ভোলার চরফ্যাশনে গরু চুরির দায়ে দুই বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ঘটনায় ওই দুই নেতাসহ পাঁচজনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন গরুর মালিক ইয়াছিন মিয়া।
শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) পুলিশ তিনজনকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছেন।
চরফ্যাশন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমান ঢাকা মেইলকে তিনজনকে গ্রেফতার করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেফতার হওয়া তিনজন হলেন- চরফ্যাশন উপজেলা আসলামপুর ইউনিয়নের মোহাম্মদ আলী, জাকির হোসেন ও ইসমাঈল। এদের মধ্যে মোহাম্মদ আলী আসলামপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব ও জাকির হোসেন যুগ্ম আহ্বায়ক।
ঘটনার পর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সিকদার হুমায়ুন কবির ও সদস্য সচিব মো. কামরুজ্জামান শাহীনের যৌথ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে মোহাম্মদ আলী ও জাকির হোসেনকে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।
উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সিকদার হুমায়ুন কবির জানান, গরু চুরি করে মোহাম্মদ আলী ও জাকির হোসেন মারাত্মক অপরাধ করেছে। বিএনপির লোক হয়ে তারা কিভাবে গরু চুরি করে। এটি লজ্জার বিষয়। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে তাদেরকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
চরফ্যাশন থানা পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আসলামপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. ইয়াছিন মিয়া তার একটি গরু স্থানীয় এক কৃষককে বর্গা হিসেবে লালন-পালন করতে দিয়েছিলেন। গত ২২ দিন আগে গরুটি গোয়ালঘর থেকে চুরি হয়। এরপর তিনি বেশকিছু জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও গরুটি পাননি। গোপন একটি সূত্রের মাধ্যমে তিনি জানতে পারেন, গরুটি আসলামপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব মোহাম্মদ আলীর বাড়িতে আছে। এরপর তিনি মোহাম্মদ আলীর গোয়ালঘরে গিয়ে গরুটির সন্ধান পান।
গরু চুরির কথা অস্বীকার করে প্রথমে মোহাম্মদ আলী জানান, তিনি গরুটি লালমোহন উপজেলার রায়চাঁদ বাজার থেকে কিনেছেন। একপর্যায়ে স্থানীয়দের তোপের মুখে তিনি স্বীকার করেন গরুটি তিনি তার দলের যুগ্ম আহ্বায়ক জাকির হোসেনের কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকায় কিনেছেন। এরপর স্থানীয়রা জাকিরকে ডেকে নিয়ে গরুর বিষয়ে জানতে চাইলে জাকির হোসেন জানান, গরুটি স্থানীয় তিন যুবক ইসমাঈল, দুলাল ও আলমগীর হোসেন চুরি করে এনেছে এবং তারা দু’জন এই চুরির সঙ্গে জড়িত। একপর্যায়ে স্থানীয়রা একত্রিত হয়ে তাদেরকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন।
শুক্রবার সকালে চরফ্যাশন থানায় গরুর মালিক ৫ জনকে আসামি করে গরু চুরির মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় মোহাম্মদ আলী, জাকির হোসেন ও ইসমাঈলকে পুলিশ গ্রেফতার করে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চরফ্যাশন থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মনির হোসেন জানান, গরু চুরির দায়ে যে তিনজনকে গ্রেফতার করেছি। তাদের মধ্যে দু’জন বিএনপি নেতা। স্থানীয়রা তাদেরকে গণধোলাই দিয়ে আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছে।
চরফ্যাশন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমান জানান, গরুর মালিক এ ঘটনায় ৫ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেছেন। সেই মামলায় তিনজনকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। আদালত তাদেরকে কারাগারে পাঠিয়েছেন। বাকি দুই আসামিকেও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। চুরি হওয়া গরুটি উদ্ধার করা হয়েছে।