হাসিনার মতোই শেষ ভাষণ দিতে পারেননি প্রেসিডেন্ট বাশার

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রাণ নিয়ে দেশ থেকে পালিয়ে যান প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি পালিয়ে যাওয়ার আগের দিন ‘মার্চ টু ঢাকা, গণভবন ঘেরাও’ কর্মসূচি ঘোষণা করে আন্দোলনকারীরা। ফলে সকাল থেকেই রাজধানী ঢাকা ও আশেপাশের সড়কগুলো লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। সবার লক্ষ্য একটাই গণভবন যাত্রা। আর এই লক্ষ্য নিয়ে গণভবনও প্রায় ঘেরাও করে ফেলে ছাত্র-জনতা।

এদিকে, সেসময় অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে ছাত্র-জনতা গণভবনে ঢুকে পড়লে তা ফেরানোর কোনো অবস্থা নেই প্রশাসনের। নানা বৈষম্যের শিকার ছাত্র-জনতা এতোটাই হিংস্র রুপ নিয়েছিল যে তারা গণভবনে ঢুকে পড়লে প্রাণনাশেরও শঙ্কা শেখ হাসিনার। আর তাই সেনাপ্রধান হাসিনাকে ৪৩ মিনেটর সময় বেধে দিলে প্লেনে করে বোন রেহানাকে সঙ্গে করে প্রাণ নিয়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন শেখ হাসিনা। আর এর মাধ্যমে তার দীর্ঘ ১৫ বছর শাসনের অবসান ঘটল। এখন পর্যন্ত ভারতেরই আশ্রয়েই সেখানে অবস্থান করছেন হাসিনা।

হাসিনার পতনের পর রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে শিশু, নারী, পুরুষ সবাই রাস্তায় নেমে এমনভাবে আনন্দ উল্লাস করতে থাকে যেন দ্বিতীয়বার কোনো এক যুদ্ধে নতুন করে বাংলাদেশকে জন্ম দেওয়া হয়েছে। এসময় তারা ‘হাসিনা পালাইছে, হাসিনা পালাইছে’ এরকম আরো অনেক স্লোগান দিতে থাকেন। সব প্রতিষ্ঠান থেকে তার ছবি নামিয়ে ভাঙচুরও এবং ধানমন্ডির-৩২ এ শেখ মুজিবের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়।

অপরদিকে, সিরিয়ায় বিদ্রোহীদের আক্রমণের মুখে প্লেনে করে প্রাণ নিয়ে দামেস্ক ছেড়ে পালিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। আর এর মাধ্যমে তার দীর্ঘ ২৪ বছরের শাসনের অবসান হলো। রবিবার (৮ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসি ও রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে। তবে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট দামেস্ক ছেড়ে কোথায় পালিয়ে গেছেন তা জানা যায়নি। আল-আসাদের শাসনের সমাপ্তি দেশটির ইতিহাসে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে বলে মনে করছেন সিরিয়ার সশস্ত্র বিরোধী গোষ্ঠী।

জানা যায়, বাথ শাসনের অধীনে ৫০ বছরের দমন এবং ১৩ বছরের অপরাধ, নিপীড়ন ও স্থানচ্যুতির পর, দীর্ঘ সংগ্রামের মাধ্যমে বিভিন্ন দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করে আজ ৮ ডিসেম্বর সেই অন্ধকার যুগের সমাপ্তি ঘটিয়েছেন বিদ্রোহীরা। এরপর তারা সিরিয়ার জন্য নতুন যুগের সূচনা ঘোষণা করেন।

হোমস শহরে সরকারি বাহিনীর পতন ও সেনা প্রত্যাহারের পর হাজারো মানুষ রাস্তায় নেমে এসে নেচে-গেয়ে উল্লাস প্রকাশ করে। তারা বলতে থাকেন, আসাদ চলে গেছে, হোমস এখন মুক্ত এবং সিরিয়া দীর্ঘজীবী হোক। বাশার আল-আসাদ নিপাত যাক।

বিদ্রোহীরা আকাশে গুলি ছুঁড়ে উদযাপন করে। তরুণ-তরুণীরা সিরিয়ার প্রেসিডেন্টের পোস্টার ছিঁড়তে থাকে। এসময় দামেস্কের সেদনায়া কারাগার থেকে সাড়ে তিন হাজারের বেশি বন্দীকে মুক্তি দেওয়া হয়।