দম ফেলার ফুসরত নেই কামারশালায়

বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিবেদক: ঈদুল আযহার বাকি আর মাত্র দুই দিন। কামারশালায় রাত-দিন ধরে চলছে কর্মযজ্ঞ। কোরবানির পশু কাটার সরঞ্জাম তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কারুশিল্পীরা। শেষ সময়ে দম ফেলার ফুরসত নেই তাদের।

কোরবানির ইদ উপলক্ষে এক মাস আগ থেকে চুরি- চাকু- বটি, চাপাতি তৈরি ও পুরাতন সরঞ্জামে শান দেওয়ার কাজে ব্যস্ত পটুয়াখালীর বাউফলের কামারেরা। হাতুড়ি আর লোহার টুংটাং শব্দে রাতদিন মুখরিত  থাকে কামারপাড়া। কেউ হাঁপর টানছেন, সেই হাঁপরে পুড়ছে কয়লা, তাতে জ্বলছে লোহা। সেই লোহা দিয়ে তৈরি হচ্ছে হরেক রকমের দারালো যন্ত্রপাতি।

মঙ্গলবার (২৭ জুন) উপজেলার বিভিন্ন কামার পাড়া ঘুরে দেখা যায়,  কোরবানিকে সামনে রেখে  ছুরি-চাকু-বটি, চাপাতি কিনতে ভির করেছেন কামারের দোকানে।  অনেকে শান দিয়ে নিচ্ছেন পুরানো সরঞ্জাম।

কালাইয়া বন্দরের গরু হাট সংলগ্ন এলাকায়  বৃদ্ধ বাবা- ছেলে মিলে কামারের দোকান পরিচালনা করছেন। বাবা হরি কর্মকার  লোহা ধরে আছেন, ছেলে সঞ্জয় কর্মকার হাতুড়ি দিয়ে পেটাচ্ছেন। তাতেই তৈরি হয়ে চাপাতি। হরি কর্মকার জানান, সারাবছর অলস সময় কাটে তাদের। কোরবানির ইদের আগে ব্যবস্তা বেড়ে যায়। তবে কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় যন্ত্রপাতির দামও বেড়ে যায়। এতে মানুষ নতুনের চেয়ে পুরাতন গুলোতেই শান দিচ্ছেন বেশি।

বন্দরের সদর রোড এলাকার রতন  কর্মকার বলেন, ঈদকে সামনে রেখে প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কাজ করতে হয়। কাজেও ব্যাপক চাপ থাকে। এই সময়ে ভালো উপার্জন করা যায়। পৌরশহরের পাবলিক মাঠ রোডের দিলীপ কর্মকার বলেন, কামার শিল্পে কোরবানির ইদকে মৌসুম হিসেবে ধরা হয়। এ সময়ে কোরবানির পশুর মাংস কাটতে সরঞ্জামের চাহিদা বেড়ে যায়। যার কারণে আমাদের কামার পাড়ায় ব্যবস্তা বেড়ে যায়। শেষ সময়ে যা বেড়ে দাড়ায় দ্বিগুন। ঈদের দিন পর্যন্ত এ ব্যস্ততা থাকবে।

বাজারে প্রতিটি দা চাপাতি ছুরি-চাকু-বটির প্রকারভেদে মজুরি নেওয়া হচ্ছে ২৫০- ৪০০ টাকা। শান দিতে নেওয়া হচ্ছে ১০০ থেকে ২০০ টাকা। পশু জবাই করা ছুরি ১৫শ থেকে ২ হাজার টাকা, চামড়া ছাড়ানোর ছুরি ১৫০ থেকে ২৫০ টাকা। দা-বটি ১হাজার থেকে ১২শ টাকা, চাপাতি ৮৫০ টাকা থেকে ৯৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।