নাটকীয় মোড় নিয়ে নৌকায় উঠলেন মোতালেব

বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিবেদক: পটুয়াখালী-২(বাউফল) আসনে নাটকীয় মোড় নিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক পদ থেকে অব্যাহতি প্রাপ্ত আ.লীগ নেতা আবদুল মোতালেব হাওলাদার। দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় এমপি ও নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আ.স.ম ফিরোজের প্রকাশ্য বিরোধিতা করলেও নির্বাচনের আর ১২দিন বাকি থাকতে নৌকার পক্ষে গণসংযোগ ও মিছিল করেছেন মোতালেব হাওলাদার। সোমবার বিকেল সাড় ৪টার দিকে উপজেলার বগা ইউনিয়নের বগা বন্দরে কয়েকশত অনুসারী নিয়ে এ গণসংযোগ ও মিছিল বের করেন তিনি।

তবে দীর্ঘদিন ধরে আ.স.ম ফিরোজের বিরোধিতা করা সত্বেও নির্বাচনের কয়েকদিন আগে নৌকার পক্ষে মাঠে নামাকে নতুন ষড়যন্ত্র হিসেবে বিবেচনা করছেন আ.স.ম ফিরোজ অনুসারীরা। এমপি অনুসারীরা মনে করছেন, কৌশলগত ভাবে নৌকার পক্ষে মাঠে নেমেছেন মোতালেব হাওলাদার। নৌকার ভোট নষ্ট করতে তিনি নতুনভাবে ষড়যন্ত্র করে মাঠে নেমেছেন।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, পটুয়াখালী-১ (বাউফল) আসনে স্থানীয় এমপি ও উপজেলা চেয়ারম্যানের মধ্যে বিরোধ চলছে। গত দুই বছর ধরে প্রকাশ্য এমপি বিরোধী অবস্থান উপজেলা চেয়ারম্যান। এ নিয়ে দুপক্ষের অনুসারীদের মধ্যে সংঘাতের ঘটনাও ঘটেছে। উপজেলা চেয়ারম্যান নিজেও আহত হয়েছেন। অনুষ্ঠেয় দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আ.স.ম তীব্র বিরোধিতা করে নৌকা মনোনয়নও প্রত্যাশী ছিলেন মোতালেব হাওলাদার। তবে দশ বারের মত মনোনয়ন পান আ.স.ম ফিরোজ। মনোনয়ন বঞ্চিত উপজেলা চেয়ারম্যান মোতালেব, পৌর মেয়র জিয়াউল হক ও মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ভাইস-চেয়ারম্যান এস.এম ফিরোজহ আলমসহ এমপি বিরোধীরা মনোনয়ন বঞ্চিত হাসিব আলমকে সমর্থন দিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী করেন। তবে ১৭ তারিখ নৌকার বিপক্ষে নির্বাচন করবেন না জানিয়ে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন হাসিব আলম। এরপর থেকে এমপি বিরোধীরা নিরব অবস্থান নিলেও উপজেলা চেয়ারম্যানের ছেলে ও জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বগা ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদ হাসান ও তার অনুসারীরা বগা ইউনিয়নে নৌকা বিরোধী অবস্থান নেন। শুক্রবার রাতে জেলা যুবলীগের সাবেক সদস্য ও বগা ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি রেজাউল করিম খানসহ ৬/৭ নৌকার সমর্থকের ওপর গুলি করে হামলা চালায়। কুপিয়ে ও গুলি করে রেজাউলের দুই পা ভেঙে দেয়।

এ ঘটনার দুই দিন পার না হতেই নৌকায় ভোট চেয়ে মিছিল করেন উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব হাওলাদার। যা নিয়ে পটুয়াখালী-২ আসনে নৌকার নির্বাচনে নতুন সমীরকণ দেখা দিয়েছে।

দলীয় একটি সূত্র জানায়, উপজেলা চেয়ারম্যান মোতালেব হাওলাদার সম্প্রতি বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য মুক্তি চেয়ে দলীয় তোপের মুখে পড়েন। এতে জেলা আওয়ামী লীগ মোতালেব হাওলাদারকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে অব্যাহতি দেন। এদিকে এমপির সাথেও তার প্রকাশ্য বিরোধ চলছে। এ জাতীয় নির্বাচনের পরই উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। যার কারণে এমপির সাথে বিরোধ মিটিয়ে উপজেলা নির্বাচনে নিজের অবস্থান শক্ত করতে আ.স.ম ফিরোজের নৌকার পক্ষে নেমেছেন। তবে এখন পর্যন্ত তার ছেলে বগা ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদ হাসান নৌকার পক্ষে প্রকাশ্যে আসেননি।

উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব হাওলাদার বলেন, দলীয় মনোনয়ন চেয়েছি। দল তাকে (আ.স.ম ফিরোজ) মনোনয়ন দিয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করতে দলীয় কোনো বাঁধা না থাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হাসিব আলমকে সমর্থন দিয়েছিলাম। তিনি (হাসিব আলম) মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। এখন কোনো প্রার্থী নেই, আর যেহেতু আমি আওয়ামী লীগ করি, তাই নৌকার পক্ষে নেমেছি।