চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। সাতকানিয়ায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতির কারণে বান্দরবানের সঙ্গে সারা দেশের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
রোববার (৬ আগস্ট) রাত থেকে প্রবল বর্ষণ অব্যাহত থাকায় শঙ্খ নদী, ডলু নদী ও হাঙ্গর খালের পানি বিভিন্ন স্থানে বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হচ্ছে গ্রামের পর গ্রাম। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম-বান্দরবান সড়কের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ায় বান্দরবানের সাথে সারা দেশের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। পানি উঠেছে হাজারো বসতঘরে। গ্রামীণ সড়ক পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে পড়েছে হাজারও পরিবারের যোগাযোগ ব্যবস্থা।
বেশ কয়েকজন জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা প্রশাসনের সাথে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। এদিকে, টানা ভারী বর্ষণে পাহাড় ও ভূমি ধসের আশঙ্কায় পাহাড়ি এলাকায় অবস্থানরত বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাওয়ার জন্য সতর্ক করেছে উপজেলা প্রশাসন।
স্থানীয় বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, উপজেলার নিম্নাঞ্চলের আউশ ধান ও ক্ষেত জমির ফলফলাদি পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে। তলিয়ে গেছে ধানের বীজতলা। উপজেলার চরতি, আমিলাইষ, নলুয়া, খাগরিয়া, কালিয়াইশ, ধর্মপুর, বাজালিয়া, পুরানগড় ইউনিয়নে বেশ কয়েকটি এলাকায় শঙ্খনদীর বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। বাজালিয়া এলাকায় শঙ্খ নদীর বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করায় আতঙ্কিত স্থানীয় বাসিন্দারা।
কেওচিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওসমান আলী জানান, কেওচিয়া ইউনিয়নের ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬ ও ৭ নং ওয়ার্ডের বেশ কিছু গ্রামীণ সড়ক পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এসব এলাকার মানুষ মূলত গৃহবন্দি অবস্থায় রয়েছে।
আবহাওয়া অফিস বলছে, আরও কয়েকদিন ভারী বর্ষণ হবে। প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সারা দেশের মতো চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় ভারী বর্ষণ হচ্ছে।
সোমবার ভোরে পাওয়া তথ্য অনুয়ায়ী, উপজেলার চরতি, নলুয়া, কেওচিয়া, আমিলাইষ, খাগরিয়া, বাজালিয়া, ছদাহা ও পুরানগড়, কালিয়াইশসহ উপজেলার কয়েকটি নিম্নাঞ্চল ও বিলাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, উপজেলার বাজালিয়া, ছদাহা, কেওচিয়া সোনাকানিয়া, কাঞ্চনা ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল পানি আটকে থাকায় ক্ষেতের ফলফলাদি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিল্টন বিশ্বাস সংবাদমাধ্যমকে বলেন, উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। কিছু মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আজ (সোমবার) উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের অফিসারদের নিয়ে একাধিক টিম করে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা সরেজমিন পরিদর্শন করবো।