রিয়াজ উদিন, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামের পতেঙ্গা বোট ক্লাবের এলাকায় ১২ নম্বর ঘাটের একটি ট্রলিব্যাগে মানব দেহের খন্ডাংশ পাওয়ার ঘটনার পর এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেনশন পিবিআই। হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছোট ছেলে সফিকুর রহমান জাহাঙ্গীর ও তার স্ত্রী আনারকলি পলাতক বলে জানিয়েছে পিবিআই।
নিহত মো. হাসান (৬১) চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার কাথারিয়া ইউনিয়নের বড়ইতলী গ্রামের সাহাব মিয়ার ছেলে পিবিআইয়ের সংগ্রহ করা তার জাতীয় পরিচয়পত্রে -এনআইডি) অস্থায়ী ঠিকানা লেখা আছে, সিলেট সদরের সাধুর বাজার সংলগ্ন রেলওয়ে কলোনির জামাল মিয়ার গ্যারেজ।
তবে নিহত হাসানের বুকসহ শরীরের আরও কিছু অংশ উদ্ধার হলেও মাথা এখনও পাওয়া যায়নি। মাথার খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে সংস্থাটি। হেফাজতে নিয়েছে নিহতের স্ত্রী ছেনোয়ারা বেগম ও বড় ছেলে মোস্তাফিজুর রহমানকে। হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছোট ছেলে সফিকুর রহমান জাহাঙ্গীর ও তার স্ত্রী আনারকলি পলাতক বলে জানিয়েছে পিবিআই।
পিবিআই চট্টগ্রাম মহানগর ইউনিটের সহকারী পুলিশ সুপার এএসপি- একেএম মহিউদ্দিন সেলিম জানান, ২৭ বছর ধরে নিরুদ্দেশ থাকা হাসান সম্প্রতি ঘরে ফিরেছেন। বাঁশখালিতে তার কিছু পৈতৃক সম্পত্তি ছিল। সেই সব সম্পত্তি স্ত্রী-সন্তানের নামে দিতে বললে তিনি এতে সম্মতি দেননি।
এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৯ সেপ্টেম্বর রাতে চট্টগ্রাম নগরীর ইপিজেড থানার আকমল আলী সড়কের পকেট গেইট এলাকার জমির ভিলার ৭ নম্বর বাসায় খুন করা হয়েছে।
হত্যাকাণ্ডের ১০ দিন আগে চিকিৎসার নামে হাসানের স্ত্রী চট্টগ্রাম শহরে ছোট ছেলের বাসায় আসেন। হাসানকে খুন করা ওই বাসায় হাসানের ছোট ছেলে তার স্ত্রী-সন্তানসহ থাকেন। ঘটনার দিন বড় ছেলে মোস্তাফিজুরও সেই বাসায় যান। সেদিন রাতে জায়গা-সম্পত্তির বিষয়ে হাসানের সঙ্গে তাদের বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে উপস্থিত সকলে মিলে হাসানকে খুন করে। তার মরদেহ ৮ টুকরো করে ট্রলিব্যাগে করে পতেঙ্গা ১২ নম্বর ঘাট এলাকার খালে ফেলে দেওয়া হয়। মাথা এবং বুকসহ শরীরের আরও কিছু অংশ বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফেলা হয়েছে।
ছোট ছেলেই তার বাবার শরীরের টুকরোগুলো বিভিন্ন স্থানে ফেলে দেন। হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানিয়েছেন পিবিআই কর্মকর্তা একেএম মহিউদ্দিন সেলিম।