আব্দুর রহমান নোমান: দেশের সর্বত্র বেড়েছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে কাবু হচ্ছেন শিশু থেকে বয়স্ক মানুষজন। ভোলার লালমোহন উপজেলায়ও দেখা দিয়েছে ব্যাপক ডেঙ্গুর প্রকোপ। এতে আক্রান্ত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসছেন অনেকে। প্রত্যন্ত এলাকার মানুষের স্বাস্থ্য সচেতনতার কথা বিবেচনা করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ ডেঙ্গু শনাক্তের ব্যবস্থা বৃদ্ধি করেছে। ব্যক্তি মালিকানাধীন ডায়াগনস্টিক ও ক্লিনিকে ডেঙ্গু পরীক্ষা করা হয় তিন থেকে পাঁচশত টাকায়। আর সেখানে প্রত্যন্ত এলাকার সাধারণ রোগীদের স্বার্থে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মাত্র ৫০ টাকায় করা হচ্ছে ডেঙ্গু পরীক্ষা। এমন সাশ্রয়ীমূল্যে ডেঙ্গু পরীক্ষা করাতে পেরে খুশি রোগীরা।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, জুলাই মাস থেকে লালমোহনে দেখা মিলে ডেঙ্গুর। জুলাই মাসের প্রথম থেকে ২৮ আগস্ট পর্যন্ত মাত্র ৫০ টাকা দিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডেঙ্গু পরীক্ষা করিয়েছেন ৭ শতাধিক রোগী। প্রতিদিন গড়ে ডেঙ্গু পরীক্ষা করাচ্ছেন ১৫ জনের মতো। এছাড়া জুলাই মাস থেকে এ পর্যন্ত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন দুই শতাধিক রোগী। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ভর্তি হয়েছেন আরো ৪ জন।
লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্যাথলজি বিভাগে ডেঙ্গু পরীক্ষা করান আল-আমিন, সুরমা ও রফিজল নামের কয়েকজন। তারা বলেন, বাহিরে ডেঙ্গু পরীক্ষা করাতে অনেক টাকা নেয়। আর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মাত্র ৫০ টাকা দিয়ে ডেঙ্গু পরীক্ষা করিয়েছি। এতে করে আমাদের কিছু টাকা সাশ্রয় হয়েছে। যা দিয়ে প্রয়োজনীয় কিছু ওষুধ কিনতে পারবো। এতো কম দামে ডেঙ্গু পরীক্ষা করাতে পেরে আমরা সত্যিই খুশি।
লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্যাথলজি বিভাগের ইনচার্জ মো. রিয়াজুল ইসলাম জানান, গত দুই মাস ধরে এখানে ডেঙ্গু পরীক্ষার জন্য অনেক রোগী আসছেন। বাহিরে এ পরীক্ষায় অনেক টাকা ব্যয় হওয়ায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কম দামে ডেঙ্গু পরীক্ষা করাতে আসছেন অনেকে। আমরা সাধ্যের মধ্যে আন্তরিকতার সঙ্গে রোগীদের পরীক্ষা করিয়ে দিচ্ছি।
এ বিষয়ে লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও) ডা. মো. তৈয়বুর রহমান বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডেঙ্গু পরীক্ষার জন্য সরকার নির্ধারিত ফি ৫০ টাকা করে নেওয়া হয়। রোগীরা সাশ্রয়ীমূল্যে এ সেবা পেয়ে অনেক খুশি। মাঝে মাঝে রোগীর চাপে ডেঙ্গু পরীক্ষার কিট সঙ্কট দেখা দিলেও তা অল্প সময়ের মধ্যে আবার ম্যানেজ করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সুন্দরভাবেই ডেঙ্গু পরীক্ষা হচ্ছে। তাই রোগীদের প্রতি আমার আহবান থাকবে; বাহিরে অতিরিক্ত টাকা ব্যয়ে পরীক্ষা না করে সূলভ মূল্যে তারা যেন লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে পরীক্ষা করান।