অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল। বুধবার (২৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর হেয়ার রোডে প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনায় এ বৈঠক হয়।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাউদ্দিন আহমেদ। তবে দলটির স্থায়ী কমিটির অপর সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু সিরাজগঞ্জ থাকায় বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারেননি।
বৈঠক থেকে বেরিয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, দেশের চলমান উদ্ভূত পরিস্থিতিতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দেখা করে কথা বলেছি। বিশেষ করে গত কয়েকদিন ধরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও কয়েকটি কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনায় আমরা আমাদের দলের পক্ষে উদ্বেগ জানিয়েছি।
আমরা আাশা করেছি, প্রধান উপদেষ্টা তার পরিষদ নিয়ে দ্রুত এসব বিষয়ে শান্তিপূর্ণ সমাধান করবেন। দেশে যেন কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয়। বিশেষ করে বিভাগের পরিস্থিতি। এই মুহূর্তে আমাদের সবচেয়ে বড় প্রয়োজন হচ্ছে জাতীয় ঐক্য। আমাদের সামনে অনেকগুলো চ্যালেঞ্জ রয়েছে। সেই চ্যালেঞ্জগুলোকে মোকাবিলা করার জন্য, যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে দাঁড়ায়, যারা এর স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করতে চায়, তাদের প্রতিরোধ বা প্রতিহত করার জন্য আমাদের অবশ্যই একটা জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।
তিনি বলেন, একইসঙ্গে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে জনগণের দুর্ভোগ হচ্ছে। আমরা বলেছি টিসিবির ট্রাক বৃদ্ধির কথা বলেছি। কৃষিতে সার বিতরণের যে সমস্যা আছে সেগুলো নিরসনের কথা বলেছি। এখনো ফ্যাসিবাদের দোসররা নিয়ন্ত্রণ করছে। সেজন্য জনগণের পক্ষে যারা আছেন তাদের নিয়ে আসার কথা বলেছি যাতে বিষয়টি সহজ ব্যবস্থা করার জন্য অনুরোধ করেছি।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, শিল্পে উৎপাদনের জন্য স্বাভাবিক অবস্থা যেন থাকে সেজন্য বলেছি। শ্রমিকরা যাতে বেতন পান সেটা বলেছি। প্রয়োজনে ঋণ দেওয়ার কথা বলেছি। একইসঙ্গে এখনো যেসব ইউনিয়ন পরিষদ বহাল আছে সেগুলো ভেঙে দেওয়ার কথা বলেছি। বেশিরভাগই ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে জবরদস্তির নির্বাচনে হয়েছে। যেহেতু সিটি করপোরেশন, উপজেলা ও পৌরসভা ভেঙে দেওয়া হয়েছে সেজন্য ইউনিয়ন পরিষদও ভেঙে দিতে বলেছি। পরে নির্বাচনের মাধ্যমে গঠনের কথা বলেছি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ট্রেড বডি ও ইউনিয়নসমূহ পুনরায় নির্বাচনের মাধ্যমে সুষ্ঠুভাবে গঠনের কথা বলেছি। সামগ্রিকভাবে সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে জাতীয় ঐক্য তৈরির কথা বলেছি। পাশাপাশি সংস্কারগুলো সম্পন্ন করে যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনের রোডম্যাপ দেওয়ার কথা বলেছি। তাছাড়া বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে আমাদের বিরুদ্ধে যেসব মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছিল সেগুলো প্রত্যাহারের কথা বলেছি। প্রধান উপদেষ্টাসহ অন্য উপদেষ্টারা আমাদের কথা মনোযোগ সহকারে শুনেছেন।