চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত

এম এ মতিন, চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। রোববার ২৪ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের একটি বিজ্ঞপ্তিতে বিলুপ্তির ঘোষণা দেওয়া হয়।

ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের জরুরি সিদ্ধান্ত মোতাবেক জানানো যাচ্ছে, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার বর্তমান কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হলো।

২০১৯ সালের ১৪ জুলাই শাখা ছাত্রলীগের দুই সদস্যের কমিটি গঠন করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। কমিটিতে পরিসংখ্যান বিভাগের ২০০৬-০৭ সেশনের শিক্ষার্থী রেজাউল হক রুবেলকে সভাপতি করা হয়। মার্কেটিং বিভাগের ২০১০-১১ সেশানের শিক্ষার্থী ইকবাল হোসেন টিপুকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়।

রেজাউল হক রুবেল ও ইকবাল হোসেন টিপু যথাক্রমে শাখা ছাত্রলীগের বগিভিত্তিক গ্রুপ সিএফসির এবং সিক্সটিনাইনের নেতা। মেয়াদ শেষ হওয়ার আড়াই বছর পর আজ এই কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে।

সাংবাদিককে ছাত্রলীগের মারধর
অন্যদিকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিক মোশাররফ শাহকে মারধর করেছে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেলের অনুসারীরা। রোববার ২৪ সেপ্টেম্বর নতুন কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের সামনে তাকে লাঠিসোঁটা নিয়ে আক্রমণ করে ছাত্রলীগের অনুসারীরা। পরে আহত অবস্থায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

মোশাররফ শাহ চবির যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। এছাড়া তিনি চবি সাংবাদিক সমিতির সদস্য ও প্রথম আলোর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি।

মোশাররফ শাহ জানান, আমি বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপাচার্যের কার্যালয়ে যাচ্ছিলাম ছাত্রলীগের সংঘর্ষ, ভাঙচুর, প্রধান প্রকৌশলীকে মারধরসহ সার্বিক বিষয়ে বক্তব্য নেওয়ার জন্য। এসময় নতুন কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের সামনে ১৫ থেকে ২০ জন ছাত্রলীগের কর্মী আমাকে প্রথমে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়।

তিনি আরও জানান, এরপর ছাত্রলীগ নিয়ে কেন প্রতিবেদন করেছি বলে কয়েকজন আমার কপালে, মুখে কিল-ঘুষি দেয়, বুকে লাথি মারে এবং হাতে আঘাত করে। মারধরের সময় তারা আমাকে আর কোনোদিন ছাত্রলীগ নিয়ে প্রতিবেদন ছাপলে খবর আছে বলে হুমকি দেয়। তারা বলেছে, ‘আর নিউজ করিস, তারপর দেখব তোরে কে বাঁচাতে আসে। ছাত্রলীগকে নিয়ে কোনও নিউজ হবে না।’

চবি মেডিকেলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান ডা. মো. আবু তৈয়ব বলেন, মোশাররফকে কিল ঘুষি এবং রড দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। হাতে এবং মাথায় আঘাত পেয়েছে সে। কপালে চারটি সেলাই দিতে হয়েছে। তার হাতে ফ্র্যাকচার হওয়ার হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তাই এক্সরে ও উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

সহকারী প্রক্টর নাজিমুল আলম মুরাদ বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে দোষীদের বিচারের আওতায় আনা হবে। একজন সাংবাদিক শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের না, দেশের মুখপাত্র। তাকে আক্রমণ করার মতোন ঘৃণিত কাজের বিচার করা হবে।”

তিনি জানান, গত তিনদিন ধরে সংঘর্ষের পর থেকেই ছাত্রলীগের অনুসারীরা নতুন কলা অনুষদের সামনে লাঠিসোঁটা নিয়ে টহল দিচ্ছিলো আমরা যখনই কল পেয়েছি, গিয়ে যেই আছে তাকেই ধাওয়া দিয়েছি ধরার জন্য।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেল বলেন, হামলা কারা করেছে জানি না। তারা আমার অনুসারী হোক আর যেই হোক, তাকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। আমরাও তাদের খুঁজছি।