বিভেদ সৃষ্টি না করে নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে

বিতর্কিত বক্তব্য দিয়ে অভ্যুত্থানের শক্তির মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি না করে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত প্রয়োজনীয় সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা দেওয়ার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)।

শুক্রবার (৮ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন।

বাসদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন বাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারী সাধারণ সম্পাদক কমরেড রাজেকুজ্জামান রতন, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নিখিল দাস ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য জুলফিকার আলী।

সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন বাসদের প্রতিষ্ঠা আহ্বায়ক ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক বর্তমান উপদেষ্টা খালেকুজ্জামান, বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রওশন আরা রুশো।

নেতারা বলেন, গত জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে ১৫ বছরের দুঃশাসনের বিপরীতে একটা গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠা, দ্রব্যমূল্য ও দুর্নীতির অবসান, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে। আজ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তিন মাস পূর্তি হচ্ছে। কিন্তু এখনো নিত্যপণ্যের বাজার ঊর্ধ্বমুখী। সিন্ডিকেট বহাল তবিয়তে আছে। জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি। চুরি, ছিনতাই, ডাকাতিসহ মব কিলিং বন্ধ হয়নি। ফ্যাসিস্ট হাসিনা আমলের মতোই মজুরি চাইতে গিয়ে গুলি খেয়ে শ্রমিকদের নিহত হতে হচ্ছে। অথচ ২৪’ এর গণঅভ্যুত্থানে শ্রমিকরা অকাতরে জীবন দিয়েছে।

তারা আরও বলেন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার এই অঙ্গীকার বুকে ধারণ করে ৩০ লাখ শহীদি আত্মদান ও ২ লাখ মা-বোনের লাঞ্ছনার বিনিময়ে দেশ স্বাধীন হলেও গত ৫২ বছরে শাসক গোষ্ঠী মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিপরীতে দেশ শাসন করায় মানুষের মুক্তি আসেনি। মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সহযোগী রাজাকার-আলবদর পরাজিত হলেও গত ৫২ বছরের ধনিক বুর্জোয়া শাসকগোষ্ঠী সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীগুলোকে মদদ দিয়েছে। স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রের আকাঙ্ক্ষা নিয়ে ১৯৯০ সালের সামরিক শাসনবিরোধী গণঅভ্যুত্থান এবং ২০২৪ সালে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভ্যুত্থান মুক্তিযুদ্ধের অপূরিত স্বপ্নকে বাস্তবায়নের জন্য আবারও ঊর্ধ্বে তুলে ধরেছে। অহেতুক বিতর্কিত বক্তব্য দিয়ে অভ্যুত্থানের শক্তির মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি না করে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত প্রয়োজনীয় সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে।