বেশি ভাত খাওয়ার অপরাধে সিলেটে গৃহকর্মীকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করা হয়েছে। গরম খুন্তি ও দাহ্য পদার্থ দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থান ঝলসে দিয়েছেন তারা। সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স শাহনাজ আক্তার সাবিহা, তার স্বামী স্বজনরা এ নির্যাতন করেন।
এ ঘটনায় সিলেট কোতোয়ালি থানায় মামলা হয়েছে। মামলার পর থেকে নার্স শাহনাজ ও তার স্বজনরা পলাতক। পুলিশ পলাতকদের সন্ধানে অভিযান চালাচ্ছে।
মাত্র ১৩ বছর বয়সী কিশোরী নির্যাতিতা মোছা. জান্নাতের ওপর এমন ঘটনা গত জানুয়ারি থেকে চলে আসছে। ঈদুল আজহার ছুটিতে পিত্রালয়ে গেলে তার ওপর নির্যাতনের ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। এ ঘটনায় তার পিতা মো. জাকির হোসেন মেয়ের ওপর এমন অমানবিক নির্যাতনের অভিযোগে সোমবার কোতোয়ালি থানায় মামলা করেছেন।
সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেলের নার্স শাহনাজ ও নির্যাতিতার বাড়ি গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলংয়ের চৈলাখেল গ্রামে। মাত্র ১৫শ’ টাকা বেতনে ঘরের কাজের জন্য জান্নাতকে নিয়েছিলেন শাহনাজ। এরপর ভাত বেশি খাওয়াসহ নানা তুচ্ছ কারণে জান্নাতকে শারীরিক নির্যাতন করতেন শাহনাজ, তার স্বামী ও স্বজনরা। দেড় বছর ধরে শাহনাজ জান্নাতকে তার বাড়িতে যেতে দেননি শাহনাজ দম্পতি। এবার ঈদুল আযহার ছুটিতে নিজে বাবার বাড়িতে বেড়াতে গেলে জান্নাতকেও সাথে নিয়েছিলেন। তখন সে তার মা বাবাকে ঘটনা খুলে বলে। এরপরই তার বাবা জাকির মামলা করেন।
অন্যদিকে মামলার পর থেকে পালিয়ে গেছেন নার্স শাহনাজ ও তার স্বামী স্বজনরা। কর্মস্থলেও গত ৩ দিন ধরে অননুমোদিতভাবে অনুপস্থিত রয়েছেন তিনি। ওসিসিতে চিকিৎসা শেষে ছাড়পত্র নিয়ে ফিরে গেছে নির্যাতিতা জান্নাত।
গৃহকর্মী জান্নাত নির্যাতনের ঘটনায় ৩ জনের বিরুদ্ধে সিলেট কোতোয়ালি থানায় মামলা করেছেন তার পিতা জাকির হোসেন। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ নির্যাতিতার শরীরে বেশ কিছু নতুন ও পুরাতন আঘাতের চিহ্ন পেয়েছে। নির্যাতনের ধরণ দেখে মনে হচ্ছে গরম খুন্তি ও দাহ্য পদার্থ দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থান ঝলসে দেওয়া হয়েছে।