মধুপুরে হেফাজতে ইসলামের বাধার মুখে লালন উৎসব পন্ড

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি:টাঙ্গাইলের মধুপুরে হেফাজতে ইসলাম ও কওমি ওলামা পরিষদের বাধার মুখে লালন উৎসব ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়ে গেছে ।

মধুপুর বাসস্ট্যান্ডে মঞ্চ তৈরির কাজ অনেকটা এগিয়ে গেলেও উৎসব স্থগিত করার খবরটি আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে মাইকিং করে নিশ্চিত করে।

উদ্‌যাপন কমিটির আহ্বায়ক মো. সবুজ মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আজ বুধবার রাত ৮টার দিকে মধুপুর বাসস্ট্যান্ডে লালন উৎসব হওয়ার কথা ছিল। আহবায়ক সবুজ মিয়া আরো বলেন, সবকিছু ঠিকই ছিল কিন্তু হঠাৎ করেই দুটি ইসলামি সংগঠন বাধা প্রদান করে তাদের সাথে আলোচনায় বিষয়টি মোটামুটি মিমাংসাও হয়। কিন্তু আবার বিকেলে এসে শোনা যাচ্ছে কোন ভাবেই ওই সংগঠন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হতে দিবেনা।

লালন সংঘের সভাপতি মো. ফরহাদ তরফদার জানান,২০১৭ সালে আমরা লালন সংঘ প্রতিষ্ঠা করি। প্রতিষ্ঠার পর বেশ জাঁকজমকভাবে মধুপুর বাসস্ট্যান্ডে লালন স্মরণ উৎসব করেছি। তারই ধারাবাহিকতায় এ বছরও লালন স্মরণোৎসব ২০২৫ নামে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আমরা অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে প্রধান অতিথি, সহকারী কমিশনার ভূমিকে বিশেষ অতিথি করেছি। তাঁরা যেহেতু অনুষ্ঠানের অতিথি হতে সম্মতি দিয়েছেন, তাই আমরা পৃথকভাবে অনুষ্ঠানের অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন মনে করিনি। হঠাৎ করে ১১ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার আমাদের অনুষ্ঠান বন্ধ করার জন্য মধুপুরের ধর্মীয় নেতারা আলোচনা শুরু করেন। পরে হেফাজতে ইসলাম ও কওমি ওলামা পরিষদের নেতা ও বিএনপির নেতৃবৃন্দকে নিয়ে আমরা আলোচনায় বসি। ওই আলোচনায় তাঁরা লালন উৎসব না করার পক্ষে অনড় থাকেন। একপ্রকার অমীমাংসিতভাবেই আমাদের সভা শেষ হয়।

সবুজ মিয়া আরও বলেন, ‘লালন উৎসব যাতে না হতে পারে, সে ব্যাপারে বুধবার সকালেও ওই দুটি সংগঠনের নেতারা বাসস্ট্যান্ড মসজিদে সভা করেন। তাঁরা লালনের ভ্রান্ত মতাদর্শ মধুপুরে প্রচার করতে দেবেন না বলে সিদ্ধান্ত নেন। বিষয়টি জানতে পেরে বিশৃঙ্খলা এড়াতে আমরা অনুষ্ঠান স্থগিত করেছি।

এ ব্যাপারে কওমি ওলামা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আব্দুল মান্নান বলেন, ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কোনো বিষয়কে সমর্থন আলেমেরা করতে পারে না। মধুপুরের আলেমরা লালনের উৎসব বন্ধ করার ব্যাপারে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

এ ব্যাপারে মধুপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এমরানুল কবীর জানান,আমি ছুটিতে ছিলাম। বুধবার এসে জানতে পেরেছি, লালন স্মরণোৎসবের বিষয়ে ইসলামি দলগুলোর আপত্তি রয়েছে । তাই আইনি ঝামেল এড়াতে অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়েছে।

মধুপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জুবায়ের হোসেন জানান,আলোচনার ভিত্তিতে লালন উৎসব স্থগিত করা হয়েছে বলে আমি জানতে পেরেছি। বাধার মুখে বন্ধ হওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই।