ডা. মুরাদ হাসানকে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদকের পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি তাকে দল থেকে বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রে সুপারিশ পাঠানো হয়েছে।
মঙ্গলবার বিকাল ৫টায় জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে জরুরি বৈঠকে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্যদের সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠক শেষে সংবাদ মাধ্মেকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট বাকী বিল্লাহ।
সভায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমেদ চৌধুরীসহ স্থানীয় নেতারা উপস্থিত রয়েছেন। ডা. মুরাদ হাসান জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।
জেলা আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, বৈঠকে ডা. মুরাদ হাসানের বিভিন্ন বিতর্কিত মন্তব্য নিয়ে আলোচনা করা হয়। পরে সদস্যদের সম্মতিক্রমে অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। পরে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানানো হয়।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘দলীয় ভাবমূর্তি নষ্ট, অগঠনতান্ত্রিক ও শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ততার অভিযোগে গঠনতন্ত্রের ৪৭ (৯) ধারা মোতাবেক ডা. মুরাদ হাসানকে জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদকের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলো; সেই সঙ্গে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের কাছে আবেদন পাঠানো হলো।’
অ্যাডভোকেট বাকী বিল্লাহ বলেন, গঠনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় জেলা আওয়ামী লীগের কমিটির সদস্যদের উপস্থিতিতে সভায় সবার মতামত নিয়ে স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. মুরাদ হাসানকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তাকে দল থেকে বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রে সুপারিশ পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এর আগে বিকাল ৪টায় ডা. মুরাদ হাসানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে জরুরি বৈঠকে বসেন জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা। সভায় জেলা আওয়ামী লীগের ৭১ সদস্যের মধ্যে ৫৫ জন উপস্থিত ছিলেন।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমেদ চৌধুরী বলেন, আমরা অত্যন্ত দুঃখিত, ব্যথিত এবং লজ্জিত। ডা. মুরাদ হাসানের উল্টাপাল্টা কথাবার্তায় জাতি কষ্ট পেয়েছে। আমরা দলীয় নেতাকর্মীরাও কষ্ট পেয়েছি। তার কর্মকাণ্ডে আওয়ামী লীগসহ জামালপুরের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা তার বিরুদ্ধে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এটি সম্পূর্ণভাবেই সঠিক। মুরাদ হাসানের বিষয়ে আরও আগেই পদক্ষেপ নেওয়া উচিত ছিল আমাদের। আজকের বৈঠকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হলো।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের পর ‘ব্যক্তিগত কারণ’ দেখিয়ে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান। মঙ্গলবার ই-মেইলের মাধ্যমে পদত্যাগপত্র মন্ত্রণালয়ের সচিবের দফতরে পাঠানো হয়েছে। দফতর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
দুপুর ১২টার দিকে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর জনসংযোগ কর্মকর্তা গিয়াস উদ্দিন আহমেদ জানান, মুরাদ হাসান বর্তমানে চট্টগ্রামে অবস্থান করছেন। দফতর থেকে পদত্যাগপত্র টাইপ করে তার কাছে পাঠানো হয়েছে।