বাংলাদেশের তরুণদের কাছে যুক্তরাষ্ট্র স্বপ্নের দেশ হলেও এবার মার্কিন এক নারী প্রেমের টানে বাংলাদেশে এসেছেন। প্রেমের টানে ফেনীর সোনাগাজীতে এসে জামশেদ আলম রাজুকে (২৫) বিয়ে করেছেন আমেরিকান বংশোদ্ভূত নারী সেন্ডোরা ব্রোক্স (৫৫)। তিনি আমেরিকার ভার্জিনিয়া শহরের বাসিন্দা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক থেকে তাদের পরিচয় বলে জানা গেছে।
২০১৮ সালে ফেসবুকে পরিচয়ের পর থেকে রাজু ও সেন্ডোরার সম্পর্ক গভীর হতে থাকে। একপর্যায়ে তারা বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। শনিবার বাংলাদেশে এসে সোমবার (৩ জুন) বিয়ে করেন তিনি। এসময় নব দম্পতিকে একনজর দেখতে বিয়ের অনুষ্ঠানস্থলে ভিড় করে উৎসুক জনতা। এমন বিয়ে দেখে খুশি এলাকাবাসী ও স্বজনরা।
জামশেদ আলম রাজু ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের পূর্ব সফরপুর গ্রামের মৃত রুহুল আমিনের ছেলে। তিনি চার ভাই, এক বোনের মধ্যে সবার ছোট। তিনি গ্রামে ব্যবসা করেন। আর সেন্ডোরা ব্রোক্স আমেরিকার ভার্জিনিয়া শহরের বাসিন্দা।
জামশেদ আলম রাজু জানান, ২০১৮ সালের মাঝামাঝি সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তাদের চেনা-পরিচয় ও বন্ধুত্ব হয়। এরপর ধীরে ধীরে ভালো লাগা থেকে গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। একপর্যায়ে দুজনে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১ জুন আমেরিকা থেকে বাংলাদেশে আসেন সেন্ডোরা ব্রোক্স। সে আমাকে ভালোবেসে এখানে এসেছে। সুখে-দুখে আমরা দুজন পৃথক না হয়ে একসঙ্গে থাকতে চাই বলে অঙ্গীকার করেছি। এজন্য সকলের দোয়া প্রার্থনা করি। আর সেন্ডোরা ব্রোক্স বলেন, আমি ভালো আছি, আমার ভালো লাগছে।
ফেনী শহরের শহীদ শহীদুল্লাহ কায়সার সড়কস্থ অভিজাত রেস্টুরেন্টে সোমবার দুপুরে পারিবারিকভাবে বিয়ে সম্পন্ন হয় এই দম্পতির। ইসলাম ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী জামশেদ আলম রাজুর সঙ্গে বিয়ের আগে সেন্ডোরা ব্রোক্স খ্রিস্টান ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন বলে জানান তিনি। মুসলিম হওয়ার পর তার বর্তমান নাম লামিয়া। দুজনে আদালতে হাজির হয়ে হলফনামা দিলে ফেনীর চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অপরাজিতা দাশ তা মঞ্জুর করেন।
ফেনী জেলা জজ কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ আবুল হোসেন জানান, কনে আমেরিকা থেকে এসে প্রথমে মুসলিম ধর্ম গ্রহণ করেন। সোমবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে বিবাহ সম্পন্ন হয়। দশ লক্ষ টাকা দেন মোহরে এক লক্ষ টাকা উসুলে মুসলিম আইনে তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। এদেশের একজন ছেলের সাখে আমেরিকান একজন উচ্চ শিক্ষিত পেশাজীবী মানুষের বিয়ে হয়েছে। দুজন প্রাপ্তবয়স্ক শিক্ষিত এবং সচেতন। আগামী দিনে তাদের দাম্পত্য জীবন সুখী, সুন্দর হোক। এই বিয়েতে আইনজীবী হিসেবে থাকতে পেরে ভালো লাগছে।