মধুপুরে আ’লীগ নেতার প্রভাবে বেদখল হওয়া বাড়ি উদ্ধারে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন মাদরাসা উপাধ্যক্ষ

আলকামা সিকদার, টাঙ্গাইল :

দুই দশকের বেশি সময় আগে জমি ক্রয় করে সাব কওলা দলিল মূলে জমি বুঝে নিয়ে তাতে বাড়ি করে বসবাস করছিলেন আনিছুর রহমান নামের এক মাদরাসার উপাধ্যক্ষ।

বাড়ি করা ওই জমির রেকর্ড, মাঠ পচড়া, প্রিন্ট পচড়া, নামজারি, খাজনা রসিদ, বাড়ির হোল্ডিং নম্বর এমনকি বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগের মিটার পর্যন্ত আনিসুর রহমানের নাম। অথচ নিজেদের মালিকানা দাবি করে বাড়ি বেদখল করেছেন জমি দাতা প্রয়াত সাইদুর রহমান সাইদের ভাই আবুল হোসেন ও তার ছেলে রবিউল ইসলামসহ মেয়েরা।

পতিত আওয়ামী সরকার দলের স্থানীয় প্রভাবশালী এক নেতার প্রভাব খাটিয়ে গত ২০২১ সালে ছেলে মেয়েদের সাথে নিয়ে বাড়ি দখলে নিয়েছেন ওই আবুল হোসেন। ওই নেতার প্রভাবে ভুক্তভোগী থানায় মামলা পর্যন্ত করতে পারেনননি। দখলদার আবুল হোসেন সম্প্রতি প্রয়াত হয়েছেন। দখল করা বাড়িতে গত দুই বছর ধরে প্রয়াত আবুল হোসেনের জামাতা বসবাস করছেন।

সরকার পতনের পর উপাধ্যক্ষ নিজ বাড়ি ফিরে পেতে দ্বারে দ্বারে ঘুরে সর্বশেষ পৌর প্রশাসক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরারবর আবেদন দিয়ে সহায়তা প্রত্যাশা করছেন।

ভুক্তভোগী ওই উপাধ্যক্ষ আনিছুর রহমান মধুপুর পৌর শহরের উত্তরা আবাসিক এলাকার কাজী
পাড়ার বাসিন্দা। তিনি জানান, ২০০২ সনে সাইদুর রহমান (সাইদ) তার কাছে পৌনে তিন শতাংশ জমি
বিক্রি করে। সাব কওলা মূলে জমি নিয়ে তিনি একই সময়ে বাড়ি নির্মাণ করে ছেলেকে দেন। ছেলের পরিবার দুই দশক ওই বাসাতে বসবাস করেছে। হঠাৎ ২০২১ সালে জমি দাতার ভাই স্থানীয় আবুল হোসেন নামের এক ব্যক্তি দুই দশক পর সাবেক পৌর মেয়র প্রভাবশালী সিদ্দিক হোসেন খানের প্রভাব খাটিয়ে হঠাৎ বাড়ি দখল করে নেন।

স্থানীয়রা জানান, এর আগেও আবুল হোসেন ও তার সন্তানরা এই জমির মালিকানা দাবি করায় সৃষ্ট পরিস্থিতিতে দালিলিক প্রমাণাদির প্রেক্ষিতে আবুল হোসেনের জামির সাথে এ জমির দাগের ও অবস্থানের ভিন্নতা পাওয়া যায়। একাধিক শালিসী বৈঠকের পর জমির দাতা আবু সাইদ ওই জমির মালিক নিশ্চিত হয়েই আনিছুর রহমানের কাছে হস্তান্তর করেছেন।

দুই ভাইয়ের বিরোধপূর্ণ জমির নিস্পত্তির জন্য পৌরসভার এক বৈঠকে বিশিষ্ট ব্যক্তি বর্গের উপস্থিতিতে একটি নাদাবী দলিল হয়। নিজ নিজ অংশে তারা অবস্থান করবেন মর্মে স্বাক্ষর করেন তারা। বিষয়টি মীমাংসিত হয়ে ছিল। কিন্তু আবু সাইদ মারা যাওয়ার পর আবুল হোসেন উক্ত স্বাক্ষরিত দলিল অস্বীকার করেন। আনিছুর রহামনের কেনা জমির উপর নির্মিত বাড়িতে হামলে পড়ে দখলে নিয়েছেন।

সাবেক কলেজ শিক্ষক প্রতিবেশী হাবিবুর রহমান লেবু জানান, আনিছুর রহমানের পৌনে তিন শাতাংশ জমি ও জমির উপর বাড়ির মালিকানা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। বিষয়টি মীমাংসিত তবুও তৎকালীন প্রভাবশালী মেয়র সিদ্দিক খানের প্রভাবে অন্যায়ভাবে জমি ও বাড়ি দখল হয়েছে। আনিছুর রহমান ফাউন্ডেশন দিয়ে বাসা করার প্রস্তুতি নেয়ার সময় খালি বাড়ি দখলের এ ঘটনা ঘটেছে।

ওই বাড়ি দখলে থাকা আবুল হোসেনের জামাতা মোহাররম আলী জানান, তিনি বগুড়ার মানুষ।
শশুরের সূত্রে তিনি এ বাড়িতে গত দুই আড়াই বছর যাবৎ বসবাস করছেন।

মধুপুর পৌরসভা সূত্র জানিয়েছে, বাড়ি দখলের অভিযোগে একটি লিখিত পাওয়া গেছে। প্রক্রিয়া শেষে উভয় পক্ষ কে নোটিশ দেয়া হবে।