ঠাকুরগাঁওয়ে করোনা রোগীদের সহায়তায় ‘টাঙ্গন নদীর পাড়ে শ্বাস নিতে চাই একসাথে’

ঠাকুরগাঁও শহরের কিছু যুবক উদ্যোগী হয়ে কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবেলায় এলাকার সদর হাসাপাতালে মেডিকেল সরঞ্জামাদি দান করার লক্ষ্যে ‘টাঙ্গন নদীর পাড়ে শ্বাস নিতে চাই একসাথে’ নামে একটি প্রজেক্ট হাতে নিয়েছে।

করোনাভাইরাস পৃথিবীব্যাপী মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ায় পৃথিবীর সব দেশেই স্বাস্থ্য সেবা ভেংগে পড়ছে। বাংলাদেশও তার ব্যাতিক্রম নয়।

কোভিড রোগিদের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত অক্সিজেন৷ ঠিক মত অক্সিজেন থেরাপি দিতে পারলেই বেশীর ভাগ রোগী সুস্থ হয়ে যায়। এই দিকে দেশে ব্যাপক চাহিদার কারণে অক্সিজেন সিলিন্ডার থেকে শুরু করে করোনা চিকিৎসার বেশীর ভাগ যন্ত্রপাতির দাম বেড়ে যায়।

এলাকার সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে সরকারের পাশাপাশি দেশের ক্রাইসিসে তারা সদর হাসপাতালের সেবাকে আরোও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে শহরের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহবান জানায়।

সেই লক্ষ্যে গত ১৫ জুলাই তারা ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ এম এন আজিজ চপলের নিকট ১০০ নন রি-ব্রিদার মাস্ক দান করে। যা দিয়ে হয়ত শ্বাসকষ্টে ভুগছেন এমন ১০০ কোভিড ও নন-কোভিড রোগির চিকিৎসা দেওয়া যাবে। তাদের প্রজেক্টের উদ্যেশ্য ছিল যাতে অক্সিজেনের অভাবে কোন কোভিড ও নন কোভিড রোগি মারা না যায়।

অন্যদিকে অক্সিজেন সরবরাহকারী যন্ত্রপাতির গুলো দাম অনেক বেশী হওয়ায় তাদের অর্থ সংগ্রহে বেশ বেগ পেতে হয়। তাদের এই মহতী উদ্যোগে এগিয়ে আসে ইমপ্রেস গ্রুপ। তারা এই প্রজেক্টে একটি ১০ লিটার অক্সিজনে কনসেন্ট্রেটর প্রদান করে। যা দিয়ে কনপক্ষে পাঁচ জন রোগীকে ২৪ ঘণ্টা নিরবিচ্ছিন্ন অক্সিজেন সরবরাহ করা যাবে। ২১ জুলাই তারা আবার সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ এম এন আজিজ চপলের নিকট এটি হস্তান্তর করেন।

এই সময়ে আরও উপস্থিত ছিলেন মেডিসিন কনসালটেন্ট ডাঃ আলি আফজাল, সিনিয়র কনসালটেন্ট ডাঃ শাহজাহান নেওয়াজ, দন্ত বিশেষজ্ঞ ডাঃ তপন কুমার। তারা সবাই তরুণদের এই কাজের অনেক প্রশংসা করেন।

এছাড়াও শহরের অনেক গুণীজন, শিক্ষক, রাজনৈতিক নেতারা তাদের কাজের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। এই প্রজেক্টের সাথে সংশ্লিষ্ট সবাই ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক ও বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্রছাত্রী।

এরপর যা সবথেকে বেশি জরুরি তা হচ্ছে পর্যাপ্ত হাই ফ্লো নাসাল ক্যানুলা এবং আইসিইউ। হাই ফ্লো নাসাল ক্যানুলা এমন একটি মেশিন যা দিয়ে মিনিটে ৭০ লিটার অক্সিজেন সরবরাহ করা যায় । এ লক্ষ্যে তারা কাজ করে যাচ্ছে্ , ‌এজন্য বহু টাকা প্রয়োজন। সমাজের উত্তবিত্তরা এ কাজে এগিয়ে আসলে করোনা মহামারীতে বেঁচে যাবে অনেক জীবন ।