মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সেখানকার সেনা অভ্যুত্থানের কারণ জানিয়ে বাংলাদেশকে একটি চিঠি দিয়েছে। বর্মী সেনাবাহিনীর পাঠানো ওই অফিশিয়াল চিঠিতে বলা হয়েছে, গত নভেম্বরের নির্বাচনে অনিয়মের কারণে অং সান সু চি সহ ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের নেতাদের বিরুদ্ধে এই সেনা অভ্যুত্থান।
শনিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, মিয়ানমার আমাদেরকে একটি চিঠি দিয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, গত নভেম্বরের নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে। সেই ভুয়া ভোটের কারণে এই অভ্যুত্থান।
এর আগে গত সোমবার এক সেনা অভ্যুত্থানে ফের অন্ধকার যুগে প্রবেশ করে রোহিঙ্গাদের ওপর জাতিগত নিধনযজ্ঞ চালানো মিয়ানমার। মিয়ানমারের বেসামরিক সরকার ও সেনাবাহিনীর মধ্যে নির্বাচন নিয়ে বিরোধ তৈরির পর এ ঘটনা ঘটে। মিয়ানমার আগেও যদিও সেনা নিয়ন্ত্রণের বাইরে ছিল না, তবুও এখন আনুষ্ঠানিকভাবে পুরোপুরি সেনা নিয়ন্ত্রণে।
২০১১ সাল পর্যন্ত সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে ছিল মিয়ানমার। গত নভেম্বরের নির্বাচনে সু চির ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) সরকার গঠন করার জন্য যথেষ্ট আসন লাভ করে। কিন্তু সেনাবাহিনীর দাবি ওই নির্বাচনে জালিয়াতি হয়েছে।
মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের পর দেশটির স্টেট কাউন্সিলর ও ক্ষমতাসীন দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) নেত্রী অং সান সু চি-সহ অন্য নেতাদের আটকের ঘটনায় জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্র সহ কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিশ্ব নেতৃত্ব। বাংলাদেশও এ ঘটনার নিন্দা জানায়।
অভ্যুত্থানের দিনই বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সেনা অভ্যুত্থানে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি-সহ অন্য শীর্ষ নেতাদের আটকের ঘটনায় সেখানকার পরিস্থিতি ‘পর্যবেক্ষণ’ করছে বাংলাদেশ। বিশ্বের সব দেশেই গণতান্ত্রিক সরকারের প্রত্যাশা রাখে বাংলাদেশ। এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেবে ঢাকা।
প্রতিবেশি দেশটির পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে শুধু বেসামরিক সরকারই নয় দেশটির সেনাবাহিনীর সাথেও কূটনৈতিক দেনদরবারে রয়েছে ঢাকা। ইতিহাস বলে দেশটির সামরিক শাসনের আমলেই রোহিঙ্গাদের দু’দফায় প্রত্যাবাসন সম্ভব হয়েছিল।
এরপর থেকেই আন্তর্জাতিকভাবে চাপে থাকা মিয়ানমারের সামরিক জান্তা নিজেদের ক্ষমতা দখলের পক্ষে সাফাই গেয়ে বিভিন্ন দেশে চিঠি পাঠিয়ে পথ পরিষ্কার করছে। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশেও এলো গণতান্ত্রিক সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করা সামরিক কর্তাদের অফিশিয়াল চিঠি।