মাথাব্যথা বা শরীরে কোনো ধরনের ব্যথা হলে অনেকেই ঘন ঘন পেইন কিলার খান। কিছু ক্ষেত্রে, আপনি অসুস্থ হতে পারেন এবং ডাক্তার-নির্ধারিত ব্যথানাশক ওষুধের ডোজ গ্রহণ করতে হতে পারে। যাই হোক না কেন, এটি মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে পেইন কিলার সেবনের কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে, যা আপনার কিডনির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্যথানাশক ওষুধের দীর্ঘস্থায়ী অত্যধিক ব্যবহার কিডনি ফেইলিওর বা দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগের কারণ হতে পারে।
কিডনি প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন নামক একটি রাসায়নিক তৈরি করে যা কিডনিকে রক্ষা করতে ব্যবহৃত হয়। এটি এমন একটি হরমোন যা রক্ত জমাট বাঁধতে এবং অন্যান্য বিভিন্ন কাজে সাহায্য করে। আপনি যত বেশি ব্যথানাশক ব্যবহার করবেন, এই প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিনগুলো তত কমতে শুরু করবে এবং এটি প্রতিরক্ষামূলক শক্তি হ্রাস করবে। এরপর কিডনির প্রক্রিয়া কিডনি রোগের দিকে নিয়ে যায়। আপনার যদি পেইন কিলার খাওয়ার প্রয়োজন হয় তাহলে তার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া কাটানোর জন্য খাবার ও লাইফস্টাইলে কিছু পরিবর্তন আনতে হবে-
১. পানি পানের পরিমাণ বৃদ্ধি করুন
আপনি যখন ব্যথানাশক ওষুধ সেবন করেন, তখন পানি পানের পরিমাণ বৃদ্ধি করলে তা কিডনিকে রক্ষা করতে সাহায্য করতে পারে। সারাদিন প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন, যদি না অতিরিক্ত পানি পানে আপনার কোনো নিষেধ না থাকে।
২. ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন গ্রহণ বাড়ান
বেশিরভাগ ব্যথানাশক আপনার শরীর থেকে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ভিটামিন ডি ক্ষয় করে দেয়। ডাক্তারের পরামর্শের ভিত্তিতে পরিপূরক বা খাবারের মাধ্যমে সেই প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুলো ডায়েটে ফিরিয়ে আনা গুরুত্বপূর্ণ।
৩. ধূমপান বা অ্যালকোহল পান করবেন না
ধূমপান এবং অ্যালকোহল পান করা বন্ধ করা গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে যখন আপনি ব্যথানাশক খান, কারণ এটি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াকে আরও খারাপ করতে পারে।
৪. বাদাম এবং সবজি খান
শাকসবজি সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণ করুন, বিশেষ করে সবুজ শাক সবজি। প্রচুর বাদাম খান কারণ যখন ব্যথানাশক ওষুধ খাচ্ছেন তখন স্বাস্থ্যকর চর্বি আপনার কিডনিকে রক্ষা করতেও সাহায্য করবে।
৫. পরিমিত প্রোটিন গ্রহণ
প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খান। মাঝারি পরিমাণ প্রোটিন গ্রহণ করা ভালো। অত্যধিক প্রোটিন কিডনির ওপর চাপ দিতে পারে। এক নাগাড়ে ব্যথানাশক ওষুধ খেলে মাঝারি প্রোটিন গ্রহণ চালিয়ে যান।
৬. পর্যাপ্ত ঘুম
অসুস্থতা থেকে মুক্তির পাশাপাশি কিডনি সুরক্ষার জন্য ঘুম অপরিহার্য। পেইন কিলার খেলে গভীরভাবে ঘুমানো নিশ্চিত করুন। কারণ যখন আমরা ঘুমাই তখন শরীর তার প্রাকৃতিক মেরামত এবং ডিটক্সিফিকেশন প্রোটোকলের মধ্য দিয়ে যায়।
৭. স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণ করুন
মানসিক চাপ এড়িয়ে চলুন এবং শান্ত হওয়ার চেষ্টা করুন। যদি চাপ অনুভব করেন তবে আপনার মন এবং শরীরকে শিথিল করার চেষ্টা করুন। আপনার সামগ্রিক শিথিলতা সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের বোঝা সরিয়ে দেয়।
যদি ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়ার প্রয়োজন হয় তবে নিশ্চিত হয়ে নিন যে সঠিক খাবার খাচ্ছেন এবং সঠিকভাবে জীবনযাপন পরিবর্তন করছেন। ব্যথানাশক ওষুধের অপব্যবহার করবেন না এবং ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন এবং নির্দেশনা অনুযায়ী গ্রহণ করবেন