রিয়াজ উদ্দিন
ট্রাকে ঢেউটিন বুকিং নিয়ে যথাযথ স্থানে পৌঁছে দেওয়ার বদলে আত্মসাৎ করার অভিযোগে মামলার তদন্ত পাওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই রহস্য উদঘাটন করেছে চট্টগ্রাম পিবিআই। এসময় অভিযুক্ত আসামীকে গ্রেফতার করে খুলনা থেকে ঢেউটিন এবং যশোরের বেনাপোল থেকে কাভার্ড ভ্যান উদ্ধার করা হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, মোঃ রুবেল হাওলাদার এম. আলম ট্রান্সপোর্ট এজেন্সীর ম্যানেজার হিসাবে কর্মরত আছে। এম, আলম ট্রান্সপোর্ট এজেন্সী বিভিন্ন বোকারের মাধ্যমে ট্রাক সংগ্রহ করে বিভিন্ন কোম্পানির, ব্যক্তিগত মালামাল কমিশনের বিনিময়ে পরিবহন সেবা দিয়ে থাকে। ১০ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২টার সময় সীতাকুন্ড থানাধীন বড় কুমিরা এলাকার কর্ণফুলী ষ্টীল মিলস্ লিঃ নামক ঢেউটিন ফ্যাক্টরী হতে বরিশাল সদরে যাওয়ার উদ্দেশ্যে একটি ট্রাক বুকিং এর আবেদন বাদীদের কাছে আসে। বাদী মোঃ ইমরান একটি ট্রাক ২৪,০০০/- টাকায় ভাড়া করে। বাদীকে ইমরান ট্রাক ড্রাইভার এমদাদ এর মোবাইল নম্বর এবং গাড়ি নম্বর দেয়। ট্রাকটি কর্ণফুলী স্টীল মিলস্ লিঃ পৌঁছলে মাল লোড হওয়ার পর বাদীর ট্রান্সপোর্ট এর প্রতিনিধি মোঃ সাগর ড্রাইভারকে ভাড়া বাবদ নগদ চব্বিশ হাজার টাকা দেয়। পরবর্তীতে বর্ণিত ট্রাক ড্রাইভার বাদীর বুকিংকৃত মালামালসহ বরিশালের উদ্দেশ্যে গত ১০ সেপ্টেম্বর রাত পৌনে ১২টার সময় রওয়ানা হয়।
পরদিন বরিশালের শরীফ এন্ড সন্স এর লোকজন বাদীর ট্রান্সপোর্টকে ফোন করে জানায় তাদের বুকিংকৃত মালামাল ঢেউটিন নিয়ে ট্রাক ড্রাইভার পৌঁছায়নি। বাদী তাৎক্ষণিক ট্রাক ড্রাইভারের মোবাইলে ফোন করলে নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় ট্রাক চালক এমদাদ তার সহযোগী অজ্ঞাতনামা আসামীদের সহযোগিতায় বাদীর সাথে প্রতারণা করে পঁচিশ লক্ষ টাকার মালামাল (ঢেউটিন) আত্মত্মসাৎ করেছে মর্মে সীতাকুন্ড থানায় এজাহার দায়ের করা হয়।
এছাড়াও সীতাকুন্ড থানাধীন বড় কুমিরা এলাকার কর্নফুলী স্ট্রীল মিল লিঃ ঢেউটিন ফ্যাক্টরী হতে ২৫ লক্ষ টাকার ঢেউটিন ট্রাকযোগে বরিশাল সদরে পৌঁছে দেওয়ার চুক্তি ভঙ্গ করায় ক্ষতিগ্রস্থ বাদী রুবেল হাওলাদার পেনাল কোডের ৪২০/৪০৬ ধারায় চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুন্ড থানার আলোচিত প্রতারনা মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘদিন মামলাটির রহস্য উদ্ঘাটন, আলামত উদ্ধার ও আসামী গ্রেফতার না হওয়ায় বাদী নিরুপায় হইয়ে চট্টগ্রাম জেলা পিবিআই কার্যালয়ে পুলিশ সুপারের বরাবর লিখিত আবেদন করেন। আবেদনের পরে নড়েচড়ে বসেন পিবিআই। তাৎক্ষণিকভাবে পিবিআই বিধি অনুযায়ী মামলাটি থানা থেকে পিবিআই কর্তৃক তদন্ত গ্রহনের জন্য অনুমতি গ্রহন সাপেক্ষে তদন্ত তৎপরতা শুরু করেন।
এরপর পিবিআই চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ের একটি চৌকস টিম এসআই শাহাদাত হোসেনের নেতৃত্বে আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মাদারিপুর থানা এলাকা থেকে ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত মূল আসামী সবুজ ফকিরকে গ্রেফতারের পর তার দেওয়া তথ্য মতে কেএমপি খুলনার আড়ংঘাটা থানা এলাকা হতে লুণ্ঠিত ২৫ লক্ষ টাকার আলামত ঢেউটিন এবং যশোর জেলার বেনাপোল থানা এলাকা হতে মালামাল পরিবহনে ব্যবহৃত কর্ভার্ড ভ্যান উদ্ধার করা হয়। পিবিআই চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ের এই ধরনের তদন্ত দক্ষতা জেলাব্যাপী ব্যাপক প্রশংসায় প্রশংসিত হয়েছে। জানা যায়, বর্তমান পুলিশ সুপার যোগদানের পরে জেলায় কর্মতৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে।