব খান বলেন, চার দিন ধরে সেন্ট মার্টিনের সার্ভিস ট্রলার চলাচল বন্ধ থাকায় বর্তমানে দ্বীপে ডিম, তরিতরকারি ও ফার্মের মুরগি বলতে কিছুই নেই। তবে চালের মজুত রয়েছে। যাবতীয় খাদ্য টেকনাফ থেকে সরবরাহ করা হয়। সাগর উত্তাল থাকায় মাছ ধরাও বন্ধ রয়েছে। এ অবস্থায় আবারও স্থানীয় সতর্কসংকেত জারি করায় মঙ্গলবার বিকেল থেকে এ নৌপথে যাবতীয় নৌযান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আদনান চৌধুরী বলেন, আটকা পড়া পর্যটকদের যাতে কোনো ধরনের অসুবিধা না হয়, এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নির্দেশ হয়েছে। বৈরী আবহাওয়ার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সেন্ট মার্টিনে আটকা পড়া পর্যটকদের ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ইউএনও আরও বলেন, ‘সার্ভিস ট্রলার বন্ধের বিষয় নিয়ে আমার সঙ্গে কেউ কোনো ধরনের আলাপ-আলোচনা করেননি। বিষয়টি নিয়ে আমি এখনই স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও কোস্টগার্ডের সঙ্গে কথা বলছি।’
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: ইমরান খান
কার্যালয়: গ-১৩৩/৩, প্রগতি স্মরণী, মধ্য বাড্ডা, ঢাকা-১২১২। মোবাইল: ০১৮৫৩-৫৪৬২৫৪
প্রিয়দেশ নিউজ কর্তৃক সর্বসত্ব ® সংরক্ষিত