এস এম সাইফুল ইসলাম কবির: মরু অঞ্চলের সুস্বাদু ও মিষ্টি জাতের ফল সাম্মাম। বর্তমানে বাগেরহাটের ফকিরহাটে এই ফলের চাষ শুরু করেছে কৃষকরা।
উপজেলার বেতাগা ইউনিয়নের মাসকাটা-ধনপোতা মৎস্য ঘেরের উপর মাচায় ধরেছে সাম্মাম। সবুজ থেকে হলুদ বর্ণ ধারণ করছে ফলগুলো। প্রায় প্রতিটি গাছে দুই থেকে তিনটি করে ফল ধরেছে। পলিথিন দিয়ে ঢাকা, ফাঁকে ফাঁকে পুরো খেত ফলে ভরে রয়েছে।
বেতাগার কৃষক রবিউল ইসলাম জানান, উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে এই চাষ শুরু করেন তিনি। নিজ ঘেরে জাল দিয়ে মাচা করে প্রথম পর্যায়ে সাম্মাম চাষ শুরু করেন। গত দুই মাস আগে এই ফলের চাষ করে তিনি ইতিমধ্যে প্রায় ২৫হাজার টাকার ফল বিক্রি করেছেন। কম খরচে সাম্মাম চাষ করে লাভের আশা দেখছেন তিনি।
কৃষক শেখ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, পরীক্ষামূলকভাবে তিনি ঘেরের পাড়ে সাম্মাম চাষ শুরু করেন। মৎস্য চাষ ও সবজি চাষের পাশাপাশি তিনি সাম্মাম ফলের চাষ করছেন। এসএসিপি এর প্রকল্পের আওতায় উপজেলা কৃষি অফিসের সার্বিক সহযোগিতায় এই ফলের চাষ করে লাভবান হবেন বলে জানান। ওই ফলের বাজার মূল্যে অনেক বেশি এবং চাষ লাভজনক হওয়ায় তিনি ঘেরের উপর মাচা করে সাম্মাম চাষ করেছেন।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার মন্ডল ও সোলাইমান আলী মন্ডল জানান, মধ্যপ্রাচ্যের মরুভূমি অঞ্চলের হলেও বাগেরহাটের ফকিরহাটে মাটি সাম্মাম ফল চাষের উপযোগী। সাম্মাম ফলের চারা রোপণের দুই থেকে আড়াই মাসের মধ্যে ফল পাকা শুরু হয়। সাম্মাম মূলত বেলে-দোয়াশ মাটিতে চাষ ভাল হয়। ফকিরহাটের অনেক অঞ্চলের মাটি সাম্মাম চাষের জন্য উপযোগী। অনেকে ঘেরের উপর মাচা করে সাম্মাম চাষ শুরু করেছেন। গাছের গোড়ার অংশের মাটি এক ধরনের পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখতে হয়। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে এসব কৃষকদের সার্বিক সহযোগিতার পাশাপাশি নানাভাবে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এছাড়া যে সকল ফলের চাহিদা বেশি সেই সব ফল চাষের জন্য কৃষকদেরকে নানাভাবে উৎসাহিত করা হচ্ছে। প্রযুক্তিগত সহায়তার পাশাপাশি তাদেরকে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে।
ফকিরহাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শেখ শাখাওয়াত হোসেন বলেন, এসএসিপি এর আওতায় ফকিরহাটে পরীক্ষামুলকভাবে এই ফলের চাষ শুরু করেছে কৃষকরা। তিনি আরো জানান সাম্মামের চারা রোপণ করার পর এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে গাছে ফুল ও ফল আসে। আর সব মিলিয়ে আড়াই মাসের মধ্যে ফল তোলা যায়। এই ফলের চাষ করে লোকসানের আশঙ্কা নেই। সাম্মাম চাষে কেউ আগ্রহী হলে কৃষি অধিদপ্তর থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।